কানাডায় ডিভোর্স হলে সম্পত্তির অর্ধেক হারানোর ভয় : সম্পদ সুরক্ষায় বাড়ছে বিবাহপূর্ব চুক্তি

খুরশিদ আলম :  মার্চ ৩০, ২০২৫ ॥ কানাডায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত অনেক তরুণ তরুণী বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। অথবা অনেক দেরীতে বিয়ে করছেন। কারণ কি? অর্থনৈতিক নাকি ক্যারিয়ার গড়ে তোলার জন্য সময় নিচ্ছেন তারা? নাকি ডিভোর্সের ভয়ে?  তবে কারণ যেটিই হোক, বিষয়টি কিন্তু রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছে তাদের অভিভাবকদেরকে। কেউ কেউ আবার উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, দেখা গেছে ঠুনকো কারণেও এই দেশে অনেক তরুণ দম্পতির মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তখন তাদের কষ্টার্জিত সম্পত্তি অথবা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির অর্ধেক চলে যায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর নামে অথবা স্বামীর নামে। সেই ভয়েও হয়তো অনেকে বিয়েতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কিংবা অনেক সময় নিচ্ছেন বিয়ে করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে।

বিয়ের ব্যাপারে এই একই চিন্তা-ভাবনা বা প্রবণতা দেখা যায় কানাডার মূলধারাসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যেও। বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে তারাও দেরী করছেন। তবে শুধু যে ডিভোর্সের ভয়ে বা সম্পত্তি ভাগ হয়ে যাওয়ার ভয়ে বিয়ে করতে দেরী করছেন তা কিন্তু নয়। আরো কিছু কারণ রয়েছে এর পিছনে।

স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা কর্তৃক প্রকাশিত নতুন তথ্য অনুসারে দেখা যায়, কানাডায় পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় আজকের প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ তরুণীদের মধ্যে দম্পতি হিসাবে বাস করার সম্ভাবনা কম। একা থাকা, রুমমেটদের সঙ্গে থাকা অথবা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকার মতো বিকল্পগুলি এখন আরও সাধারণ হয়ে উঠেছে।

প্রাপ্ত তথ্যে আরো দেখা যায়, ১৯৮১ সালে ২৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি (৬৮ শতাংশ) মানুষ দম্পতি হিসাবে বাস করছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে এসে এই বয়সের দুই-পঞ্চমাংশেরও কম (৩৯ শতাংশ) মানুষ দম্পতি হিসাবে বাস করছেন।

উত্তর আমেরিকায় তরুণ তরুণীরা বিয়ের আগেই সম্পত্তি ভাগাভাগির চুক্তি করে নিচ্ছেন। তবে পিছিয়ে আছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। সংগৃহীত প্রতীকী ছবিটি বলিউড অভিনেতা নীল নিতীন মুকেশের

কানাডায় বিয়ে বিষয়ক এই প্রবণতাগুলি অন্যান্য দেশের সাথেও সাদৃশ্যপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ’র ( Pew) সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আজকের প্রাপ্তবয়স্ক ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে প্রায় এক-চতুর্থাংশ কখনও বিয়ে করবেন না। আরও দেখা গেছে বিশ্বজুড়ে, প্রাপ্তবয়স্করা দেরিতে বিয়ে করছেন, বিয়ে বিচ্ছেদের প্রবণতাও বেশি।

স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার তথ্য অনুসারে আরো দেখা যায়, গত কয়েক দশক ধরে কানাডায় বিয়ের হার ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। তাছাড়া, গত কয়েক দশক ধরে কানাডায় অবিবাহিত (কখনও বিয়ে করেননি) মানুষের সংখ্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৮১ সালে, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার প্রায় ৩৩ শতাংশ অবিবাহিত ছিলেন। ২০১৬ সালে এসে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৪৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

সাইকোলজি.কম এর তথ্য মতে, কানাডায় অবিবাহিতদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কিছু সম্ভাব্য কারণের মধ্যে রয়েছে অবিবাহিত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি, বিয়ের হার হ্রাস এবং বিচ্ছেদপ্রাপ্ত বা বিচ্ছিন্ন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি। অন্যান্য কারণের মধ্যে থাকতে পারে বিয়ে এবং সম্পর্কের প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং উচ্চশিক্ষা বা ক্যারিয়ারের সুযোগ গ্রহণকারী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি, যা তাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরির জন্য সময় বের করা আরও কঠিন করে তুলতে পারে। আরও কিছু সম্ভাব্য কারণের মধ্যে রয়েছে, কিছু লোক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্কে থাকার ধারণার চেয়ে তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দিতে পছন্দ করে।

সাইকোলজি.কম আরো জানায় কানাডায় দাম্পত্যজীবন এবং বিয়ের হার হ্রাসের প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে এই হ্রাসের প্রবণতার মধ্যেও এবং দেরীতে হলেও যারা একপর্যায়ে গিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন তারা এখন নতুন এক কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন ইংরেজীতে যাকে বলে Prenuptial agreement. বাংলায় যাকে বলা যায় বিয়েপূর্ব চুক্তি।

বিয়ে বিষয়টাই তো একটি চুক্তি। তাহলে বিয়েপূর্ব চুক্তি আবার কি? এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। কারণ অনেকে বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশীরা এই বিয়েপূর্ব চুক্তি সম্পর্কে বলতে গেলে মোটেও অবহিত নন।

মূলত সম্পত্তি সুরক্ষার জন্যই এই রীতি চালু হয়েছে কানাডিয়ান সমাজে। পার্শ্ববর্তী দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও আছে রীতি।

প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট, যাকে সাধারণত প্রিনাপ (prenup) বলা হয়, হল একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি যা স্বামী-স্ত্রী আইনত বিয়ের আগে তৈরি করে থাকেন। বিয়ের পর প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট তৈরি করা যায় না। তবে বিয়ের আগে এই চুক্তি করা থাকলে বিয়ের পর তা উভয়পক্ষের সম্মতিতে পরিববর্তন বা পরিবর্ধন করা যায়।

এই ডকুমেন্টে বা চুক্তিতে উল্লেখ থাকে বিয়ের পর যদি কোন কারণে স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে যান তবে তাদের সম্পত্তি বা ঋণ কিভাবে বিলি বন্টন হবে সেসব বৃত্তান্ত।

কানাডার মূলধারার বিশেষ করে শে^তাঙ্গ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রবাসী কণ্ঠ ম্যাগাজিনকে এ তথ্য জানান টরন্টোর বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্যারিস্টার ওমর হাসান আল জাহিদ।

আমেরিকান একাডেমী অব মেট্রোমনিয়াল লইয়ার্স এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, উত্তর আমেরিকায় আরও বেশি সংখ্যক বিয়েযোগ্য তরুণ তরুণী বিয়ের আগেই বিয়েপূর্ব চুক্তি করে নিচ্ছেন। সম্পত্তির সুরক্ষা, স্বামী/স্ত্রীর সহায়তা এবং সম্পদের বিভাজনের মতো বিষয়গুলি কভার করার জন্য আইনজীবীদের মাধ্যমে তারা বিয়েপূর্ব চুক্তি করার অনুরোধ করছেন। এই তথ্য প্রকাশ করে কানাডার গ্লোবাল নিউজ টিভি।

টরন্টো-ভিত্তিক পারিবারিক আইনজীবী পেটিকা রিক গ্লোবাল নিউজকে বলেন, কানাডাতেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুলম্যান ল ফার্মের এই আইনজীবীর মতে গত পাঁচ বছর ধরে এই প্রবণতা বেড়েছে।

