জীবনের বহু রং

(পাঁচ)

১৯৪৭-এর ১৪ই আগষ্ট

ইন্ডিয়া স্বাধীনতা লাভ

ক) ইন্ডিয়া বৃটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ১৯৪৭ সনের ১৪ই আগষ্ট। স্বাধীনতার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল প্রথমে ১৫ই আগষ্ট শুক্রবার। কিন্তু ভারতীয় হিন্দু রাজনীতিকগণ সেই তারিখটা হিন্দু জ্যোতিষবিজ্ঞানের হিসাব মতে অশুভ বলে গণ্য হওয়াতে তাদের আপত্তি মেনে নিয়ে বৃটিশ সরকার সেটাকে এগিয়ে এনে ১৪ই আগষ্ট বলে ঘোষণা করলো। (Reference: Pages 195-197, Freedom at Midnight)

খ)  মহাত্মা গান্ধীর হত্যা (নিউ দিল্লি, জানুয়ারী ৩০, ১৯৪৮) এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দের শোক প্রকাশ (Freedom at Midnight, Pages 501-514)

হিন্দু নাথুরাম গোডসে তাঁর বুকে তার পিস্তল থেকে সরাসরি তিনটি গুলি করে মহাত্মা গান্ধীকে তাঁর প্রার্থনা সভায় হত্যা করে। গুলি করার পূর্ব মূহুর্তে সে বলেছিল ঃ “নমস্তে, গান্ধীজী!” তাঁর তাৎক্ষণিক মৃত্যুর পূর্বে তিনি “হে রাম!” কথাটা উচ্চারণ করতে পেরেছিলেন।

প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হয়েছিল যে হত্যাকারী নিশ্চয়ই একজন মুসলিম। কিন্তু লর্ড মাউন্টব্যাটেন, ইন্ডিয়ার ফার্স্ট গভর্ণর জেনারেল যার হাত দিয়ে ইন্ডিয়া তার স্বাধীনতা লাভ করেছিল, তা বিশ্বাস করেননি। খবরটা শুনে তিনি বলেছিলেন, এখবর যদি সত্যি হয়, তাহলে ইন্ডিয়াতে মুসলিম হত্যার রক্তগংগা বয়ে যাবে। (পৃষ্ঠা ৫০৮) All India Radio immediately announced, “Mahatma Gandhi was assassinated in New Delhi at twenty minutes past five this afternoon. His assassin was a Hindu (Page 509) প্রতিশোধমূলক নির্দোষ মুসলিম হত্যার কলংক থেকে বেঁচে গেল ইন্ডিয়া এই sensible Radio announcement-এর ফলে। (Page 509)

গান্ধীকে হত্যার ঠিক পূর্ব মুহুর্তের ছবি। বাঁয়ে দেখা যাচ্ছে হত্যাকারী নাথুরামকে। ছবি : সংগৃহীত

প্রতিক্রিয়া

খবর ছড়িয়ে গেল সারা দুনিয়াতে মূহুর্তের মাঝেই। প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত নেহরুর কাছে শোকবার্তা পৌঁছতে লাগলো মিনিটে মিনিটে বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে। কিছু দৃষ্টান্ত :

1) George Bernard Shaw, the Irish playwrit whom Gandhi met in London in 1931, wrote: “His murder shows how dangerous it is to be good.”

2) In Paris, Premier Georges Bidault remarked that “all those who believe in the brotherhood of men will mourn Gandhi’s death.”
3) From South Africa, Gandhi’s first political rival, Field Marshal Jan Smith, sent a simple tribute: “A prince among us has passed,” he said.

4) At the Vatican, Pope Pious XII, paid tribute to “an apostle of peace and a friend of Christianity.”

5) In Washington, D.C., President Harry Truman declared that “the entire world mourns with India.”

6) Jawaharlal Nehru’s sister, Mr. V.L. Pandit, set out a register for condolences in her newly opened embassy in Moscow. Not a single member of Josef Stalin’s Foreign Office entered his name in it.

