যুক্তরাজ্যে স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের জন্য কানাডিয়ানদেরকে এখন থেকে অনুমতি নিতে হবে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক ॥ জানুয়ারি ৯, ২০২৫ : এখন থেকে ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড অথবা নর্দান আয়ারল্যান্ডে স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের জন্য কানাডিয়ানদেরকে ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথারাইজেশন (ETA) সংগ্রহ করতে হবে। নতুন এই আইন কার্যকর হয়েছে গত ৮ জানুয়ারি থেকে। খবর সিবিসি নিউজের।

ছয় মাসের কম সময়ের জন্য কোন কানাডিয়ান যুক্তরাজ্য ভ্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে অনলাইনের মাধ্যমে তাকে তার পাসপোর্টের বিবরণ, ভ্রমণের তারিখ এবং পরিবহনের মাধ্যম এ সবের তথ্য দিতে হবে যা কর্তৃপক্ষ ETA ইস্যু করার আগে পর্যালোচনা করবে।

সিবিসি জানায় যুক্তরাজ্যে ভ্রমণকারী কানাডিয়ানদের জন্য এই ব্যবস্থা নতুন। তবে অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের জন্য (যারা আকাশ পথে কানাডায় ভ্রমণ করতে আসেন) এই একই ব্যবস্থা চালু রয়েছে ২০১৬ সাল থেকেই।

যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের জন্য ETA সংগ্রহ করতে হবে। ছবি: ইউকে স্টক

টরন্টো মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম রিসার্চের পরিচালক ওয়েন স্মিথ সিবিসিকে বলেন, ‘এটা অনেকটা ক্রেডিট কার্ডের জন্য প্রাক-অনুমোদনের মতো।’

স্মিথ বলেন, ‘অনুমোদন দেওয়ার আগে এই সিস্টেমটি বিশ্বব্যাপী ডাটাবেসের মাধ্যমে আবেদনকারীদের তথ্য যাচাই করবে। এটি বিভিন্ন দেশের সরকারসমূহকে আরও আন্তঃসংযুক্ত হতে সহায়তা করে এবং একে অপরের সাথে কথা বলতে সাহায্য করে। পাশাপাশি তথ্য শেয়ার করে নেওয়ার সুযোগও করে দেয়।’

‘এটি জড়িত সকলের জন্য শক্তিশালী নিরাপত্তার আবরণ তৈরি করে।’

ক্রমবর্ধমান প্রবণতা

বিশ্বজুড়ে ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথারাইজেশন ক্রমশ সাধারণ হয়ে উঠছে।

‘কয়েক বছরের মধ্যে এটি বিশ্বব্যাপী প্রচলিত হয়ে উঠবে,’ সিবিসিকে এ কথা বলেন স্মিথ।

এই বছরের শেষ নাগাদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ এই একই ধরনের ব্যবস্থা চালু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্মিথ বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকালে যুক্তরাষ্ট্রেও এই ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথারাইজেশন সিস্টেম চালু হবে বলে তিনি সম্পূর্ণরূপে আশা করেন।

তিনি বলেন, এই ব্যবস্থাটি অভিবাসন এবং শরণার্থী সম্পর্কিত জটিলতা ও  উদ্বেগের সমাধানে সহায়তা করবে। কারণ এর মধ্য দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যাবে যে ভ্রমণেচ্ছু কোন ব্যক্তি অন্য এক বা একাধিক দেশে গিয়ে শরণার্থী হিসাবে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন কি না। কিংবা অন্যকোনো দেশ এই ব্যক্তির ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল কি না। অথবা অন্য কোন দেশে ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তিনি থেকে গিয়েছিলেন কি না। এই বিষয়গুলো এখন ভিসা প্রদানের আগেই বা ভ্রমণের অনুমতি প্রদানের আগেই জানা যাবে।

ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশনের খরচ

ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশনের জন্য হবে ১০ পাউন্ড যা কানাডিয়ান ডলারে প্রায় ১৮ ডলার। তবে এটি ১০ পাউন্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। কারণ এই অর্থ দিতে হবে ভ্রমণকারীকে। যুক্তরাজ্যের সরকারকে নয়। সেই দিক বিবেচনায় যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকরা তাদের সুবিধামতো বা ইচ্ছামাফিক আবেদন ফি যে কোনো সময়ই বৃদ্ধি করতে পারেন।

একটা পরামর্শ

ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথারাইজেশন এর আবেদন এপ্রুভ হতে মিনিট দশেক বা তার চেয়ে কয়েক মিনিট বেশি সময় লাগতে পারে। তবে এ জন্য গন্তব্যে পৌঁছানোর আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা আগে আবেদনটি সাবমিট করলেই হবে এরকম ভাবাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বরং এটি রিস্কি হয়ে যেতে পারে। এ কথা বলেন ওয়েন স্মিথ। ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথারাইজেশন ছাড়া গন্তব্যে পৌঁছালে ভ্রমণকারী ব্যক্তিকে তার নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে। সুতরাং এরকম ঝুঁকি না নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

তিনি পরামর্শ দেন এই আবেদনটি গন্তব্যে পৌঁছানোর অন্তত কয়েক সপ্তাহ আগেই করে নেওয়া ভাল। আর একবার আবেদনটি অনুমোদিত হয়ে গেলে এটি পরবর্তী দুই বছরের জন্য বৈধ থাকবে। এই দুই বছর সময়ের মধ্য যতবার ইচ্ছা ততবারই এটি ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে যাওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *