নজীরবিহীন উত্তেজনা বিদ্বেষজনিত অপরাধ ‘অবিশ্বাস্য’ রকমে বাড়িয়ে দিয়েছে
২০২৩ সালে যত বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের ঘটনার রিপোর্ট এসেছে তার ৪০% ভাগই ইহুদিবাদবিরোধী
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ থেকে উদ্ভূত নজীরবিহীন উত্তেজনা টরন্টোজুড়ে বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের পরিমাণ “অবিশ্বাস্য” মাত্রায় বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর ২০২৩, এক বোর্ড মিটিংয়ে এ কথা বলেন নগরীর পুলিশ প্রধান। খবর সিবিসি নিউজ।
পুলিশ প্রধান মাইরন ডেমকিউ বলেন, ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসলাম অথবা ফিলিস্তিনীবিরোধী এবং ইহুদিবিরোধী উভয় ধরণের বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। ডেমকিউ বলেন, ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইহুদিবিরোধী ৩৮টি এবং মুসলিমবিরোধী বা ফিলিস্তিনীবিরোধী ১৭টি বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। আর উভয় পরিসংখ্যানেই তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধি ঘটেছে।
ডেমকিউ বলেন, “যে নগরী আমাদের বৈচিত্র্য নিয়ে গর্ববোধ করে, সেখানে এই বিপজ্জনক প্রবণতা এমন একটি বিষয় যা আমরা কখনও দেখিনি। গভীরভাবে পরস্পর সম্পর্কিত এসব বিষয়ের মোকাবেলায়, সার্বিকভাবে এই বৃদ্ধি রোধ করার জন্য আমরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক উপকরণ ব্যবহারে অঙ্গীকারাবদ্ধ।”
তিনি বলেন, তার বাহিনীর বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধ দমন ইউনিট সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং ইউনিটের সদস্য ৬জন থেকে ৩২ জনে উন্নীত করা হয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত এই ইউনিট ২২ জনকে গ্রেফতার ও ৫৮টি অভিযোগ গঠন করেছে।
ডেমকিউ ৭ অক্টোবর থেকে বিদ্বেষপরায়ণ দেয়ালচিত্র আঁকার পরিমাণও ব্যাপকভাবে বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ৭ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে ইসলামবিদ্বেষী অথবা ফিলিস্তিনীবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার ৬৩টি ঘটনা জানা গেছে, যা ২০২২ সালে ঘটেছিল মাত্র দুটি। অন্যদিকে একই সময়ের মধ্যে ইহুদিবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার ঘটনা ঘটে ২১৭টি, যা গত বছর ঘটে ১৯টি।
ডেমকিউ তার মন্তব্যের সময় শতকরা বৃদ্ধির হার উল্লেখ করেননি। তবে তার দেয়া পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে সেই পরিমাণটা দাঁড়ায় ইসলামবিদ্বেষী অথবা ফিলিস্তিনীবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার ঘটনা বেড়েছে ৩,০৫০ শতাংশ এবং ইহুদিবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকার ঘটনা বেড়েছে ১,০৪২ শতাংশ।
তিনি বলেন, নগরীতে বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের সংখ্যা প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি হতে পারে, কারণ কিছু মানুষ এসব ঘটনা পুলিশে রিপোর্ট করতে অনাগ্রহী হতে পারেন।
বোর্ড মিটিংয়ের পর টরন্টো পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের সুপার ক্যাথারিন স্টিফেনসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্য সম্পর্কিত রিপোর্টের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া জটিল হতে পারে।
স্টিফেনসেন বলেন, তাদের বাহিনী বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ও সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে এবং তাদের কাছে এমন দৃষ্টান্ত চায় যা কথিত ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যের দাবি সমর্থন করে। তিনি বলেন, ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যের জন্য কাউকে অভিযুক্ত করার আগে পুলিশ মামলাটি অবশ্যই অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে উপস্থাপন করে তাদের সম্মতি নিয়ে নেবে।