7) Mahatma Gandhi’s principal political rival Mohammed Ali Jinnah, Governor General of Pakistan, wrote in his message of condolence. “He was one of the greatest men produced by the Hindu community.” (Page 514))

(ছয়)

এবার আমার কাহিনী

২০১২ অথবা ২০১৩ সনের কথা। তখন আমরা স্বামীস্ত্রী দু’জন টরন্টো সিটির নর্থ ইয়র্কে Jane and Wilson এলাকায় বাস করতাম। কাছেই ছিল একটা Shoppers Drug Mart. সেখানে নানা প্রয়োজনে ঘনঘন যেতে হতো।

একদিন সকালবেলা সেখানে গিয়ে দেখি স্টোরের ম্যানেজারের কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে এক ক্যানাডিয়ান ভদ্রলোক কি সব বলছেন, আর লোকেরা মনোযোগ দিয়ে তা শুনছে। এগিয়ে গেলাম সেদিকে। আমি কাছে যেতেই তার চোখ পড়লো আমার দিকে। হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইন্ডিয়ান?” বললাম, “না, বাংলাদেশী। তবে আমার জন্ম বৃটিশ ইন্ডিয়াতে ১৯৩৩ সনে। ইন্ডিয়া পার্টিশনের সময় আমার বয়স ছিলো ১৪ বছর।”

শুনে তিনি বললেন, “তবে শুনুন, আপনাকে একটা ইনফরমেশন দিই, আপনি বুঝবেন। আমি জন্মগতভাবে বৃটিশ, তবে বর্তমানে ক্যানাডিয়ান সিটিজেন। আমার মা ছিলেন একজন very distinguished lady. ১৯৪৭ সনে India যখন British Rule থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীনতা লাভ করে তখন আমার মা নিউ দিল্লিতে British Foreign Office-এ high ranking diplomat পদে কাজ করতেন। ১৪ই আগষ্ট ১৯৪৭ সনের midnight-এ India স্বাধীনতা লাভের পূর্ব মূহুর্তে British Foreign Office-এর Flagstaff থেকে British Flag Union Jackটা টেনে নামিয়ে ফেলার অত্যন্ত অপ্রীতিকর দায়িত্বটা আমার মাকে পালন করতে হয়েছিল। মা তাঁর বাকি জীবনটা এটা নিয়ে একটা অপরাধবোধের অনুভূতি বহন করে কাটিয়ে গেছেন, যদিও তিনি তাঁর superior officer-এর আদেশেই সেই কাজটা করেছিলেন। British Flag টা নামিয়ে সেখানে স্বাধীন ইন্ডিয়ার নূতন Flagটা উড়ানো হয়েছিল।”

(সাত)

The Three Zero Club

জানুয়ারী ৩১, ২০২৪

আজ সকালে YouTube-এ একটা ভিডিও দেখে মনে বড়ই আনন্দ বোধ করলাম। সেই ভিডিওটাতে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল প্রাইজ বিজয়ী (২০০৬), দেশের গর্ব, ডঃ মুহাম্মাদ ইউনুসের ভাষণ থেকে জানলাম যে-

১.           তাঁর উদ্ভাবিত দেশের দরিদ্রজনগণের মাঝে নিম্নতম সুদে ক্ষুদ্র ঋণ (Micro Credit) দানের বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অন্যান্য দেশে অভাবনীয় সাফল্যের পর- যে জন্য তিনি ২০০৬ সনে Nobel Peace Prize পেয়েছিলেন- ৩৭টি দেশে Dr. Yunus Research Centre খোলা/প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

২.          বর্তমানে তিনি ও তাঁর Team (The Three Zero Club) “তিন শূন্যের পৃথিবী” গড়ার রিসার্চের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। Three Zeroটা কি? সেগুলো হলো ঃ

1.Zero poverty,

2. Zero unemployment, and

3. Zero carbon (Net Zero Carbonization)

তিনি আরো জানালেন যে তাঁদের এই রিসার্চের একটা প্রচেষ্টা হচ্ছে উদ্যোক্তা (entrepreneur) তৈরী করা, বসঢ়ষড়ুবব তৈরী করা নয়।

দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য Micro Credit Scheme এর উদ্ভাবক স্বনামধন্য, বিশ্ববরেণ্য ডঃ ইউনুস ও তাঁর Team-এর (The Three Zero Club)-এর সাফল্য কামনা করি।

(আট)

Prayer (প্রার্থনা) : বিশ্ব শান্তির জন্য

O God, is there no one to listen?
[SENECA (4BCE-65 CE), A ROMAN PHILOSOPHER]

