প্রত্যাশিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবারও পেলনা লিবারেল পার্টি
অন্যদিকে নিজের আসনটিও হারালেন কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান পিয়ের পলিয়েভ এবং এনডিপি’র প্রধান জাগমিত সিং
প্রবাসী কণ্ঠ, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫: নির্বাচনী জরিপে পূর্বাভাষ ছিল মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হবে। কিন্তু তা ঘটেনি। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূরের কথা, সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও লাভ করতে পারেনি দলটি। তবে পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে দলটি অনেকটা এগিয়েছে। এবং প্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি চলে এসেছিল। আর মাত্র চারটি আসন পেলেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতো পার্লামেন্টে।
সিবিসি নিউজের পুল ট্রাকারের নির্বাচন পূর্ববর্তী জরিপে বলা হয়েছিল লিবারেল পার্টি ১৮৯টি আসন পাবে। কনজারভেটিভ পার্টি পাবে ১২৫টি আসন। ব্লক কুইবেকো পাবে ২৩টি এবং এনডিপি পাবে ৫টি আসন। ফাইনাল ফলাফলে দেখা গেছে লিবারেল আসন পেয়েছে ১৬৯টি, কনজারভেটিভ ১৪৩টি, ব্লক ২৩টি এবং এনডিপি ৭টি। গ্রীন পার্টি ১টি। কানাডার ফেডারেল পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৭২টি আসন।

গত নির্বাচনে জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি আসন পেয়েছিল ১৫৮টি। সেবার জাস্টিন ট্রুডো মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার প্রায় দুই বছর আগেই নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন। কারণ তখনও পার্লামেন্টে লিবারেল পার্টির সংখ্যাগিরষ্ঠতা ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া। কারণ ঠিক ঐ সময় জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ছিল ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির। আর সেই কারণেই ট্রুডো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আগাম নির্বাচন করার যাতে করে সংখ্যালঘুর নড়বড়ে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে দলটি। কিন্তু সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি জাস্টিন ট্রুডোর।
অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি গত নির্বাচনে আসন পেয়েছিল ১১৯টি। এবার পেয়েছে ১৪৪টি। এই দলটির অগ্রগতি ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে দলটির প্রধান পিয়ের পলিয়েভ নিজেই পরাজিত হয়েছেন তার আসনে। প্রায় দুই দশক ধরে তিনি তার আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন।
তার নিজ এলাকার ভোটাররা সিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন যে, কভিড মহামারী চলাকালীন অটোয়ায় ভ্যাকসিন-বিরোধী ম্যান্ডেট কনভয়ের প্রতি পোলিয়েভের সমর্থন এবং জনসেবা কমানোর প্রতিশ্রুতি তার নির্বাচনী সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
উল্লেখ্য যে, ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলনের নামে কানাডার রাজধানী অটোয়ার কেন্দ্রস্থলের রাস্তাঘাট ও পার্লামেন্ট ভবনের আশপাশের রাস্তাঘাট একেবারেই অচল করে দিয়েছিলেন লরি চালকদের একটি দল। একই সাথে কানাডার অন্যান্য শহরেও চলে লরি চালকদের ঐ তাণ্ডব। ট্রাক চালকদের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে অটোয়ার স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অন্যান্য লোকদের মধ্যে বিরাজ করছিল চরম বিরক্তি। সেই সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের লোকজনও চরম বিরক্ত হয়েছিলেন আন্দোলনের নামে কিছু সংখ্যক লরি চালকের বিবেক বর্জিত আচরণে। ঐ লরি চালকরা রাত-দিন উচ্চ নিনাদে হর্ন বাজিয়েছিলেন যা তীব্র মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি করেছিল স্থানীয় জনগণের মধ্যে।
আন্দোলনের নামে লরিচালকদের কয়েকজনের হাতে ছিল চরম অশ্লীল ভাষাসম্বলিত প্ল্যাকার্ড যার টার্গেট ছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। অন্যদিকে বিশ^যুদ্ধে নিহত কানাডিয়ান সৈন্যদের সম্মানে নির্মিত স্মৃতিসৌধে উঠে নাচানাচি করতেও দেখা গেছে লরি চালকদের কয়েকজনকে। এমনকি স্মৃতিসৌধের গোড়াতে মূত্রত্যাগ করতেও দেখা গেছে তাঁদেরকে! আর এদেরকেই সেই সময় সমর্থন দিয়েছিলেন কনজারভেটিভ পার্টির পিয়ের পলিয়েভ।

ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলনের নামে লরি চালকদের একটি অংশ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন যে, বাধ্য হয়ে তখনকার অটোয়ার মেয়র প্রথমে স্থানীয় পর্যায়ে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। পরে অন্টারিও’র প্রিমিয়ার ড্যাগ ফোর্ডও গোটা প্রভিন্সে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি আন্দোলনকারীদেকে আন্দোলন বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