প্রবাসী কণ্ঠ ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ বলেন শে^তাঙ্গ ছেলে-মেয়েরা এ বিষয়ে অনেক এগিয়ে আছে। বিয়ের আগে তাদের অনেকেই এই চুক্তিটি করে নেন। এমনকি চাইনিজ কমিউনিটির মধ্যেও এই প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি জনপ্রিয় হচ্ছে। তারা ড্যাম স্মার্ট। যারা ইয়ং জেনারেশন এখানে তারা সত্যিই ড্যাম স্মার্ট। তারা খুবই যত্নবান ও সতর্ক তাদের প্রপার্টি বা সম্পদের বিষয়ে। কিন্তু কানাডায় বাংলাদেশী কমিউনিটির ছেলে-মেয়েদের অনেকে এটা সম্পর্কে অবগতই নন। এখানে লইয়ার ইনজেনারেল খুব এক্সপেন্সিভ। যে কারণে এরা যে টাকা পয়সা খরচ করে কোন একজন লইয়ারের কাছে গিয়ে একটা লিগ্যাল অপিনিয়ন নিবেন বা ডিসিশন নিবেন এটা হয়ে উঠে না। অনেকেরই এই আগ্রহটা কম। বরং তারা ইনজেনারেল জানেন যে এখানে বিয়ে করলেই তো দুদিন পর কিছু হয়ে গেলে তার প্রপার্টি অর্ধেক চলে যাবে। এরকম একটি ধারণা এখানে অধিকাংশ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে কাজ করে।

ব্যারিস্টার ওমর হাসান আল জাহিদ

ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ আরো বলেন, প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি ভাল এই কারণে যে, ধরা যাক  একজন ব্যক্তি সে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, বিয়ের আগে কোন একটি বিশেষ প্রপার্টি বিল্ড করেছেন অনেক কষ্ট করে, পরিশ্রম করে। এখন বিয়ে তো বলতে পারেন সারাজীবনের জন্য স্থায়ী কোন ব্যাপার নয়। এখানে নানা কারণে ডিভোর্স হতে পারে। মেন্টাল রিলেশন না থাকতে পারে, ফিজিক্যাল প্রব্লেম, ইগো প্রব্লেম, অনেকগুলো প্রব্লেম এরাইজ হতে পারে। প্রথমে যে সম্পর্কটা সুন্দরভাবে শুরু হয় অনেক সময় সেটা হয়তো

একইভাবে শেষ নাও হতে পারে। সেরকম পরিস্থিতিতে যেটা দুর্ভাগ্যের বা দুর্দশার কারণ হতে পারে সেটা হচ্ছে – বিয়ের পর যে কোন কারণে হোক সম্পর্কটা টিকলোনা বলে একজন আরেকজনের কষ্টার্জিত বা পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি অর্ধেক নিয়ে যাবে এটাতো হতে পারে না। এটার কোন মানে হয় না। 

যদি বিয়ের পর দুজন মিলে একসাথে কোন সম্পত্তি গড়ে তুলেন তবে সেটা ভিন্ন কথা। যদি স্বামী-স্ত্রী মিলে একটা বাড়ি কিনেন, দু’জনেই টাকাপয়সা দেন, দুজনেই ইকোয়ালি সংসার চালান তখন অবশ্যই তারা সম্পদ সমানভাবে ভাগ করতে পারেন ডিভোর্সের পর।  এটা মোর দ্যান রিজনএ্যাবল। কিন্তু যে জিনিসটায় এক পক্ষের কোনা অবদান বা কন্ট্রিবিউশনই নেই, যে জিনিসটায় তার কোন অংশগ্রহণই নেই, সেটি জাস্ট ডিভোর্স হয়ে গেল বলেই অর্ধেক নিয়ে যাবে সেটার তো কোন মানে হয় না। এটি খুবই সোজা কথা।

