‘আমাদের গল্প শেয়ার করার এখনই সময়’
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডার ফার্স্ট লেডি নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও ভাবমূর্তি নিয়ে অতীতে কী রকম লড়াই করতে হয়েছিল সে বিষয়ে বাস্তব অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন।
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডো খাদ্যাভ্যাসে জটিলতা নিয়ে কাটানো সময় এবং উদ্বেগের বিষয়গুলি তুলে ধরেন এই আশায় যে, অন্যরাও তাদের নিজেদের কাহিনী তুলে ধরতে এগিয়ে আসবেন। খবর অসোবি ওয়াবেরি-নাউটরন্টো.কম।
কানাডাজুড়ে অনেকেই যখন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সপ্তাহে এবং মাস উদযাপন করছেন সেই সময় ফার্স্ট লেডির এই আলোচনা প্রকাশ পেলো।
ভিডিওতে তিনি বলেন, “কেমন আছেন আপনারা? এখন মানসিক স্বাস্থ্য সপ্তাহ পালিত হচ্ছে, আর আমাদের গল্পগুলি শেয়ার করার এটিই সময়।”
গ্রেগোয়ার ট্রুডো বলেন, “অনেক, অনেক বছর আগে আমি খাবারের রোগ নিয়ে আমার সংগ্রাম ও উদ্বেগের কাহিনী শেয়ার করেছিলাম,”
“সেটি ছিল আমার সত্যিকারের নিরাময় প্রক্রিয়ার সূচনা,” বলে যান তিনি। পোস্টে সেন্টার ফর এডিকশন অ্যান্ড মেন্টাল হেলথকে (সিএএমএইচ) ট্যাগ করেছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানটি গত কয়েক দশক ধরে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তার পোস্টের নিচে সিএএমএইচ মন্তব্য করেছে, “গল্প হলো মানুষ হওয়ার মৌলিক অংশ, গল্পের আছে মানুষকে একত্রিত করা, পরিবর্তনে প্রেরণা দান এবং নিরাময় জোরদার করার ক্ষমতা।”
গ্রেগোয়ার ট্রুডোর জন্য সারা বিশ্বের সামনে নিজের কথা অকপটে প্রকাশ করার এটিই প্রথম বা দ্বিতীয় ঘটনা নয়।
চলতি বছরেই আরও আগে তিনি নিজের একটি পুরনো ছবি প্রকাশ করে অনুসারীদের কাছে জানতে চান, ছবিতে যে মেয়েটিকে দেখা যাচ্ছে তাকে কি “কষ্টে আছে বলে মনে হচ্ছে।”
তার ছবির ক্যাপশন ছিল, “আমি এক প্রাপ্তবয়স্ক তরুণী হিসাবে জীবনের কিছু অংশে সুখী এবং প্রাণবন্তু ছিলাম কিন্তু খাওয়া নিয়ে জটিলতার বিরুদ্ধে গভীরভাবে লড়াই করছিলাম।”
“আমি যে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম তার সাথে কীভাবে মানিয়ে নিতে হয় তা আমাকে কেউ দেখিয়ে দেয়নি এবং আমার কষ্টের কারণগুলি আরও ভালোভাবে বুঝে ওঠার জন্য আমার যে সাহায্য ও নির্দেশনা দরকার তাও জানতাম না। বাইরের চেহারা নিয়ে বিভোর বিশ্বে আমরা ভুলে যাই যে, জীবন উদ্ভাসিত হয় ভেতর থেকে আর আমাদের সবারই আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হয়ে ওঠার সুযোগ আছে।”
এখন তাকে গুরুত্ব দেয়ার মত তার পরিবারসহ আরও লোক আছে আর সেজন্যেই তিনি নিজের আরও ভালো সংস্করণে পরিণত হবার জন্য কাজ করে যাবার শপথ নিয়েছেন।
সৌভাগ্যক্রমে তার স্বামী,
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও একই পেজে উপস্থিত।
সম্প্রতি তিনি টুইট করেন, “মানসিক স্বাস্থ্যও স্বাস্থ্য। এটি এই সপ্তাহে যেমন সত্য তেমনই প্রত্যেক সপ্তাহেই সত্য। আর সেজন্যেই আপনার প্রয়োজনের সময় এবং যেখানে দরকার সেখানেই যাতে আপনি সেবা পান তা নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের কাজ অব্যাহত রাখবো।”
আর দুঃখজনক ব্যাপার এই যে, অনেক কানাডীয়রই তার নিজস্ব গল্প থাকতে পারে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার চাহিদা তীব্র।
সিএএমএইচ-এর তথ্যমতে, কানাডায় বসবাসকারী প্রতি ১০ জন মানুষের মধ্যে প্রায় নয় জনেরই অধিকতর মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
তার ওপর, কানাডার আমেরিকান এক্সপ্রেস-এর নতুন এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬৮ শতাংশ কর্মরত কানাডীয়ই জানিয়েছেন যে, গত এক বছরে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা অগ্রাধিকারের বিষয় হয়ে উঠেছে।