কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন? জেনে নিন ট্রাম্প আসার পর সীমান্তে কি কি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হতে পারে আপনাকে
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে যথেচ্ছভাবে কিছু ইউরোপীয় এবং কানাডিয়ান পর্যটকদের আটকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলি অনেকের মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে এই বলে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিরাপদ কিনা?
এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর।
ক্ষমতায় এসেই ট্রাম্প প্রশাসন যখন বৈধ কাগজপত্র নেই এমন অভিবাসীদের গণহারে বহিষ্কারের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সীমান্তে অভিবাসন কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে। এর ফলে অনেক ভ্রমণকারী উচ্চ সতর্কতায় রয়েছেন।
ঃযবপড়হাবৎংধঃরড়হ.পড়স তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে, বিমানবন্দর এবং সীমান্ত ক্রসিংয়ে আটক হওয়ার বিষয়টি সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় ভয়ের একটি। যদিও এখন পর্যন্ত ঘটনাগুলি এলোমেলো বলে মনে হচ্ছে কিন্তু অনেকেই সীমান্ত রক্ষীদের কর্তৃক তাদের স্মার্ট ফোন বাজেয়াপ্ত করা এবং সোশ্যাল মিডিয়া বা ইমেল চেক করা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

আক্রান্তদের মধ্যে অবশ্য কিছু আমেরিকান রয়েছেন যারা অন্য দেশে ছুটি কাটিয়ে বা ব্যবসায়িক ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে আসছেন। তবে সীমান্ত রক্ষীরা যে কাউকে আটকাতে পারেন, যার মধ্যে ভিসাধারী বিদেশী শিক্ষার্থী, কানাডিয়ান এবং ইউরোপীয়রাও অন্তর্ভুক্ত, এমনকি বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও।
উপরের এই আশঙ্কা এবং স্থল সীমান্ত ক্রসিংয়ে ভ্রমণকারীদের বিলম্বের তথ্যের কারণে কানাডা-মার্কিন সীমান্ত অতিক্রমকারী কানাডিয়ানদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে, সড়ক পথে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া সংখ্যা কভিড মহামারীর পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে, অনেক লোক বসন্ত ও গ্রীষ্মের জন্য রিজার্ভেশন বাতিল করেছে বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের জন্য কম বুকিং করেছে।
কনভারসেশন.কম জানায়, সাম্প্রতিক গবেষণায়ও দেখা গেছে যে আমেরিকানরা কানাডিয়ানদের বন্ধুত্বপূর্ণ মনে করলেও, তারা আর কানাডাকে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দেখে না। বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের মার্কিন প্রবেশপথে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক করেছে।
ভ্রমণকারী হিসেবে আপনার কি কি অধিকার আছে তা জেনে রাখুন
theconversation.com জানায় সীমান্ত অতিক্রম করার সময় ভ্রমণকারীদের অধিকার রয়েছে খুব কম। যদিও ভ্রমণকারীদের অধিকার রয়েছে অভিবাসন কর্মকর্তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করার, তবে এটি করার ফলে সন্দেহ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং প্রবেশে বাধা দেওয়া হতে পারে।
আর কানাডিয়ানদের সচেতন থাকা উচিত যে মার্কিন সীমান্ত কর্মকর্তাদের বিস্তৃত আকারে পরিদর্শন বা জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষমতা রয়েছে, যার মধ্যে ভ্রমণকারীর ডিজিটাল ডিভাইসের পাসওয়ার্ড হস্তান্তরের দাবীও করা হতে পারে।
আরো জেনে রাখা ভাল যে, কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি এবং মার্কিন কাস্টমস এবং বর্ডার প্রোটেকশন উভয়েরই যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস পরীক্ষা করার ক্ষমতা রয়েছে।
আর কোন কানাডিয়ান যখন একবার মার্কিন স্থল সীমান্তে প্রবেশ করেন, তখন তিনি মার্কিন আইনের একচেটিয়া এখতিয়ারের অধীনে থাকেন। কানাডিয়ান আইন বা Canadian Charter of Rights and Freedoms এর অধীনে নয়। যদি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তাহলে ভ্রমণকারীরা প্রশ্ন করতে পারেন যে তাদের আটক করা হচ্ছে কিনা, অথবা তারা চলে যেতে পারেন কিনা। যদি তারা চলে যেতে না পারেন, তাহলে আটকের ন্যায্যতা প্রমাণের জন্য এজেন্টের যুক্তিসঙ্গত সন্দেহের প্রয়োজন
থাকা আবশ্যক।
ভ্রমণের সময় ঝুঁকি কমানোর টিপস
শুল্ক এবং অভিবাসন আইন মেনে চললে সাধারণত ভ্রমণকারীদের কোনও সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, কিছু বিষয় সীমান্তে উদ্বেগের কারণ হতে পারে, যেমন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেশটিতে বেশি সময় অবস্থান করা, সীমান্ত কর্মকর্তার কাছে পণ্য ঘোষণা না করা বা সঠিক নথিপত্র না থাকা।
এছাড়াও যদি আপনি অন্য দেশে ভ্রমণ করতে যান, তাহলে স্থানীয় রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন, এমনকি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হলেও। পোশাক, আপত্তিকর আচরণ বা স্থানীয়দের সাথে রাজনৈতিক কথোপকথনের উপর রাজনৈতিক বার্তা দেওয়া এড়িয়ে চলুন।
ভ্রমণের সময় যদিও সীমান্তে ইলেকট্রনিক ডিভাইস অনুসন্ধান বিরল, তবুও আপনার ডিভাইসের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সতর্ক থাকা ভাল, যার মধ্যে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট এবং প্রোফাইল, রাজনৈতিক মতামত এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্য।