হ্যামিলটনের মসজিদে বোমা হামলার হুমকি

প্রতিনিধিরা বললেন, এটি ‘উদ্বেগজনক ও বিব্রতকর’ ঘটনা

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক॥ ৭ জানুয়ারী, ২০২৩ : হ্যামিলটনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি মসজিদের প্রতিনিধিরা শুক্রবার বোমা হামলার হুমকি পাবার কথা জানিয়ে এ বিষয়ে কথা বলেন। তারা এটিকে “উদ্বেগজনক ও বিব্রতকর” ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। খবর দেসমন্ড ব্রাউন -সিবিসি নিউজের।

হ্যামিলটনে অবস্থিত ইব্রাহিম মসজিদ (কেলি বেনেট/সিবিসি)

মসজিদের ফেসবুক পেজে শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, “জুম্মার জামাতের নামাজের সময় ইব্রাহিম মসজিদে বোমা হামলার হুমকি দেয়া হয়।

মসজিদ কমিটির সভাপতি সাইয়েদ হাশেমী সিবিসি নিউজকে বলেন, জুম্মার নামাজ শেষে ঠিক বেলা ২টার পর পরই ওই হুমকি দেওয়া হয়।

তিনি জানান, ওই সময় মসজিদ ভবনে “প্রায় ৪০০ মানুষ” ছিল।

হাশেমীর বক্তব্য অনুযায়ী, হ্যামিলটনের পুলিশ প্রধান তাকে “বোমা হামলার হুমকির কারণে যত শিগগির সম্ভব মসজিদ ভবন থেকে সব মানুষকে সরিয়ে ফেলতে বলেন,” আর তাকে বলা হয় যে, পুলিশের টিপ লাইনে অজ্ঞাত সূত্রে এই হুমকি আসে।

হাশেমী বলেন, “প্রত্যেকেই ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।”

তিনি বলেন, এরপর পুলিশ ও বোমা স্কোয়াড মসজিদ ভবনে অনুসন্ধান চালায় তবে কোনও বোমা পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, কয়েক ঘণ্টার জন্য কিং স্ট্রিট বন্ধ করে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যায়।

২০১৬ সালে এই মসজিদে আগুন লাগানো হয়

২০১৬ সালেও এই মসজিদে হামলা চালানো হয়েছিল। ঘটনার পর তৎকালীন এমপিপি আন্দ্রেয়া হরওয়ার্থ ইমাম আইমান আল-তাহেরের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: ক্যালি বেনেট-সিবিসি

ফেসবুকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা জানি, এই মুহূর্তে অনেকেই গভীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন। যেহেতু ২০১৬ সালে এক ইসলামবিদ্বেষী আমাদের মসজিদে হামলা চালিয়ে গুরুতর অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। সে আমাদের নামাজের জামাতে কার্যকরভাবে আঘাত হানতে চেয়েছিল।” বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, মসজিদে আগুন  দেয়া ব্যক্তিকে পরে ২৫ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাত প্রায় ১১ টর দিকে মসজিদের দরজার কাছে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। উপস্থিত সিরীয় উদ্বাস্তুরা ছোট আকারের সে আগুন নেভান এবং সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে ধরতে পুলিশকে সাহায্য করেন।

মসজিদে আগুন লাগানোর দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৩৯ বছর বয়সী লোকটিকে ২০১৭ সালের মে মাসে ২৫ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। 

শনিবারের বিবৃতিতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ বলেছেন, “আমাদের জুম্মার জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ যে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়।”

বিবৃতিতে জনগণের প্রতি “জল্পনা-কল্পনায় না জড়ানো এবং পুলিশি তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে সহায়তার” আহবানও জানানো হয়।

এটি ‘আমাদের সবার জন্যই হুমকি’: মেয়র

হ্যামিলটনের মেয়র আন্দ্রেয়া হরওয়ার্থ শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, বোমা হামলার হুমকির বিষয়টি জেনে তিনি “বিস্মিত ও আতঙ্কিত” বোধ করেছেন। 

হরওয়ার্থ তার বিবৃতিতে বলেন, “মুসলিম কমিউনিটির প্রতি হুমকি আমাদের সবার প্রতি হুমকি। আমি মসজিদের ইমাম আয়মান আল-তাহের-এর সঙ্গে কথা বলেছি এবং হ্যামিলটন শহরের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছি।”

তিনি “ইসলামোফোবিয়া এবং নির্দিষ্ট করে মুসলিম কমিউনিটির বিরুদ্ধে যে ঘৃণা তার মোকাবেলায় নগরীর পক্ষ থেকে অব্যাহত অঙ্গীকারের পুনঃনিশ্চয়তা দেন।”

মিস. হরওয়ার্থ আরও যোগ করেন, “মেয়র হিসাবে, সব ধরণের বর্ণবাদ, ঘৃণা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া এবং সবারই যেমনটা প্রাপ্য হ্যামিলটনকে তেমনই একটি স্বাগতকারী সমাজে পরিণত করার লক্ষ্যে কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাওয়া আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

হ্যামিলটন কেন্দ্রের পার্লামেন্ট সদস্য ম্যাথিউ গ্রিনও সমর্থন জানান।

শনিবার বিকেলে তিনি বলেন, “মুসলিম কমিউনিটির বিরুদ্ধে ভীতি প্রদর্শনের এই কাজের আমি নিন্দা জানাই এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার অপেক্ষায় থাকবো।” মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে সংহতি জানানোর জন্য বিবৃতিতে পুলিশ, হরওয়ার্থ, গ্রিন এবং এর প্রতিবেশিদের ধন্যবাদ জানিয়েছে।