ফেব্রুয়ারী ৩, ২০২৪

মানুষ আদিকাল থেকেই আকাশে অবস্থানকারী অদৃশ্য অথচ অতি ক্ষমতাবান/ সর্বশক্তিমান (কল্পিত) এক সত্ত্বার কাছে হৃদয়ে গভীর বিশ্বাস নিয়ে তাদেরকে সুখ-শান্তি দান করা অথবা তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য প্রার্থনা জানিয়ে আসছে। সুখ-শান্তি লাভ অথবা দুঃখ-দুর্দশা দূর না হলেও এই আকুল প্রার্থনা জানিয়ে তারা হৃদয়ে গভীর একটা তৃপ্তি বোধ করে, জীবনটা কম ভারাক্রান্ত বলে অনুভব করে। এটা বস্তুগত নয়, এটা একটা ধর্মীয় আচরণ (spiritual), হতে পারে সেই প্রার্থনাকারী একজন খৃষ্টান, ইহুদি, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ অথবা শিখ। সর্বশক্তিমানের নাম পালিত ধর্ম অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন, তবে সর্বজন পরিচিত নাম হচ্ছে সেই GOD. THE ALMIGHTY, THE ALL-POWERFUL GOD..

অন্যদিকে GOD-এর কাছে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার বাইরেও এক ধরনের প্রার্থনা আছে যার মূল বিষয়বস্তুটা হলো বিশ্ব-শান্তি। ধর্মেধর্মে শত্রুতা, ভেদাভেদ, রক্তপাত ও অশান্তির অবসান ঘটিয়ে পৃথিবীতে মানুষের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগিয়ে তুলে শান্তিপূর্ণ সহবাসের জন্য প্রার্থনা। ভেদাভেদ ও হিংসাটা যে অহেতুক গোঁয়ার্তুমি এটা যে যুদ্ধরত/বিভেদ সৃষ্টিকারী নেতৃবৃন্দ বা তাদের অনুসারীরা বোঝেন না, বিষয়টা এমন নয়। বোঝেন তারা ঠিকই কিন্তু এই বিভেদ-অশান্তিটা চালু রাখতে পারলে আর্থিক কিছু লাভ এবং রাজনৈতিক প্রতিপত্তি খাটানোর লোভটা তারা পরিত্যাগ করতে নারাজ। সমস্যাটার মূল হচ্ছে এখানে। তাই তারা সদিচ্ছা নিয়ে সবাই মিলে এক টেবিলে বসে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বিভেদগুলো দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠার উপায় অনুসন্ধান করতে এগিয়ে আসছেন না, যদিও পৃথিবীর দেশেদেশে শান্তিহারা অথচ শান্তিকামী জনগণ শান্তির জন্য আকুল প্রার্থনা জানাচ্ছে।

তবে একথাও সত্য যে দেশবিদেশে এখানে সেখানে তাদের ধর্ম-বর্ণ-দেশের বিভেদ-শত্রুতা ভুলে গিয়ে কিছু মুক্তচিন্তা/মুক্তমনা শান্তিকামী মানুষ পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করতে একক অথবা দলবদ্ধ হয়ে GOD-এর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছে, শান্তির বাণী প্রচার করছে যা অন্যদেরও অনুকরণ করার সময় এসেছে। কিছু দৃষ্টান্ত (Marcus Braybrooke-এর লেখা ৩৬৫ Meditations (2004) Edition বইটি থেকে)

1.Pray that two enemies will shake hands. That makes four hands at peace with each other. (Modern Prayer from SARAJEVO. Bridge of Stars. Page 181)

2.It is impossible to have peace without prayer, the prayer of all, each one in his own identity and in search for the truth. (POPE JOHN PAUL XXII, Reflections of Assisi, Page 286)

3.Spirit of peace, come to our waiting world, Throughout the nations may your voice be heard. (Geoffrey Gardner, contemporary Hymn writer, Page 287)

4.O God, Make good that which is between us, unite our hearts and guide us to the paths of peace. (A Muslim prayer. Page 239)

5.O God, as Muslims, Jews and Christians, we acknowledge that you have made of one blood all the nations of the earth. You love all of us, as if all were one. (A prayer prepared by a Christian, a Jew, and a Muslim. Page 303)

6.Formula for achieving peace.
I forgive all beings,
I ask forgiveness from all beings,
I make friends with all beings,
I have no enemies.
(From the JAIN religion SUTRA. Page 310)

7.From Google search.
Thomas Paine (1737-1809), English-born (UK) American Founding Father, Philosopher, Revolutionary, Political Theorist. Born in England, died in USA. He said-

1) The world is my country, all mankind are my brethren, and to do good is my religion.