উল্লেখ্য যে, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত টরন্টো-ডমিনিয়ন ব্যাংক (TD Bank) এর এক জরিপেও দেখা গেছে প্রেমের ক্ষেত্রে, কানাডিয়ানরা কেবল তাদের হৃদয়কেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে না, বরং তাদের সম্পত্তিকেও অগ্রাধিকার দিচ্ছেন এখন। ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী কানাডিয়ানদের উপর করা এই জরিপে দেখা গেছে যে এদের অর্ধেকেরও বেশি (৫২ শতাংশ) চান যে তাদের সঙ্গী যদি বিয়ে করতে চান বা কমন-ল সম্পর্কে প্রবেশ করতে চান তবে তারা যেন প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এ স্বাক্ষর করেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারী কানাডিয়ানদের মধ্যে যারা তরুণ সম্প্রদায়ের বিশেষ করে Gen Z সম্প্রদায়ের (যাদের বয়স বর্তমানে ১৩ থেকে ২৮ এর মধ্যে), তাদের ৬৫ শতাংশ বলেছেন সম্পর্ক শুরু করার সময় তাদের সঙ্গীর মোট সম্পদ তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ (যেখানে জাতীয় গড় ৫৭ শতাংশ)। এছাড়াও, Gen Z এর প্রতি চারজনের মধ্যে একজন স্বীকার করেছেন যে তারা সম্ভবত এমন কারোর সঙ্গে সম্পর্কে জড়াবেন না যাদের আয় তাদের চেয়ে কম।

অর্থাৎ প্রেম বা সম্পর্কের ক্ষেত্রে আর্থিক অবস্থান বা সক্ষমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় Gen Z দের মধ্যে। জরিপে আরো যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে-

–  ৭১ শতাংশ মানুষ তাদের সঙ্গীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাববেন যদি দেখেন যে তাদের সঙ্গী আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছ নন বা অসৎ আচরণ করছেন।

–  ৬৫ শতাংশ মানুষ তাদের সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাববেন যদি দেখেন তাদের সঙ্গী কখনও কোনও কিছুর জন্য অর্থ প্রদান না করেন।

–  ৫৬ শতাংশ মানুষ তাদের সঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাববেন যদি দেখেন তাদের সঙ্গীর বেহিসাবী খরচের অভ্যাস রয়েছে।

এখানেও লক্ষ্যণীয় যে, আর্থিক বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসাবে প্রতীয়মান হচ্ছে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে। আর এ কারণে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এদের কাছে। কানাডায় প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট হলো সম্পত্তি সুরক্ষার একটি প্রক্রিয়া।

কানাডায় প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট বা বিয়েপূর্ব চুক্তি ক্রমশই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কিন্তু ১৯৭৮ সালের আগে কানাডায় বিয়েপূর্ব চুক্তিগুলি কার্যকর করা হত না। তবে, ১৯৭৮ সালে করা ‘Family Law Reform Act’ বিশেষভাবে বিয়েপূর্ব চুক্তিগুলিকে অনুমোদন দিয়েছিল এবং তখন থেকেই দেশে এগুলি বিদ্যমান। তবে এটি জনপ্রিয়তা পায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে।

আর এই প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি কানাডা ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফিনল্যান্ডসহ আরো কিছু দেশে বিদ্যমান। তবে বাংলাদেশে নেই। ভারতেও নেই।

কানাডায় বিয়েপূর্ব চুক্তি প্রাদেশিক আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কানাডার প্রতিটি প্রদেশ এবং অঞ্চল বিয়েপূর্ব চুক্তিগুলিকে স্বীকৃতি দেয়। উদাহরণস্বরূপ, অন্টারিওতে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্টকে বিয়েপূর্ব চুক্তি বলা হয় এবং এগুলি পারিবারিক আইনের ধারা ৫২ দ্বারা স্বীকৃত।

তবে কানাডার মূলধারার সিংহভাগ তরুণেরা প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়ে আগ্রহী হলেও বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এই বিয়েপূর্ব চুক্তি নিয়ে এখনো এক ধরণের নেতিবাচক সংস্কার কাজ করে। প্রথমত এই বিষয়টির ব্যাপারে বাংলাদেশীরা প্রায় অবগতই নন। তারপরও যে অল্প কয়জন বিষয়টি জানেন তাদের মধ্যে এক ধরণের দ্বিধা বা সংস্কার কাজ করে এই ভেবে যে, বিয়ের আগেই বিয়ে ভাঙ্গার সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলা বা প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর প্রস্তাব উঠানো কতটা যুক্তিযুক্ত হবে? অথবা এটা একেবারেই আনরোমান্টিক একটি বিষয় হয়ে যাবে না?

ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ বলেন, প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশী ছেলেদের মধ্য একধরণের ট্যাবু কাজ করে। একটি ছেলে বিয়ের আগেই নিজে থেকে কি করে কোন মেয়েকে বলে যে তোমার সাথে আমার কোন সমস্যা তৈরী হলে তুমি আমার সম্পত্তির কিছুই পাবে না। এখানে একটি দ্বিধা বা সংকোচ অবশ্যই কাজ করে। আমাদের যে সামাজিকতা তার দিক থেকে বিচার করলে হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে, বিয়ের আগেই তুমি কিভাবে ডিভোর্সের কথা চিন্তা করছো। এই কারণে ছেলেদের পক্ষ থেকে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি উত্থাপন করা অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে মেয়েদের দিক থেকে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি উত্থাপন করা আমার কাছে মনে হয়েছে খুব সহজ। তারা সহজেই এই বিষয়টি বিয়ের আগে উত্থাপন করতে পারেন। এটা তাদের কাছে কোন ব্যাপার নয়। এটা হচ্ছে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। তবে এ ক্ষেত্রে আমার ভুল হতে পারে। ব্যতিক্রম তো আছেই।

ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ আরো বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে, সঠিক তথ্য না জানার অভাবেই প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আগ্রহটা কম। আর এখন তো বিয়ে যে একটা বড় ইনস্টিটিউশন, আমরা যে ভাবে দেখতাম একে, ইয়ং জেনারেশন কিন্তু বিষয়টাকে ঐভাবে দেখে না। তারা বরং বেশী পছন্দ করে কোম্পানিয়নশীপকে। তারা অধিক পছন্দ করে বন্ধুত্বকে। তাদের ভাবনাটা এরকম যে, যদি আমাদের মানসিক মিল থাকে হৃদয়ের মিল থাকে এবং অন্যসব ক্ষেত্রেও মিল থাকে তবে আমরা একত্রে থাকতেই পারি। আর যদি মিল না ঘটে তবে একত্রে থাকার প্রয়োজন নেই।  

হয়তো আমাদের সামাজিক দৃষ্টিকোন থেকে, ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে এটা গ্রহণযোগ্য নয়, সেটা আমাদের পারসেপশন বা উপলব্দি। কিন্তু পাশাপাশি ইয়ং জেনারেশনেরও তাদের নিজেদের জীবন সম্পর্কে নিজস্ব একটা পারসেপশন আছে। তারা তাদের জীবন সম্পর্কে ঐ ভাবেই চিন্তা করে।

প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর ব্যাপারে পাত্রী পক্ষ না পাত্র পক্ষ বেশী আগ্রহী? এমন এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ওমর বলেন, মোস্ট অব দ্যা টাইম পাত্রী পক্ষের যদি এ্যাসেট থাকে তবে তারা বেশী আগ্রহী। পাত্র পক্ষের দিক থেকে আগ্রহটা কম। ট্যাবুর কারণে এটি হয়।

