বেশ কয়েকটি সহিংস ঘটনার পর টিটিসি’র কিছু যাত্রী অভ্যাস পাল্টে ফেলছেন

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : টরন্টোর বাসিন্দারা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে অন্য সব কানাডীয়দের চেয়ে কমই নিরাপদ বোধ করেন। একান্তভাবে গ্লোবাল নিউজের জন্য করা ইপসস-এর (Ipsos) নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ইসাক ক্যালান- গ্লোবাল নিউজ।

জরিপে দেখা যায়, পাবলিক ট্রান্সপোর্টে একা ভ্রমণ করার সময় টরন্টোর ৪৪ শতাংশ বাসিন্দা নিরাপদ বোধ করেন না। সেই তুলনায় টরন্টোর আশেপাশের ৯০৫ এলাকায় ৩৫ শতাংশ এবং সারা দেশের ২৭ শতাংশ যাত্রী একাকী ভ্রমণে নিরাপদ বোধ করেন না।

ইপসস-এর সিইও ড্যারেল ব্রিকার গ্লোবাল নিউজকে বলেন, “সাধারণভাবে লোকেরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত নিরাপদ মনে করেন। তবে সমাজের কিছু মানুষ আছেন যারা, যেখানেই যান না কেন, সত্যিই নিরাপদ বোধ করেন না।”

সম্প্রতি বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনার পর টরন্টোর বাসিন্দারা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়ে অন্য সব কানাডীয়দের চেয়ে কমই নিরাপদ বোধ করেন। ছবি : প্রবাসী কণ্ঠ

“আমরা তথ্য-উপাত্তে যেটা দেখেছি সেটি হলো, এটি একান্তই টরন্টোর ঘটনা, আর নির্দিষ্ট করে বললে টরন্টোর কেন্দ্রস্থলের ৪১৬ এলাকার ইস্যু বলে মনে হয়, যেখানে পাবলিক ট্রানজিট ব্যবস্থায় নানা ধরণের অনেক ঘটনার খবর মানুষ দেখেছে। এতে তারা ভয় পেয়েছে।”

টরন্টোর ট্রানজিট ব্যবস্থায় একর পর এক বেশ কিছু বড় ধরণের ও সহিংস ঘটনার পরই এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ পেলো। ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাই পার্ক সাবওয়ে স্টেশনে প্রাণঘাতী ছুরি মারা, একটি বাসে যৌন হামলার খবর, একজন গাড়ি চালকের মুখে এয়ারগান দিয়ে গুলি চালানোর অভিযোগ এবং একজন টিটিসি কর্মীর ওপর একদল টিনএজারের হামলা।

জরিপের তথ্যমতে, এমনকি বন্ধু ও পরিজন সাথে থাকার পরও টরন্টোর যাত্রীরা দেশের অন্যান্য অংশের যাত্রীদের তুলনায় কম নিরাপদ বোধ করেন। টরন্টোর ২৫ শতাংশ যাত্রী বলেছেন, ভ্রমণের সময় বন্ধু ও পরিবারের লোক সাথে থাকার পরও তারা নিজেদের অনিরাপদ বোধ করেন। সারা দেশে এধরণের যাত্রায় অনিরাপদ ভাবা যাত্রীর হার ১৫ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারিতে টরন্টো আঞ্চলিক ট্রেড বোর্ডের আয়োজনে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় টিটিসির সিইও রিক লিয়ারি বলেন, সহিংসতা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বিষয়ে সংস্থাটি “শেষের দিকে কিছু সত্যিকারের চ্যালেঞ্জিং সময়ের” মুখোমুখি হয়।

যাতায়াত ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত পুলিশ, টিটিসির নিজস্ব জনবল ও সমাজকর্মী বাড়ানোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “টিটিসিতে ঘটে যাওয়া বড় ধরণের ঘটনাগুলির সাথে আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও আমাদের গ্রাহকদের উদ্বেগের প্রকৃত সম্পর্ক আছে। আমরা জানি, এগুলি নিছক সরকারি পরিবহন সম্পর্কিত ইস্যু নয় বরং এগুলি সত্যিকারের চ্যালেঞ্জিং সামাজিক ইস্যু।”

ইপসস-এর জরিপে বলা হয়, পাবলিক ট্রানজিটে যাত্রার সময় টরন্টোর বাসিন্দারা যেভাবে আচরণ করে তাকে ওইসব বড় ঘটনাবলির প্রভাব থাকতে পারে। জরিপে অংশ নেওয়া টরন্টোবাসীর মধ্যে মাত্র ২১ শতাংশ বলেছেন পাবলিক

ট্রানজিটে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে তারা তাদের আচরণ কিছুমাত্র পাল্টাননি, অন্যদিকে ১৭ শতাংশ টরন্টোবাসী বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেন যেমন, সফরকালে তারা অন্য যাত্রীদের দিকে পিঠ ফিরিয়ে দাঁড়ান না কিংবা সাথে মরিচের গুঁড়া রাখেন। ১৩ শতাংশ যাত্রী পারতপক্ষে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়েন না, আর ১৪ শতাংশ বলেন, তারা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়া একেবারেই বাদ দিয়েছেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ টরন্টোবাসী- ৫৭ শতাংশ বলেন, ট্রানজিট ব্যবহারের সময় তারা অত্যন্ত নিরাপদ বোধ করেন অথবা বেশ অনেকটাই নিরাপদ বোধ করেন।