আর এবার ট্রাম্প ইস্যুও ব্যক্তিগতভাবে পলিয়েভের পক্ষে কাজ করেনি বলে কেউ কেউ মনে করছেন। কারণ, ট্রাম্পের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। পাশাপাশি ট্রাম্প ক্রমাগত বলে যাচ্ছেন কানাডাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চান। কিন্তু কানাডার প্রায় কেউই ট্রাম্পের এই চাওয়ার সাথে একমত নয়। কানাডার সকল রাজনৈতিক নেতা ট্রাম্পের এই চাওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এবং এটি যে কানাডার সার্বভৌমত্বের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ সে কথাও নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তখন ভোটারদের অনেকেরই সন্দেহ ছিল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান পিয়ের পলিয়েভ ট্রাম্পের অনুসারী। মুখে তিনি ট্রাম্পের বিরোধিতা করলেও নির্বাচনে জয়ী হলে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই কারণেই নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে পলিয়েভের জনপ্রিয়তা কমে যায়। এবং ফলস্বরূপ তিনি নিজের আসনটিও হারান।
এখন পার্লামেন্টে তাঁর কোনো আসন নেই। সে কারণে অধিবেশন চলাকালে তিনি পার্লামেন্টে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন না। ফলে পার্লামেন্টের বাইরে অবস্থান করে ভিতরে দলীয় এমপিদের নেতৃত্বও দিতে পারবেন না। যেটা তার জন্য একটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে দলীয় প্রধানের পদ আঁকড়ে ধরে রাখা। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত দলীয় প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলেননি। বরং ঐ পদ ধরে রাখার কথাই ব্যক্ত করেছেন।
যদি তিনি দলীয় প্রধানের পদে থাকতে চান এবং পার্লামেন্টে ফিরে আসতে চান তবে তার সমনে যে পথটি আপাতত খোলা আছে তা হলো, তার দলের নির্বাচিত একজন এমপিকে পদত্যাগ করতে হবে এবং সেই শূন্য আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পলিয়েভকে জয়ী হতে হবে। তাহলেই তিনি আবার পার্লামেন্টে ফিরে আসার সুযোগ পাবেন। তবে সে সম্ভাবনা কতটুকু তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।

সিবিসি নিউজ জানায়, পলিয়েভ নিজে থেকে সরে দাঁড়াতে না চাইলে সংসদ যখন পুনরায় শুরু হবে, তখন তার এমপিরা তাকে দলীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণের জন্য রিফর্ম এ্যাক্ট ব্যবহার করতে পারবেন। এ ছাড়াও নির্বাচনে দলকে জয়ী করতে না পারায় পরবর্তী কনজারভেটিভ কনভেনশনে তাঁকে নেতৃত্ব পর্যালোচনার মুখোমুখি হতে হবে।
অন্যদিকে পলিয়েভ এর মত নিজ আসনে পরাজিত হয়েছেন আরেক বিরোধী দল এনডিপি’র প্রধান ভারতীয় বংশোদ্ভূত জাগমিত সিং-ও। শুধু হারা নয়, পার্লামেন্টে বিরোধী দলের স্ট্যাটাসও হারিয়েছে দলটি। এই স্ট্যাটাসের জন্য কমপক্ষে ১২টি আসন পেতে হয়। কিন্তু তার দল পেয়েছে মাত্র ৭টি আসন। গত ২০২১ সালের নির্বাচনে দলটি জয়ী হয়েছিল ২৫টি আসনে।
কৌতুহলের বিষয় হলো, তার এই পরাজয়ে বেশ খুশী হয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। কারণ তারা দাবি করে আসছে জাগমিত সিং খালিস্তান পন্থীদের সমর্থক। খালিস্তান পন্থীরা হলো ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী। এরা ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে খালিস্তান নামে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
ভারতের প্রায় সব পত্র-পত্রিকায় জাগমিত সিং এর পরাজয়ের খবরটি বেশ ফলাও করে প্রচার করেছে। ভারতীয় অনলাইন পত্রিকা এইসময়.কম জানায়, খালিস্তান-পন্থী মুখগুলির মধ্যে অন্যতম ছিলেন জাগমিত সিং। ট্রুডো সরকারের জোটসঙ্গী হওয়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপরেও ছিল তার প্রভাব। কিন্তু সেই প্রভাবের ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না ২০২৫ সালের নির্বাচনে। নিজের আসনটিও হারিয়েছেন তিনি। পরাজিত হয়ে খালিস্তান-পন্থী এই নেতা কেঁদেই ফেললেন মঞ্চে।
পত্রিকাটি আরো জানায়, কানাডার রাজনীতিতে খালিস্তান-পন্থীদের প্রভাব রয়েছে। সেই প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে অন্যতম জগমিত সিং।
নির্বাচনে নিজে হেরে এবং দলের শোচনীয় পরাজয়ের পর জাগমিত সিং ঘোষণা দেন তিনি দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করবেন। তবে পরবর্তী নেতা নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তার দায়িত্ব পালন করে যাবেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এনডিপি’র এমপিদের কেউ কেউ কি লিবারেল পার্টিতে যোগ দিবেন ফ্লোর ক্রস করে? অথবা লিবারেল পার্টি কি চেষ্টা করবে তাদের কয়েকজনকে দলে ভেড়াতে? কারণ জনা চারেক এমপিকে দলে ভেড়াতে পারলে সংখ্যালঘুত্বের টলটলায়মান অবস্থা থেকে তারা বের হয়ে আসতে পারবে। নয়তো পার্লামেন্টে যে কোনো বিল পাশ করাতে হলে সবসময় অন্য দলের উপর নির্ভর করতে হবে। এটি ক্ষমতাসীন দলের জন্য একটি সমস্যা।