বাংলাদেশী ছেলেদের বিয়ের ব্যাপারে আগ্রহ কম এর পিছনে কি এই সম্পত্তি ভাগ হয়ে যাওয়ার ভয় না কি অন্য কোন কারণ আছে? এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ওমর বলেন- না, শুধু সম্পত্তি ভাগ হয়ে যাওয়ার ভয় থেকে নয়। তবে কয়েকটি কারণের মধ্যে এটি একটি কারণ অবশ্যই। আমি আগেই বলেছি বিয়ে ইজ এ বাইন্ডিং। আমাদের একটা মনোগামী সামাজের ধারণা রয়েছে। কিন্তু তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের ভিতরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এটা আসলে খুবই কন্ট্রোভার্সিয়াল একটি টপিক। বিশেষ করে আমাদের কমিউনিটি এবং ধর্মীয় পারসপেটিভ থেকে। এই যায়গাটায় কমেন্ট করাটা অনেক চেলেঞ্জিং। বাট ইয়ং জেনারেশন আর চেঞ্জিং। দে হেব লটস অব অপশনস। দে হেভ লটস অব এভেলএবিলিটি। ইট ইজ নট লাইক বিফোর।

আপনি বলছেন বিয়েপূর্ব চুক্তির বিষয়টি বিয়ের আগে উত্থাপন করাটা ছেলেদের পক্ষ্যে কঠিন বা চ্যালেঞ্জিং। এটাকে তাহলে কি ভাবে ম্যানেজ করা যায়?

এ প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার ওমর বলেন, এটা ম্যানেজ করা যায় উইথ লজিক। দ্যাট ইউ আর গেটিং মেরিড, আই হেভ এসেট, উই আর টুগেদার। ইউ এনজয় ইট। বাট ইফ উই আর নট টুগেদার ফর এনি রিজন, হোয়াই ইউ উইল টেক মাই এসেট? ডাজ নট মেকিং সেন্স। আজকে যদি স্বামীর সম্পত্তি থাকে, যদি তার স্ত্রী তার সাথে আসেন তিনি তো সেই সম্পত্তিটা এনজয় করছেন। এখন আল্লা না করুক কালকে যদি স্ত্রীর সাথে কিছু হয় এবং সাডেনলি তিনি অর্ধেক সম্পত্তি নিয়ে চলে যেতে চান যেখানে তার কোন কন্ট্রিবিউশনই নেই, ইট ডাজ নট মেক এনি সেন্স। একই ব্যাপার মেয়েদের বেলায়ও। একটি মেয়ে যে অনেক কষ্ট করে সম্পত্তি বানিয়েছে বা উত্তরাধিকার সূত্রে অনেক সম্পত্তি পেয়েছে সে যদি কালকে একজনকে বিয়ে করেন এবং কিছুদিন পরে যদি তার সাথে ডিভোর্স হয়ে এবং মেয়েটির সম্পত্তির অর্ধেক ছেলেটি নিয়ে চলে যান, ইট ডাজ নট মেক সেন্স। এটাতো ইনজাস্টিস টু হার।

সন্দেহ নেই বিয়ের আগেই বিচ্ছেদের পরিকল্পনা করা কোনভাবেই রোমান্টিক নয়, তবে বাস্তবতা হলো, এটি আর্থিক পরিকল্পনা মতোই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। গ্লোবাল নিউজকে এ কথা বলেন সাচকাটুনের এক আইনজীবী কার্স্টেন হানাটুক।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ‘বীমা পলিসির’ মতো যা শুধু একজনের সম্পদই রক্ষা করে না বরং বিচ্ছেদ প্রক্রিয়াটিকে অনেক মসৃণ করে তোলে।

বস্তুত, অনেক সময় বিচ্ছেদ খুব ঝামেলাপূর্ণও হতে পারে, গ্লোবাল নিউজকে এ কথা বলেন, অন্টারিওর একটি পারিবারিক আইন সংস্থা ‘শুলম্যান অ্যান্ড পার্টনার্স এলএলপি’-র সহযোগী আইনজীবী লরা প্যারিস।

তিনি আরো বলেন, ‘এগুলি কেবল আর্থিকভাবে নয়, মানসিকভাবে, আবেগগতভাবে মানুষের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আমি মনে করি যখন বিয়ের আগে উভয় পক্ষের মধ্যে ভাল সম্পর্ক বজায় থাকে তখনই বিয়েপূর্ব চুক্তি করার অনেক সুবিধা রয়েছে।’

গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে The Harris Poll পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে সেখানে অধিক সংখ্যক মানুষ এখন বিয়েপূর্ব চুক্তি করছে।

কানাডায়ও অনেক কারণ আছে আরও অধিক সংখ্যক মানুষ কর্তৃক – বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম কর্তৃক বিয়েপূর্ব চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পিছনে।

অন্যদিকে দেখা গেছে কানাডায়, বছরের পর বছর ধরে বিয়েকালীন স্বামী-স্ত্রীর গড় বয়স বাড়ছে, কারণ লোকেরা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জন্য সময় নিচ্ছেন। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার মতে, ২০১৯ সালে বিয়ের গড় বয়স সর্বোচ্চ ছিল ৩৫.৩ বছর। সাম্প্রতিকতম স্ট্যাটক্যানের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে এটি ছিল ৩৪.৮ বছর।

দেরীতে বিয়ে করার আরেক অর্থ হল লোকজনের পকেটে আরও সম্পদ জমছে, যেমন একটি বাড়ি বা সম্ভবত একটি পেনশন পরিকল্পনা ইত্যাদি। আর স্বাভাবিক কারণেই তারা রক্ষা করতে চাইবেন তাদের সম্পদ। এ কথা বলেন আইনজীবী হানাটুক।

তিনি আরো বলেন, কেউ যদি ব্রোকেন ফ্যামিলি থেকে আসে বা তার যদি বিয়েবিচ্ছেদের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে সে বিয়েপূর্বক চুক্তির মূল্য বুঝতে পারে।

উল্লেখ্য যে, অন্টারিওতে ডিভোর্স বা বিচ্ছেদ এর পর সম্পত্তি ভাগের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। এমন না যে ডিভোর্স হলেই সম্পত্তি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমানভাগে ভাগ হয়ে যাবে। ব্যারিস্টার ওমর জাহিদ প্রবাসী কণ্ঠকে এ বিষয়ে বলেন, বিয়ের পর এক বাড়িতে রইলেন দম্পতি। বাড়িটি এক পক্ষের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া এসেট। এখন ডিভোর্স হলেই কি ভাগ হয়ে যাবে সেই সম্পত্তিও? না, নিয়মটা হচ্ছে এরকম যে, ইনহ্যারিটেট বা গিফটেট প্রপার্টি আর নট পার্ট অব নেট ফ্যামিলি ডিভিশন। অর্থাৎ আজকে যদি একজনের পিতা মারা যান তবে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তার সম্পত্তি থেকে তার স্পাউজ কিছু পাবেন না যদি তার সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। কারণ এটি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। তবে এখানে কথা আছে। যদি কোন পক্ষ তার স্পাউজকে নিয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তখন সেটি মেট্রোমনিয়াল হোম হয়ে যায়। তখন ইনহেরিটেন্স এর ল বা আইন আর এপ্লিকেবল হয় না এখানে। কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বাড়িতে থাকলেন না তারা, তারা অন্যত্র বাসা ভাড়া করে রইলেন বা অন্য বাড়িতে রইলেন তখন আর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া বাড়িটা মেট্রোমনিয়াল হোম হিসাবে বিবেচিত হবে না। এবং ডিভোর্সের পর সেই বাড়ি ভাগ হবে না।

আবার কোন বাড়ি যদি যৌথ সম্পত্তি হয়, অর্থাৎ বাবা মার সাথে ছেলে রইল এবং ঐ বাড়ির মালিকানা বাবা-মা ও ছেলে তিনজনেরই। অথবা বাবা মা ও মেয়ে তিনজনেরই। এবং সেই বাড়িতে স্ত্রী বা স্বামীসহ রইল তারা। তখন সেটি মেট্রোমিনিয়াল বাড়ি হিসাবেই বিবেচিত হবে। এবং ডিভোর্সের কারণে সম্পতি ভাগের প্রশ্ন উঠলে প্রপোরশনেটলি সেটা ভাগ হবে। অর্থাৎ ছেলে অথবা মেয়ের ভাগের অংশটুকু শুধু দুই ভাগ হবে। বাবা-মায়ের অংশটুকু নয়। আর যদি যৌথ সম্পত্তি না হয় তখন বিবেচনায় আসবে বাড়ি কার নামে। বাবা-মার নামে হলে সেটি মেট্রোমিনিয়াল হোম হিসাবে বিবেচিত হবে না। সেক্ষেত্রে ডিভোর্স হলেও ঐ বাড়ি থেকে স্পাউস কিছু পাবে না। আবার বাড়ি যদি ছেলে অথবা মেয়ের নামে হয় এবং তাদের বাবা মা যদি তাদের সাথে থাকেনও তবু সেই বাড়ি দুই ভাগ হবে এবং স্পাউস অর্ধেক পাবে।

ব্যারিস্টার ওমর প্রবাসী কণ্ঠকে আরো বলেন, প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এ লইয়ার এর রিপ্রেজেন্টেশন থাকা ভাল যাতে এটি কোন কোর্টে চ্যালেঞ্জ এর মুখে না পড়ে। কারণ অনেক সময় হয়তো এক পক্ষ দাবী করতে পারেন যে আমি এই চুক্তি সাইন করেছি না বুঝে বা বুঝতে পারিনি। কিন্তু লইয়ারের রিপ্রেজেন্টেশন থাকলে কোন পক্ষের এরকম বলার সুযোগ থাকে না। কারণ লইয়ার তার ক্লায়েন্ট এর কাছে সবকিছু এক্সপ্লেইন করবে তারপর ক্লায়েন্ট বুঝে ডকুমেন্টে সাইন করবে। না বুঝলে সাইন করবে না।

প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এ বাড়িসহ অন্যান্য সম্পত্তিও ইনক্লুড করা যায়।

প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়টি বিয়ের পরেও পরিবর্তন করা যায় যদি উভয় পক্ষ রাজী থাকে।

আবার এই বিয়েপূর্ব চুক্তি আদালতে বাতিলও হয়ে যেতে পারে যদি কেউ চ্যালেঞ্জ করে প্রমাণ করতে পারেন যে তার উপর জোরাজোরি ছিল বা তার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল না, ভলন্টারিলি তিনি স্বাক্ষর করেননি, তাকে প্রেসার দিয়ে, ইনফ্লুয়েন্স করে, ইনটক্সিকেটেড করে চুক্তিতে স্বাক্ষর করানো হয়েছে। আর লইয়ারের মাধ্যমে এটি করা হয়ে থাকলে তখন তো এটি লইয়ারের দায়িত্ব। লইয়ার কোন ডকুমেন্ট সই করানোর আগে তার ক্লায়েন্টকে বিষয়টি ভাল করে বুঝাবেন তারপর সই করাবেন। আর যদি লইয়ার মনে করেন যে তার ক্লায়েন্ট কোনভাবে চাপের মুখে আছেন বা তিনি মানসিকভাবে প্রস্তুত নন তখন তো এটি লইয়ারকে জাজমেন্ট করতে হবে এবং তখন বলতে হবে ইউ আর নট ইন এর পজিশন টু সাইন ইট। এটা শুধু প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট এর বিষয়ে নয়, যে কোন ডকুমেন্ট এর বেলাই এটি প্রযোজ্য।  

পরিশেষে প্রিনাপশিয়াল এগ্রিমেন্ট বা বিয়েপূর্ব চুক্তির বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীরা কতটা ওকিবহাল বা সচেতন তার একটি উদারণ দেওয়া যেতে পারে এখানে। ব্যারিস্টার ওমর জানান গত প্রায় দশ বছরে তার কাছে মাত্র হাফ ডজনের মতো ক্লায়েন্ট এসেছিলেন এই চুক্তি করার জন্য। এবং ঐ ছয়জনই মহিলা। কোন ছেলে আসেনি তার কাছে এই চুক্তি করানোর জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *