অন্টারিওতে ফার্মাসিস্টরা এখন থেকে ১৩টি সাধারণ অসুখ নিরাময়ে প্রেসক্রিপশন দিতে পারবেন
প্রেসক্রিপশনের নতুন ক্ষমতাকে স্বাগত জানালেন ফার্মাসিস্টরা : তবে অনেকে উদ্দীপ্ত বোধ করলেও, লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ০২ জানুয়ারি ২০২৩ : অন্টারিওর ফার্মাসিস্টরা এখন থেকে চোখ লাল হওয়া এবং ঠান্ডা লাগার মত ১৩টি সাধারণ অসুখ নিরাময়ে প্রেসক্রিপশন দিতে পারবেন, কিন্তু অটোয়ার সব ফার্মাসিস্ট বলেননি যে, এই নতুন দায়িত্ব পালনে তারা প্রস্তুত। খবর অবন্তিকা আনন্দ – সিবিসি নিউজ।
সিবিসি অটোয়া নগরীর সব ফার্মাসিস্ট নববর্ষের শুরু থেকেই প্রেসক্রিপশন দেয়া শুরু করছেন কিনা জানার জন্য ৩০ জনেরও বেশি ফার্মাসিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখতে পায়, অনেকে এই সেবাদান শুরু করতে ইচ্ছুক হলেও কিছু ফার্মাসিস্ট মনে করছেন তারা এ কাজের জন্য প্রস্তুত নন।
অন্টারিও সরকার ফার্মসিস্টদের প্রেসক্রিপশন দেওয়ার এই নতুন ক্ষমতা সম্পর্কে ঘোষণা দেয় ২০২২ সালের জুলাই মাসে। কোভিড-১৯ মহামারি এবং ভাইরাসজনিত অসুস্থতা বেড়ে যাবার কারণে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়া প্রাথমিক সেবাদানকারী ও ইমার্জেন্সি রুমের চিকিৎসকদের ভার প্রশমনের লক্ষে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এই সেবা দানের ক্ষেত্রে অন্টারিও ছিল দ্বিতীয় সর্বশেষ প্রদেশ।
ওষুধ বিক্রির ফার্মাসির মালিক ম্যাট ইয়াং বলেন, “আমরা যে সেবা (আগে) দিতে পারতাম তা ছিল খুবই সীমিত।”
“এখন যেহেতু আমাদের একটু হলেও বেশি উঁচু কণ্ঠস্বর এবং একটু বেশি সহায়তার ক্ষেত্র থাকছে যা আমরা কাস্টমারদের দিতে পারবো। নিশ্চয়ই আমরা খুবই উদ্দীপিত।”
এই উদ্দীপনা সত্ত্বেও, ইয়াং বলেন, অন্টারিওর কলেজ অব ফার্মাসিস্ট মাত্র এক মাস আগে নতুন ব্যবস্থার নির্দেশিকা সরবরাহ করেছে, এর ফলে নতুন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় পাওয়া গেছে সামান্যই।
ইয়াং বলেন, তিনি অন্তত আরও এক মাস এই নতুন পরিষেবা শুরু করবেন না, যেহেতু তার ফার্মাসিতে প্রতিদিন ৫০ জনেরও বেশি কাস্টমার আসেন এবং তিনিই এখানকার একমাত্র পূর্ণকালীন ফার্মাসিস্ট।
তিনি বলেন, “কাস্টমার ও ফার্মাসিস্টদের জন্য নির্দিষ্ট সময় বের করার দরকার হবে। এই মুহূর্তে আমরা ওষুধ বিতরণ ও ইঞ্জেকশন দেয়ার কাজে যথেষ্ট ব্যস্ত… আমাদের আরও একটু বেশি সহায়তার প্রয়োজন আছে।
“আমাদের মূল লক্ষ হলো কাজটা যথাযথভাবে সম্পন্ন করা।”
ফার্মাসিস্টের অভাবে কাজ করা যাচ্ছে না
অটোয়ার একটি মেডিক্যাল ফার্মাসির মালিক আশরাফ ইয়াকুব বলেন, তিনি ফার্মাসিস্ট খুুঁঁজছেন যারা নতুন চাহিদা পূরণ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে এখানে ফার্মাসিস্টের ঘাটতি আছে। ইঞ্জেকশন দেওয়া, পরামর্শ দেওয়া, সব ক্লায়েন্টকে সাহায্য করাসহ আমাদের ওপর কাজের ভার অনেক বেশি। আমরা ছিলাম প্রতিরোধ যুদ্ধের প্রথম প্রতিরক্ষা লাইন, এখন আমাদের অবশ্যই বেশি সহায়তার প্রয়োজন আছে।”
ইয়াকুব হলেন একটি ফার্মাসিতে দুজন ফার্মাসিস্টের একজন। তার ফার্মাসিতে দৈনিক ১০০ গ্রাহক আসেন। তিনি বলেন, যারা আগে থেকে কল করবেন এবং অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়ে আসবেন তিনি কেবল তাদেরই প্রেসক্রিপশন দেয়া শুরু করবেন।
তিনি বলেন, “প্রতিদিন একটি বা দুটি প্রেসক্রিপশন দিতে হলে, আশা করি আমি সেটা সামলে নিতে পারবো, কিন্তু তার বেশি হলে আমাকে অন্য কোনও দিনের জন্য বিষয়টি বিলম্বিত করতে হবে।”
“আমরা কেবল ততটুকুই সাহায্য করতে পারবো যতটুকু করার ক্ষমতা আমাদের আছে।”
যেসব সমস্যায় আর ডাক্তারের কাছে না গেলেও চলবে:
– অ্যালার্জিক রাইনাইটিস।
– ক্যান্ডিডাল স্টোমাটাইটিস (ওরাল থ্রাশ)।
– কনজাঙ্কটিভাইটিস (ব্যাকটেরিয়াল, অ্যালার্জিক ও ভাইরাল)।
– ডার্মাটাইটিস (এটাপিক, একজিমা, অ্যালার্জিক ও সংস্পর্শজনিত)।
– ডিসমেনোরিয়া।
– গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ।
– হেমোরয়েডস।
– হারপিস ল্যাবিয়ালিস (ঠান্ডাজনিত ঘা)।
– ইমপেটিগো।
– পোকামাকড়ের কামড় ও ছত্রাক (আমবাত)।
– এঁটেল পোকার কামড়, লাইম রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা।
– মাসকিউলোস্কেলেটাল স্প্রেনস ও স্ট্রেনস।
– মূত্রনালীর সংক্রমণ।
টরন্টো এলাকার ফার্মাসিস্ট নারডাইন নাখলার মতে, ২০২৩ সালের মধ্যে ১০টি প্রদেশের সবগুলিই এসব সেবা দিত সক্ষম হবে।
আলবার্টা ছিল প্রথম প্রদেশ যারা ফার্মাসিস্টদেরকে ২০০৭ সালে এই প্রেসক্রিপশন দেওয়ার ক্ষমতা দেয়। অন্টারিও ছিল ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার আগে দ্বিতীয় সর্বশেষ অবস্থানে।