কানাডায় যে কোন দলীয় এমপি তার নিজ দলের সাথেই সংযুক্ত থাকেন সাধারণত। তবে কেউই পুরো মেয়াদে দলের সঙ্গে থাকবেন এমন বাধ্যবাধকতা নেই। তারা চাইলে যে কোনো সময় ফ্লোর ক্রসিং করতে পারেন। অর্থাৎ এক দল থেকে অন্য দলে যোগ দিতে পারেন। কানাডায় এরকম ঘটনা বিরল, কিন্তু সম্ভব।
উল্লেখ্য যে, গত ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের মাত্র নয় দিন পর গভর্নর জেনারেল ম্যারি সাইমন এর কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন মার্ক কার্নি। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য এবং “কানাডিয়ানদের জন্য সর্বোত্তম চুক্তি” নিয়ে আলোচনা করার জন্য জনগণের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী ম্যান্ডেট চাচ্ছেন তিনি। তার মতে “কানাডাকে সুরক্ষিত করতে, কানাডায় বিনিয়োগ করতে, কানাডা গড়ে তুলতে, কানাডাকে ঐক্যবদ্ধ করতে আরও অনেক কিছু করার আছে। আর সে কারণেই আমি কানাডার জনগণের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী ইতিবাচক ম্যান্ডেট চাইছি।” অটোয়াতে মার্ক কার্নি সাংবাদিকদের এ কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই শক্তিশালী ম্যান্ডেট তিনি পাননি সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে।
তিনি আরও যোগ করেছিলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অযৌক্তিক বাণিজ্য পদক্ষেপ এবং আমাদের কানাডার সার্বভৌমত্বের প্রতি তার হুমকির কারণে আমরা আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
গত ২৮ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন তিনি বিশ^াস করেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সাথে ভাল সম্পর্ক তৈরী করা সম্ভব। তিনি মার্ক কার্নিকে নাইস জেন্টলম্যান বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
গ্লোবাল নিউজ জানায়, প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির কার্যালয় বলেছে যে- কার্নি এবং ট্রাম্প ‘কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক উন্নতির জন্য – স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে – একসাথে কাজ করার গুরুত্বের বিষয়ে একমত হয়েছেন’ এবং ‘অদূর ভবিষ্যতে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে সম্মত হয়েছেন।’
কার্নির প্রতি ট্রাম্পের আচরণ এখন পর্যন্ত অপমানজনক পর্যায়ে যায়নি যেটা জাস্টিন ট্রুডোর বেলায় হয়েছিল। ট্রুডোকে ট্রাম্প ক্রমাগত যুক্তরাষ্ট্রের একজন গভর্নর হিসাবে আখ্যায়িত করে আসছিলেন।
গ্লোবাল নিউজ আরো জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কানাডার সাথে ‘বিস্তৃত’ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেছে যে ট্রাম্প প্রশাসন ‘বাণিজ্যিক ন্যায্যতা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলা, ফেন্টানাইল এবং অন্যান্য বিপজ্জনক ওষুধের প্রবাহ বন্ধ করা এবং আমাদের গোলার্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাব মোকাবেলা’ এর মতো আন্তঃসীমান্ত বিষয়গুলিতে নতুন সরকারের সাথে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
কিন্তু ট্রাম্পের মত এরকম একজন আনপ্রিডিক্টএ্যাবল মানুষের সঙ্গে, যিনি সকালে বলেন এক কথা আবার বিকেলে বলেন আরেক কথা এবং মুহূর্তে মুহূর্তে যিনি মিথ্যা কথা বলেন তাঁর সঙ্গে ডিল করা মার্ক কার্নির জন্য নিশ্চিতভাবেই কঠিন হবে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
উল্লেখ্য যে, রাজনীতিতে মার্ক কার্নি একেবারেই নবীন। মাত্র কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা তাঁর। বর্তমানে তাঁর বয়স ৫৯। তিনি ব্যাংক অফ কানাডার গভর্নর পদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০০৮ সালে। সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী কনজারভেটিভ পার্টির নেতা স্টিফেন হারপার তাঁকে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই সময় কানাডার অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করে যথেষ্ট সুনাম কামিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
মার্ক কার্নির জন্ম কানাডার নর্থওয়েস্ট টেরিটরিতে। যখন তার বয়স ৬ তখন তার পরিবার চলে আসে এডমন্টন প্রভিন্সে। কার্নি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন, তারপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
মার্ক কার্নি এবং তার স্ত্রী ডায়ানা পরিবারে চার কন্যা রয়েছে। ডায়না নিজেও একজন অর্থনীতিবিদ।
২০১৪ সালে মার্ক কার্নি ‘অর্ডার অব কানাডা’ খেতাবেও ভূষিত হন। এটি কানাডার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মানজনক খেতাব।