চরমপন্থা, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য কানাডায় ‘স্বাভাবিক’ হয়ে উঠছে, গুপ্তচর সংস্থার প্রধানের হুঁশিয়ারি
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডার গুপ্তচর সংস্থার প্রধান বলেছেন, দেশে আদর্শিকভাবে উজ্জীবিত চরমপন্থার সঙ্গে জড়িত বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য “স্বাভাবিক” হয়ে উঠছে এবং সমাজের মূলধারায় ঢুকছে। খবর জিম ব্রনস্কিল- দ্য কানাডিয়ান প্রেস।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে এক বক্তৃতায় কানাডার নিরাপত্তা গোয়েন্দা সার্ভিসের পরিচালক ডেভিড বিগনোল্ট বলেন, ভুল, বিভ্রান্তিকর তথ্য, অপপ্রচার ও ঘৃণা বপনের কাজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য অনলাইন প্লাটফরমের ব্যবহার অব্যাহতভাবে কেবলই বাড়ছে এবং দ্রুততর হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটির পাবলিক পলিসি ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স স্কুলের এক সমাবেশে বিগনোল্ট বলেন, তথ্যের এ ধরণের বিকৃতি ও অপপ্রচারণা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও যৌক্তিক বিবেচনা এবং বিজ্ঞানের প্রতি মানুষের আস্থা বিনষ্ট করার মাধ্যমে মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
তিনি বলেন, এসব কর্মকাণ্ডে জনমতের মেরুকরণ ঘটে এবং পরস্পর সাংঘর্ষিক বিবরণ ও বার্তা বিস্তারের পথ প্রশস্ত করে।
বিগনোল্ট সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী, যে কোনও সময়ের চেয়ে সামাজিক মাধ্যমের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিস্তারের মত বড় বড় বিঘ্ন সৃষ্টিকারী ঘটনা মিলে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করছে যার সুযোগ নিতে পারে প্রভাব সৃষ্টিকারী ও চরমপন্থীরা।
গুপ্তচর সংস্থা বলেছে, উল্লেখিত ফ্যাক্টরগুলোর সম্মিলিত প্রভাবে ব্যক্তিবিশেষের সহিংস কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হবার সম্ভাবনা আছে। বিগনোল্ট বলেন, চরমপন্থী মতাদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে উদ্বুদ্ধ হওয়া কানাডীয়রা ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত কানাডায় ২৬ ব্যক্তিকে হত্যা এবং ৪০ জনকে আহত করেছে।
সিএসআইএস আদর্শগতভাবে অনুপ্রাণিত সহিংস চরমপন্থীদের হুমকি বিষয়ে তদন্ত ও বিশ্লেষণের দায়িত্বে নিয়োজিত তার উপকরণগুলি জোরদার করছে।
বিগনোল্ট বলেন, আদর্শিকভাবে উদ্বুদ্ধ চরমপন্থী কার্যকলাপ সব কানাডিয়ানের জন্যই হুমকির কারণ বলেই, যারা সব সময়ই বর্ণবাদ, বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছে বিশেষ করে সেইসব ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর জন্য ভীতির অনুভূতি তীব্রতর।
“কানাডায় এটি স্পষ্টতই অগ্রহণীয়। আমি শব্দগুলিকে নগণ্য মনে করতে চাই নাÑ কিন্তু এখানে কোনওরকম ইসলামোফোবিয়া, ইহুদিবিদ্বেষ বা ঘৃণার কোনও জায়গা নেই।”
বিগনোল্ট এই প্রবণতার ব্যাপারে সক্রিয় হতে এর সাথে সুশীল সমাজের সমন্বিতভাবে সক্রিয় হবার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা এককভাবে এই হুমকির মোকাবেলা করতে পারবো না। সিএসআইএসসহ গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু সদস্যের ব্যাপারে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার বিষয়ে আমরা সচেতন। আমরা সচেতন যে, আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে কাজ করতে হবে, আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে এবং নিজেদের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধন জোরদার করতে হবে।”
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভেতরগত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের বিষয়টি বিগনোল্ট স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সিএসআইএসের ভেতরে পদ্ধতিগত বর্ণবাদ, বৈষম্য ও বাঁধার মত যেসব বিষয় ছিল সেগুলি পর্যালোচনা ও আলাপ-আলোচনার পর সংস্থাটি শিগগিরই বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি নতুন কৌশল চালু করতে যাচ্ছে।