স্বমূত্র, গো-মূত্রের পর এবার বাঘের মূত্র পান!

অনলাইন ডেস্ক : ভারতে গো-মূত্র পান নতুন কোন ঘটনা নয়। দৈনিক আমাদের দিন জানায়, হিন্দু ধর্মের পবিত্র প্রাণী হিসেবে গরুর মূত্রও হয়ে উঠেছে পবিত্র পানীয়। দুনিয়াজুড়ে গরুর দুধ যেখানে সুপ্রসিদ্ধ, সেখানে ভারতে গুরুত্ব বেশি এর মূত্রের। অন্যদিকে আনন্দবাজার জানায়, আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র স্বীকৃতি না দিলেও গো-মূত্রকে রোগ প্রতিরোধক হিসেবেই বিশ্বাস করে দেশটির সংখ্যাগুরু হিন্দু জনগোষ্ঠীরা।
পত্রিকাটি আরো জানায়, রোজ সকালে উঠে নিজের মূত্র নিজে পান করা শরীরের জন্য ভাল এমন বিশ্বাস ছিল ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাইর! তিনি নিয়মিত ৫-৮ আউন্স মূত্র পান করতেন।
সম্প্রতি স্বমূত্র পানের আলোচনা নতুন করে চাঙ্গা করে তুললেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রাক্তন সাংসদ পরেশ রওয়ালও। হাঁটুর ব্যথা উপসমের জন্য সকালে উঠে খালিপেটে টানা ১৫ দিন নিজের মূত্র পান করতেন অভিনেতা। দিনের প্রথম মূত্র পান করার এই উপদেশ তাঁকে দিয়েছিলেন বলিউডের অভিনেতা অজয় দেবগনের বাবা বীরু দেবগন। বাধ্য ছেলের মতো সে কথা মেনে ছিলেন পরেশও। তাতেই নাকি মিলেছে ফল!
‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালীন হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন পরেশ। আঘাত এতটা গুরুতর ছিল যে, তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। পরেশ ভেবেছিলেন, তাঁর কেরিয়ার শেষ। কিন্তু তখনই এক অভিনব বুদ্ধি নিয়ে হাজির হন বীরু দেবগন। তিনি পরেশকে পরামর্শ দেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে গেলে পান করতে হবে নিজের মূত্র।
এবার মূত্র নিয়ে আরেক খবর পাওয়া গেল। তবে মানুষের বা গরুর নয়, বাঘের মূত্র। বাতের ওষুধ হিসেবে বাঘের মূত্র বোতলে ভরে বিক্রি করছে চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ সিচুয়ানের ইয়ান বিফেংশিয়া ওয়াইল্ডলাইফ জু নামের একটি চিড়িয়াখানা। ওষুধের নাম দেওয়া হয়েছে মেডিসিনাল টাইগার ইউরিন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বরাত দিয়ে ইত্তেফাক জানায়, বোতলভর্তি যেসব ‘ওষুধ’ বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো মূলত সাইবেরিয়ান টাইগারের মূত্র। কীভাবে এই ‘ওষুধ’ ব্যবহার করতে হবে- সে বিষয়ক একটি নির্দেশনা অবশ্য দিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অবশ্য টাকা থাকলেই যে এই ‘ওষুধ’ তাৎক্ষণিকভাবে কিনতে পারা যাবে- এমন নয়। কারণ চিড়িয়াখানা কৃর্তপক্ষ প্রতিদিন মাত্র ২ বোতল ওষুধ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। তাই গ্রাহককে অর্ডার দিয়ে বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হয়।
এর আগে ২০১৪ সালে ইয়ান বিফেংশিয়া ওয়াইল্ডলাইফ জু একটি রিয়েলিটি শো’র আয়োজন করেছিল। সেই শো’তে কয়েকজন সেলিব্রেটিও এসেছিলেন। সাইবেরিয়ান বাঘের মূত্রভর্তি এক একটি বোতল সেই সেলিব্রেটিদের উপহার হিসেবে প্রদান করেছিল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সেসময় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছিল।
স্থানয়ি একজন ফার্মাসিস্ট নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে বলেন, বাঘের মূত্র মালিশ করলে বা পান করলে বাতের ব্যাথা সারে- এমন দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদ্যোগ শুধু জনমন ও বহির্বিশ্বে চীনের ঐহিহ্যগত ওষুধ ও চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাবই সৃষ্টি করবে না, বরং বাঘ সংরক্ষণের যে উদ্যোগ চীনের সরকার নিয়েছে- তাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।