কানাডিয়ানদের কেউ কেউ যুক্ত রাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসাবে যোগ দিতে ইচ্ছুক!
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কানাডাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসাবে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন কানাডার জনগণও নাকি এটি পছন্দ করেন। আর এটি কার্যকর হলে কানাডা হবে একটি দুর্দান্ত অঙ্গ রাজ্য। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে গভর্নর হিসাবে আখ্যায়িত করা শুরু করেছেন।
আর কানাডার জন্য চরম অবমাননাকর ট্রাম্পের এই দাম্ভিকতাপূর্ণ আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু মানুষ সত্যি সত্যি যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হতে চাচ্ছেন! এবং এই কানাডিয়ানদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। একটি জরিপে দেখা গেছে যে কানাডিয়ানদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এই ধারণার প্রতি উন্মুক্ত। এবং আরেকটি জরিপে দেখা গেছে প্রায় সমান শতাংশ আমেরিকানও এই একীভূতকরণের পক্ষে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘লেগার’ এর এক জরিপে দেখা গেছে এই দলে আছেন কানাডার জনসংখ্যার শতকরা ১৩ জন। অন্যদিকে Angus Reid এর জরিপে দেখা গেছে শতকরা ১০ জন মার্কিনীদের সঙ্গে যোগ দিতে আগ্রহী। আর Abacus Data এর গবেষণায় দেখা গেছে শতকরা ৩০ জন কানাডিয়ানই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিতে ইচ্ছুক। তবে এই তিরিশজনের মধ্যে ২০ জন বলেছেন অঙ্গরাজ্য হওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে আর ১০ জন বলেছেন তারা যুক্ত রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার বিষয়ে এক পায়ে খাঁড়া।
তবে সামগ্রিকভাবে কানাডিয়ান জনগণের কাছে এই ধারণাটি অত্যন্ত অজনপ্রিয়। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘লেগার’ এর এক জরিপে দেখা গেছে ৮২% কানাডিয়ান এই অঙ্গরাজ্য হওয়ার ধারণাটি একেবারেই পছন্দ করছেন না। আর Angus Reid এর জরিপে দেখা গেছে ৯০% কানাডিয়ান কানাডার জন্য চরম অবমাননাকর এই ধারনার সম্পূর্ণ বিরোধী।
দেখা গেছে রাজনৈতিকভাবে যারা রক্ষণশীল বা কনজারভেটিভ আদর্শে বিশ্বাসী তাদের মধ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হওয়ার নতজানু নীতি বেশী কার্যকর। অর্থাৎ রাজনৈতিক বিশ্বাস এখানে একটি ভূমিকা রাখছে। এই কনজারভেটিভ আদর্শে বিশ্বাসীদের মধ্যে মার্কিনীদের সঙ্গে একিভূত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ২৫%। অন্যদিকে লিবারেল সমর্থকদের মধ্যে এই হার ১৩%।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সম্প্রতি বলেছেন, ট্রাম্প কানাডাকে ‘৫১তম অঙ্গরাজ্য’ করার যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছন তা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না। তবে এই পর্যন্তই তার প্রতিবাদ। ট্রাম্পের এই ইচ্ছা প্রকাশ যে কানাডার সার্বভৌমত্বের উপর সরাসরি আঘাত সে বিষয়ে তিনি কিছুই বলেননি।
অন্যদিকে কানাডার প্রধান বিরোধী দলের নেতা পিয়েরে পোইলিয়েভ ইতিমধ্যে এক্সে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্পের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কানাডা কখনোই ৫১তম অঙ্গরাজ্য হবে না। আমরা একটি মহান ও স্বাধীন দেশ।’ পিয়ের পইলিয়েভও কানাডার সার্বভৌমত্বের উপর যে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে তা নিয়ে কোন কথা বলেননি।
অ্যাঙ্গাস রিড এর জরিপে দেখা গেছে, এনডিপি (৯৯ শতাংশ), লিবারেল (৯৭ শতাংশ) এবং ব্লক কুইবেকোইস (৯৫ শতাংশ) এর সমর্থকদের প্রায় সকলেই ট্রাম্পের উদ্ভট এই চিন্তার বিরোধী। তবে রক্ষণশীল ভোটাররা আলাদা ছিলেন। তাদের ৮০ শতাংশ বলেছেন যে তারা একীভূতকরণের বিরোধিতা করবেন, অর্থাৎ ২০ শতাংশ রক্ষণশীল বা কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থকরা কানাডা-মার্কিন ইউনিয়নকে সমর্থন করেছেন।