লিবারেল পার্টি আবারও ক্ষমতায়

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক- ২৯ এপ্রিল, ২০২৫: লিবারেল পার্টি আবারও ক্ষমতায় এলো। এ নিয়ে পরপর চারবার এই দলটি নির্বাচনে জয়লাভ করলো। তবে গত দুই টার্মের মত এবারও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলো না। গত রাতে প্রকাশিত সর্বশেষ ফলাফলে দেখা গেছে মার্ক কর্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টি আসন পেয়েছে ১৬৮টি, পিয়ের পলিয়েভ এর নেতৃত্বাধীন কনজার্ভেটিভ পার্টি আসন পেয়েছে ১৪৪টি,  ফ্রাঁসোয়া ব্লাঞ্চেট  এর নেতৃত্বাধীন ব্লক কুইবেকা আসন পেয়েছে ২৩টি, জাগমিত সিং এর নেতৃত্বাধীন এনডিপি আসন পেয়েছে ৭টি এবং গ্রীন পার্টি ১টি। গ্রীন পার্টির নেতৃত্বে আছেন দুই সহ নেতা জোনাথন পেডনিল্ট এবং এলিজাভেথ মে। এদের মধ্যে এলিজাভেথ মে জয়ী হয়েছেন।

লিবারেল পার্টি আবারও ক্ষমতায় এলো। এ নিয়ে পরপর চারবার এই দলটি নির্বাচনে জয়লাভ করলো। ছবি : এপি ভায়া গেটিইমেজ

বর্তমান পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য আসনের দরকার ১৭২টি।

এবারের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল কনজার্ভেটিভ ভাল করলেও দলটির নেতা পিয়ের পলিয়েভ নিজেই তার আসনে পরাজিত হয়েছেন। অন্যদিকে জাগমিত সিং এর দল এনডিপি এবার পার্লামেন্টে মাত্র ৭টি আসন পেয়ে বিরোধী দলের স্ট্যাটাস হরিয়েছে। জাগমিত সিং পদত্যাগ করবেন বলে ইতিমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার একদিন আগেও সিবিসি নিউজের পুলট্রাকারের সর্বশেষ জরিপে দেখা গিয়েছিল লিবারেল পার্টি আসন পাবে ১৮৯টি আর কনজার্ভেটিভ পার্টি আসন পাবে ১২৫টি। কিন্তু সেই পূর্বাভাস পুরোপুরি ঠিক হয়নি। তবে অনেকটাই কাছাকাছি হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বে থাকা অবস্থায় গত দুই নির্বাচনেই দলটি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায়নি। তবে প্রথমবার পেয়েছিল।

জাস্টিন ট্রুডো ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহুর্তেও কনজার্ভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা ছিল শীর্ষে। তখন সবাই নিশ্চিত ছিলেন যে পিয়ের পলিয়েভই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন কানাডার। কিন্তু প্রায় রাতারাতিই সেই দৃশ্যপট পাল্টে যায় যখন জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করেন এবং মার্ক কার্নি দলের হাল ধরেন। কিন্তু গত রাতে নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল পিয়ের পলিয়েভ নিজের আসনটিই হারিয়েছেন। তিনি এই আসনে গত প্রায় দুই দশক ধরে জয়ী হয়ে আসছিলেন।

উল্লেখ্য যে, কানাডার এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রভাব ছিল খুব বেশী। কারণ, ট্রাম্পের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। পাশাপাশি ট্রাম্প ক্রমাগত বলে যাচ্ছেন কানাডাকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য করতে চান। কিন্তু কানাডার প্রায় কেউই ট্রাম্পের এই চাওয়ার সাথে একমত নয়। কানাডার সকল রাজনৈতিক নেতা ট্রাম্পের এই চাওয়াকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এবং এটি যে কানাডার সার্বভৌমত্বের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ সে কথাও গত কয়েক সপ্তাহে বিভিন্ন বকতৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তারা।  কিন্তু ভোটারদের অনেকেরই সন্দেহ ছিল কনজার্ভেটিভ পার্টির প্রধান পিয়ের পলিয়েভ ট্রাম্পের অনুসারী। মুখে তিনি ট্রাম্পের বিরোধীতা করলেও নির্বাচনে জয়ী হলে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই কারণেই নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে পলিয়েভের জনপ্রিয়তা কমে যায়।

এদিকে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মার্ক কার্নিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সের প্রিমিয়ারগণ। অভিন্দন জানাচ্ছেন অন্যান্য দেশের প্রধানগণও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *