৩৫০ কোটি বছর আগের উল্কাপাতের রহস্য উন্মোচন

অনলাইন ডেস্ক : উল্কা হল মহাকাশে পরিভ্রমণরত পাথর বা ধাতু দ্বারা গঠিত ছোট মহাজাগতিক বস্তু যা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলে বায়ুর সংঘর্ষে জ্বলে উঠে। তখন একে উল্কাপাত বলে। এই উল্কাপাতের জন্য দায়ী বস্তুগুলোকে উল্কা বলে।

সম্প্রতি পৃথিবীর প্রাচীনতম উল্কাপাতের গহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে বিশাল এক উল্কাপিণ্ড আঘাত হানে বর্তমান পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পিলবারা অঞ্চলে। এতে সৃষ্টি হয় ‘নর্থ পোল ডোম সাইট’ নামে পরিচিত এই বিশাল গহ্বর।

বিডিপ্রতিদিন জানায়, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (GSWA) এবং কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স স্কুলের গবেষকরা এই আবিষ্কার করেছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই উল্কাপাত পৃথিবীর পৃষ্ঠে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল এবং হয়তো প্রাণের উদ্ভবের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রেখেছিল। গবেষণাটি নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম জনসন বলেন, এর আগে পৃথিবীর প্রাচীনতম উল্কাপাতের গহ্বর ছিল ২.২ বিলিয়ন বছর আগের। নতুন আবিষ্কারটি আমাদের গ্রহের ইতিহাস সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে।

বিজ্ঞানীরা ‘শ্যাটার কোন’ নামের বিশেষ শিলার গঠন পর্যবেক্ষণ করে এই উল্কাপাতের প্রমাণ পেয়েছেন। সাধারণত উল্কাপাতের বিশাল চাপের ফলে এই ধরনের শিলা গঠিত হয়। গবেষকদের মতে, উল্কাপাতের সময় উল্কাটি ঘণ্টায় ৩৬,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে আঘাত হানে, যা প্রায় ১০০ কিলোমিটার ব্যাসের এক বিশাল গহ্বর তৈরি করে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে দেয়।

অধ্যাপক জনসন আরও বলেন, আমরা জানি যে প্রাচীন সৌরজগতে উল্কাপাতের ঘটনা ছিল খুবই সাধারণ। চাঁদের উপর উল্কাপাতের দাগ দেখে আমরা তা অনুমান করতে পারি। কিন্তু এত পুরনো গহ্বরের সন্ধান না পাওয়ায় ভূতাত্ত্বিকরা এতদিন বিষয়টি উপেক্ষা করছিলেন। এই আবিষ্কার পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আরও গবেষণার নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, পৃথিবীর অতীতের আরও প্রাচীন উল্কাপাতের চিহ্ন ভবিষ্যতে আবিষ্কৃত হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *