মহামারির ফলে নগর ত্যাগের জোয়ারে আরও বেশি মানুষ টরন্টো, মন্ট্রিল ছেড়ে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র জনপদে চলে যাচ্ছে

সরকারি তথ্যে দেখা যায়, গত বছরখানেকের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ কানাডার দুটি বৃহত্তম শহর ছেড়ে গেছে

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কোভিড-১৯ মহামারির দ্বিতীয় বছরে কানাডার শহরগুলো থেকে চলে যাওয়া মানুষের ঢল আরও বেড়েছে। বৃহস্পতিবার সরকারি তথ্যে বলা হয়, হাজার হাজার মানুষ টরন্টো ও মন্ট্রিল ছেড়ে অপেক্ষাকৃত ছোট শহরে অথবা পল্লী এলাকায় চলে যাচ্ছে। খবর সিবিসি নিউজের। রিপোর্ট করেছেন থমাস রয়টার্স।

২০২০ সালের মাঝামঝি থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ টরন্টো ছেড়ে অন্টারিও প্রদেশের অন্যান্য স্থানে চলে গেছে। এই সংখ্যা এর আগের এক বছর সময়কালে টরন্টো ছেড়ে যাওয়া মানুষের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার জনমিতির তথ্য অনুযায়ী, আরও ৬,৬০০ মানুষ এই প্রদেশ ছেড়ে অন্য প্রদেশে চলে গেছে।

টরন্টোতে মাস্ক পরা মানুষদের দেখা যাচ্ছে। ২০২০-এর মাঝামাঝি থেকে ২০২১-এর মাঝামাঝি সময়ে ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ কানাডার বৃহত্তম শহর টরন্টো ছেড়ে অন্টারিও প্রদেশের অন্যান্য এলাকায় চলে গেছে। এই সংখ্যা এর আগের এক বছর সময়কালে টরন্টো ছেড়ে যাওয়া মানুষের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার জনমিতির তথ্য অনুযায়ী, আরও ৬,৬০০ মানুষ এই প্রদেশ ছেড়ে অন্য প্রদেশে চলে গেছে। ছবি : ইভান মিৎসুই / সিবিসি

কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মন্ট্রিলের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ কুইবেক প্রদেশের অন্য জায়গায় চলে গেছে। মন্ট্রিল ছেড়ে যাওয়া মানুষের এই সংখ্যা এবছর ৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়াও কুইবেক ছেড়ে অন্য প্রদেশে চলে গেছে আরও ৩,৬০০ মানুষ।

কোভিড-১৯ মহামারি এবং অফিসের বাইরে থেকে কাজের সুযোগ বেড়ে যাওয়ায় হাজার হাজার কানাডীয়কে ব্যয়বহুল বৃহৎ শহর ছেড়ে ছোট শহর, কটেজ টাউন ও উপকূলীয় এলাকায় অধিকতর প্রশস্ত ও অপেক্ষাকৃত সস্তা ঘরবাড়ি খোঁজার দিকে ঠেলে দিয়েছে।

এটি সারাদেশে আবাসন খাতের হঠাৎ রমরমা হয়ে উঠতে সহায়ক হয়েছে। নগর কেন্দ্রের চেয়ে নগর উপকণ্ঠে এবং ছোট শহরে বাড়িঘরের দাম দ্রুত বাড়ছে। এর ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, স্থানীয় মানুষেরা হয়তো দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে পারবে না এবং পৌরসভার পরিষেবায় বাড়তি চাপ পড়বে।

কানাডার সর্বত্র এখন একটি সাধারণ বাড়ির গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৭৮০,৪০০ ডলারÑ যা ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় ৩৪ শতাংশ বা কার্যত ২০০,০০০ ডলার বেশি।

মানুষের এই বহির্মুখি ঢলের বেশ ভালো সুবিধা পেয়েছে আটলান্টিক কানাডা। ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত হ্যালিফ্যাক্সে এসে যোগ হয়েছে ৬,০০০-এরও বেশি মানুষ। এদের বড় সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এসেছে অন্য প্রদেশ থেকে।

কুইবেকের পল্লী এলাকাতেও মানুষের আকস্মিক জোয়ার এসেছে। প্রধানত ফরাসীভাষী এই প্রদেশের পল্লী এলাকায় যোগ হয়েছে নগর কেন্দ্র থেকে আসা ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।

টরন্টোর চারপাশের যে অঞ্চলটি গোল্ডেল হর্সশু নামে পরিচিত সেখানকার শহরগুলোতেও প্রচুর মানুষ আসছে। টরন্টোর বাসিন্দারা শহর ছাড়তে থাকায় ওশাওয়া শহরে যোগ হয়েছে ৮,০০০ মানুষ। আর হ্যামিল্টন ও সেন্ট ক্যাথারাইন্স শহরের প্রতিটিতেই যোগ হয়েছে প্রায় ৫,০০০ করে মানুষ।