বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা’র আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
৫২’এর পথ পেরিয়ে
বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা গত ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ রাত ৮টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে “৫২’র পথ পেরিয়ে” শীর্ষক অনলাইনে এক আলোচনা ও কবিতা পাঠের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কন্সুলেট টরন্টোর কন্সাল জেনারেল মোঃ লুৎফর রহমান। এছাড়া ইমার্জেন্সি বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী ও স্কারবরো সাউথওয়েস্ট এলাকার এমপি বিল ব্লেয়ার একটি ভিডিও বার্তা পাঠান যা অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয় এবং তিনি একটি সনদপত্র প্রদান করেন। সেটি পাঠ করেন কবি জালাল কবির। টরন্টোর স্কারবরো সাউথ ওয়েস্ট এলাকার এমপিপি ডলি বেগম প্রাদেশিক সংসদের অধিবেশনে ব্যস্ত থাকায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারলেও একটি সনদপত্র প্রদান করেন। সেটি তার অফিস থেকে পাঠ করেন জনাব ফায়জুল করিম। ল্যান্ড একনলেজম্যান্ট পাঠ করে আমাদের নতুন প্রজন্মের সার্বভৌম রায় মজুমদার। এই অনুষ্ঠানের আহবায়ক ছিলেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার কোষাদক্ষ নয় হাফিজ।
আড়াই ঘন্টার এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন টরন্টো থেকে কবি ঋতুশ্রী ঘোষ, কিংস্টন সিটি থেকে লেখক মানসী সাহা ও সাস্কাচুয়ান থেকে লেখক ভিকারুন নিসা কলি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা’র কার্যনির্বাহী পরিষদের সভাপতি কবি মৌ মধুবন্তী ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রাইটার্স ক্লাব কানাডা’র সচিব লেখক আলী আজগর খোকন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা প্রমিত বাংলা ভাষা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। বিদেশী ভাষা থেকে যে শব্দগুলো বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে তা নিয়েও তিনি কথা বলেন এবং ইউনেস্কো বাংলা ভাষাকে বিশ্বের সবচাইতে শ্রুতিমধুর ভাষা হিসেবে স্বীকৃতির কথাও স্মরণ করিয়ে দেন।
কন্সাল জেনারেল মোঃ লুৎফর রহমান বলেন ইতিমধ্যে কানাডার একজন ফেডারেল পার্লামেন্ট সদস্য কানাডার জাতীয় সংসদে বলেন যেহেতু একুশে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত তাই এ দিনটি কানাডার জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়ার প্রস্তাব করেন। এ বিষয়ে অটোয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস কাজ করছে। তিনি কানাডায় বসবাসরত সকল বাংলাদেশী শিল্পী, লেখক, গুণীজন, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে এ বিষয়ে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।
বক্তব্য রাখেন কানাডিয়ান কবি এনা নিয়েমিনেন। তিনি মাতৃভাষার উপর আলোচনা করতে গিয়ে বলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ইমিগ্রেন্ট হয়ে কানাডায় বসবাস করেন এবং যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয় তাদের প্রথম পুরুষ অনেকেই জীবন-যাপনের জন্য চাকুরী পেতে অসুবিধার সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় পুরুষের কোনরূপ ঝামেলা পোহাতে হয়না এবং তৃতীয় পুরুষ সম্পূর্ণ রূপে মূলধারায় মিশে যায়।
বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা’র উপদেষ্টা গবেষক ও লেখক হাসান মাহমুদ বাংলা ভাষায় একটি শব্দের বিভিন্ন অর্থ ও প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের কবিদের মধ্যে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি আলী আজগর খোকন ও কবি আবদুল হাই সুমন। বাংলাদেশ থেকে আহমেদ হোসেন, রুহু রোহেল ও শাহানা জেসমিন। আবৃত্তি করেন কানাডা থেকে ললিতকণ্ঠের আবৃত্তি শিল্পী জহির হাসান চৌধুরী সবুজ, নাসিমা বাহার ও তৌফিকুর রহমান রাঙ্গা এবং আমেরিকা থেকে ফারুক আজম। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডা’র কার্যনির্বাহী পরিষদের সহসভাপতি মোয়াজ্জেম খান মনসুর, কোষাধ্যক্ষ নয়ন হাফিজ ও নির্বাহী সদস্য সাবিনা শারমিন ছন্দা। উক্ত অনুষ্ঠানের পোস্টারটি শত ব্যস্ততার মধ্যেও ডিজাইন করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার কালচারাল সদস্য জামিল বিন খলিল। আগামী ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব কানাডার সকল উপদেষ্টা ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাগ্রহ উপস্থিতি একান্ত কাম্য। – সংবাদ বিজ্ঞপ্তি