৫২ শতাংশ কানাডিয়ান মনে করেন ইসরাইলের অস্তিত্ব থাকা গুরুত্বপূর্ণ : অন্যদিকে ৪৯ শতাংশ মনে করেন ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠন করা গুরুত্বপূর্ণ

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক , জুন ২৫, ২০২৪ : মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও হামাস এর মধ্যকার যুদ্ধ আট মাস পার হয়ে গেছে। থামার কোন লক্ষণ এখনো দেখা  যাচ্ছে না।  গত বছর সাতই অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় ১২শ’ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। জবাবে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ধ্বংস করতে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

সেই অভিযানে ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ গাজায় নিহত হয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছে তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ৬৮০ জনই শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষ।

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বাড়িঘর। এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশী ফিলিস্তিনি। ছবি: এএফপি

ইসরাইল গাজায় যে শুধু গণহত্যা চালাচ্ছে তা নয়, তারা অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণসামগ্রী পাঠাতেও দিচ্ছে না ঠিক মত। ফলে গাজায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। হাসপাতালগুলোতে এখন প্রয়োজনীয় ওষুধও নেই। এমনকি  হাসপাতালেও বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকার হাসপাতালে ইসরাইলি হামলা ‘ভয়াবহ’ এবং একেবারেই অগ্রহণযোগ্য’।

গাজায় মানবিক পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ এ কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস-ও।  তিনি বলেন, ‘মর্গগুলো লাশে ভরে গেছে। স্থানীয় দোকানগুলোতে কোন পন্য নেই। স্যানিটেশনের অবস্থা ভয়াবহ। রোগ ও শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে তা বেড়েছে। পুরো জনগোষ্ঠী আতঙ্কিত। গাজায় কোনো জায়গা নিরাপদ নয়।’

এই যখন পরিস্থিতি তখন ইনোভেটিভ রিসার্স গ্রুপ এর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে বেশিরভাগ কানাডিয়ান ইসরায়েলের অস্তিত্ব এবং ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র উভয়কেই সমর্থন করেন। কানাডা ভিত্তিক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে আরো দেখা গেছে দেশটির নাগরিকেরা বিক্ষোভকারীদের বাক-স্বাধীনতার অধিকারের সাথে ব্যাপকভাবে একমত – এমনকি তারা সেই প্রতিবাদগুলো যেভাবে কার্যকর হচ্ছে তাতে পুরোপুরি খুশি না হলেও।

উল্লেখ্য যে, গত কয়েকমাস ধরে কানাডার বিভিন্ন শহরে ইসলায়েল ও ফিলিস্তিন পন্থীরা সমাবেশ ও মিলিছ করে যাচেছন। কয়েক মাস ধরে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। তবে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নেই। বিশ্বের অন্তত ছয়টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় বিক্ষোভ হয়েছে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা তাঁবু গেড়েছেন।

ইনোভেটিভ-এর প্রেসিডেন্ট গ্রেগ লাইল বলেন, ” জরিপে সামগ্রিকভাবে আমরা যা পেয়েছি তা হল কানাডিয়ানদের মধ্যে অনেক সংযম বিদ্যমান।  রাজনৈতিক পার্থক্য মেনে নেওয়ার অনেক ইচ্ছাও রয়েছে তাদের। কিন্তু সহিংসতা বা রাজনৈতিক সহিংসতাকে মেনে নেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই কানাডিয়ানদের এবং বিঘ্ন সৃষ্টিকারী প্রতিবাদ কর্মকাণ্ডকে মেনে নিতে ইচ্ছুক খুব কম সংখ্যক কানাডিয়ান।”

জরিপে দেখা গেছে কানাডিয়ানদের প্রায় ৫২ শতাংশ মনে করেন ইহুদি রাষ্ট্র হিসাবে ইসরাইলের অস্তিত্ব থাকা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ৪৯ শতাংশ মনে করেন ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র গঠন করা গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *