দাঁতের চিকিৎসায় ৭০,০০০ ডলারের কম আয়ের যেসব পরিবারে বাচ্চা আছে তাদেরকে ১,৩০০ ডলার আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে

সরকার দন্ত চিকিৎসায় নতুন সুবিধার বিস্তারিত প্রকাশ  করেছে

প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : ক্ষমতাসীন লিবারেল দলের কেন্দ্রীয় সরকার ‘কানাডা ডেন্টাল বেনিফিট’ নামে দাঁতের চিকিৎসায় প্রদেয় সুবিধা, আবাসন খাতে দেওয়া সুবিধা একবারের জন্য বাড়ানো এবং জিএসটি ট্যাক্স ক্রেডিড (এঝঞ) বাড়ানো সম্পর্কিত পরিকল্পনার বিস্তারিত প্রকাশ করেছে। খবর পিটার জিমোনিক /সিবিসি নিউজের। সরকার জানায়, নিম্ন ও মাঝারি আয়ের লোকেদের জন্য প্রদেয় তিনটি নতুন সুবিধার জন্য মোট ব্যয় হবে সাড়ে চার’শ কোটি ডলার। এর মধ্যে বাজেটে ঘোষিত অর্থের অতিরিক্ত ৩২০ কোটি ডলার নতুন করে যুক্ত হবে।

আশা করা হচ্ছে, কানাডা ডেন্টাল বেনিফিটের প্রথম পর্যায়ে দুই বছর থেকে ১২ বছর বয়সী পাঁচ লাখ শিশুর জন্য সুবিধা দেয়া হবে এবং এতে ব্যয় হবে ১০০ কোটি ডলার।

ডেন্টাল বেনিফিটের এই প্রথম পর্যায়কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিন-ইয়েবেস ডুক্লোস  “অন্তর্বর্তী” ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আগামী বছরগুলিতে এই ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হবে।

তিনি বলেন, “কানাডা ডেন্টাল বেনিফিটের এই অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা কেবল শুরু। অস্থায়ী এই সুবিধা বলবৎ থাকতেই আমাদের সরকার দাঁতের চিকিৎসায় একটি সমন্বিত, দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচি তৈরির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।”

ডেন্টাল কেয়ার প্ল্যানের বিস্তারিত

কর্মসূচির যে তথ্য মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয় সে অনুযায়ী, এটি শুরু হবে চলতি বছরের আরও পরের দিকে এবং এতে বার্ষিক ৭০,০০০ ডলারের কম আয়ের যেসব পরিবারে ১২ বছরের কম বয়সী শিশু আছে তারা এই সুবিধা পাবার যোগ্য হবে। এরা দাঁতের যত্নে পরবর্তী দুই বছর ধরে বার্ষিক ৬৫০ ডলার করে পাবেন। ৭০,০০০ থেকে ৭৯,০০০ ডলারের মধ্যে উপার্জন আছে এমন পরিবারগুলো প্রতি শিশুর জন্য পরবর্তী দুই বছর ধরে পাবে বছরে ৩৯০ ডলার পর্যন্ত। ৮০.০০০ ডলার থেকে ৮৯,০০০ ডলারের মধ্যে যাদের আয় সেসব পরিবার প্রতি শিশুর জন্য দুই বছর ধরে পাবে বছর ২৬০ ডলার করে।

ডেন্টাল বেনিফিটের প্রথম পর্যায়ে দুই বছর থেকে ১২ বছর বয়সী পাঁচ লাখ শিশুর জন্য সুবিধা দেয়া হবে এবং এতে ব্যয় হবে ১০০ কোটি ডলার। ছবি : প্রবাসী কণ্ঠ

সরকার বলেছে, পার্লামেন্টে আইন পাশ হলেই কানাডা ডেন্টাল বেনিফিটের এই প্রথম পর্যায়ের কর্মসূচি চালু হবে।

কর্মসূচি চালু হলে শিশুর বাবা-মায়েরা সুবিধা পাবার জন্য সরাসরি কানাডা রেভিনিউ এজেন্সির (ঈজঅ) কাছে আবেদন করতে পারবেন। এটা তারা করতে পারবেন সিআরএর “মাই অ্যাকাউন্ট” এর মাধ্যমে অথবা সংস্থার কোনও যোগাযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে। সুবিধা পাবার জন্য বাবা-মা অথবা অভিভাবককে এই মর্মে প্রত্যয়ন করতে হবে যে, তাদের বাচ্চা কোনও বেসরকারি ডেন্টাল কেয়ারে যায় না এবং প্রাপ্ত অর্থ তারা কেবল দাঁতের যত্নেই ব্যবহার করবেন।

এই সুবিধা যারা নেবেন তাদেরকে সিআরএর কাছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের নাম এবং অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখও জানাতে হবে। তাদেরকে চিকিৎসার পরিশোধিত বিলের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। কারণ চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে সিআরএ কখনও জানতে চাইতে পারে।

অসত্য তথ্য দিলে, বিলের রিসিট দেখাতে না পারলে কিংবা ওই অর্থ দাঁতের চিকিৎসায় ব্যয় করা না হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে সর্বোচ্চ ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে।

বেনিফিটের টাকা নেয়ার পর সেটা অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসায় ব্যয় করতে হবেÑ তবে ওই বছর দাঁতের চিকিৎসায় প্রাপ্ত অর্থের চেয়ে কম ব্যয় হয়ে থাকলে অবশিষ্ট অর্থ ফেরত দিতে হবে না।

আবাসন খাতে বেনিফিট, জিএসটি ক্রেডিট বাড়ানো

লিবারেল সরকার জীবনযাত্রার ব্যয়ের কারণে হিমশিম খাওয়া কানাডার ১৮ লাখ ভাড়াটিয়ার জন্য আবাসন বেনিফিট একবার বাড়ানোর লক্ষ্যেও একটি আইন পেশ করেছে।

২০,০০০ ডলারের কম আয় করেন এমন ব্যক্তি এবং ৩৫,০০০ ডলারের কম আয় করেন এমন যেসব পরিবার তাদের কর পরিশোধের পর সমন্বিত প্রকৃত আয়ের অন্তত ৩০ শতাংশ যদি বাড়িভাড়া খাতে ব্যয় করেন তাহলে তারা আবাসন সুবিধার আওতায় এককালীন ৫০০ ডলার পাবেন।

সি-৩১ শিরোনামের খসড়া আইন পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়ামাত্রই কানাডীয়রা দাঁতের চিকিৎসা ও আবাসন খাতের এসব সুবিধার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এছাড়া লিভারেল সরকার সি-৩০ শিরোনামে আলাদা খসড়া আইন পার্লামেন্টে পেশ করেছে। এই আইনের আওতায় বর্তমানে জিএসটি ক্রেডিট সুবিধা লাভকারী এক কোটি ১০ লাখ কানাডীয় আর্থিক সুবিধা পাবেন।

এর অর্থ হলো, এর আওতায় চলতি বছর কোনও একক ব্যক্তি অতিরিক্ত ২৩৪ ডলার, শিশুসহ দম্পতি ৪৬৭ ডলার এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা ২২৫ ডলার করে অতিরিক্ত অর্থ পেতে পারেন।