2) I prefer peace. But if trouble must come, let it come in my time, so that my children can live in peace.

সর্বশেষ।

ইসলাম ধর্মের কঠোর নির্দেশ যে এক মুসলিমের সংগে অন্য এক মুসলিমের দেখা হলে তাকে সম্বোধন করতে হবে এই বলে যে “আসসালামু আলাইকুম” অর্থাৎ তোমার জন্য শান্তি কামনা করি। এবং সেটার জবাবেও বলতে হবে “ওয়ালাইকুম সালাম” অর্থাৎ তোমার জন্যও শাস্তি কামনা করি। জিজ্ঞাসা ঃ বিশ্বব্যাপী ৫৭টি মুসলিম দেশের কোথাও শান্তিআছে কি?

অপরদিকে ইহুদি ধর্মেরও পারস্পরিক সম্বোধন হচ্ছে “শেলম আলেখম”, তোমার জন্য শান্তি, এবং জবাবে “ওয়ালেখম শেলম” অর্থাৎ শান্তি কামনা করি তোমার জন্যও। কই ইহুদিদের দেশ ইজরায়েল-এ শান্তি আছে কি?

(নয়)

স্বপ্নবিলাস

ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২৪

সুন্দর একটা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে না

সমাজে এমন জনের দেখা পাওয়া ভার,

স্বপ্ন সবাই দেখে তবে পায় না তা হাতের নাগালে

নিখুঁত একটা প্ল্যান এবং

নিরলস চেষ্টা নাই যার।

মানুষ মাত্রই আমরা স্বপ্নবিলাসী

কিবা নারী, কিবা নর,

উড়ি আমরা কিছুটা সময় অহরহ

স্বপ্নের ডানায় দিয়ে ভর।

যার নেই ধন, কল্পনা করে সে একজন ধনী,

যার নেই রূপ, কল্পনায় সাজে সে রূপসী,

রুগ্ন ব্যক্তি হরষিত হয় সুস্থ হয়ে গেছে ভেবে,

নিঃসন্তান মাতা পুলকিত হয়

অচিরেই সন্তান সে কোলে নেবে।

পরীক্ষা দিয়েই আমরা

কল্পনার তরীতে চড়ি,

শুভ ফলাফলের রঙীন স্বপ্নে

অনেকটা সময় ব্যয় করি।

দশ টাকার টিকেট কিনে

কোটি টাকা জেতার স্বপ্ন দেখি।

বিদেশে চাকরির লোভে-

চরম অনিশ্চিত জেনেও দালালের হাতে

সর্বস্ব তুলে দেয় নির্বোধেরা ভিটেমাটি বিক্রি করি।

কিন্তু মনে রাখতে হবে,

স্বপ্ন সদাই অলীক, শুধুই কল্পনা,

সে কখনো বাস্তব নয়।

নিজের সাধ্যের ভেতরে চেষ্টা চালালে

পূর্ণ না হোক, আংশিক হলেও একদিন

সফলতা আসবে সুনিশ্চয় ॥

(দশ)

Learning English

Alphabets- A, B, C, D, . . . Z- for
the new generation

ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৪

অতীত কাল থেকেই English A, B, C, D ইত্যাদি শেখাতে বর্ণমালার বইতে দেশের সর্বত্র পরিচিত পশু, পাখি, ফল, ফুল বা অন্যান্য বস্তুর ছবিসহ শেখানো হতো। যথা A for Apple, B for Banana, C for Cat, H for Horse, M for Monkey, U for Umbrella, Z for Zebra ইত্যাদি।

কিন্তু কালের বিবর্তনে এবং দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি মূহুর্তে science and technology’র প্রভাবের ফলে সেই পদ্ধতিটা অচিরেই বদলে যেতে পারে। বর্তমান যুগে Internet technology’র ক্ষমতা তো অসীম।

YouTube-এ uploaded একটা দৃষ্টান্ত দিচ্ছি (যদিও এটা একটা Indian joke মাত্র।)

Letter For
A Android
B Bluetooth
C Chat
D Download
E Email
F Facebook
G Google
H Hotspot
I I-Phone
J Jio-SIM
K Keyboard
L Laptop
M Messenger
N Number Opera
O Opera Mini
P Playstore
Q QR Code
R Ram
S Screenshot
T Twitter
U USB
V Video
W Wi-Fi
X Xender
Y YouTube
Z Zindagi zhanda

(চলবে)

সাইদুল হোসেন

মিসিসাগা