প্রবাসে পরহিতকর্ম -৯২

ইউরোপের পথে পথে

(পূর্ব প্রকাশের পর)

সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক দৃশ্য। ছবি: লেখক

ছোট্ট একটি দেশে। অথবা বলা চলে একমুঠো স্বর্গ। যে দিকে চোখ যাবে এক অভূতপূর্ব সৌন্দর্য্যরে হাতছানি। এই সৌন্দর্য্যরে অপার মহিমায় কেমন যেন একটি বোবা অনুভূতি গ্রাস করে। কিছু কিছু অনুভূতিতে মানুষ স্তব্ধ হয়ে যায়। আমি নিজেই টের পাচ্ছিলাম। আমি ইউরোপের যতগুলো দেশ ঘুরেছি, সব থেকে কম ছবি তুলেছি সুইজারল্যান্ডে। কারণ আর কিছু নয়। আমার অনুভূতিকে প্রবল ভাবে এর সৌন্দর্য আচ্ছন্ন করে রেখেছিল। তবে দেশটি ছোট। এবং এই দেশের শহর থেকে গ্রামের সৌন্দর্য্যরে পার্থক্য এত বেশী যে চিন্তাই করা যায় না।

দেশটির চারপাশে ঘেরা পাহাড়। আর অজশ্র লেকের সম্ভার। এবং পাহাড়ের ভাজে ভাজে একটার পর একটা  ঝর্ণা। কোনটা চিকন, কিন্তু তীব্র গতি। কোনটা শান্তভাবে নেমে যাচ্ছে পাহাড় থেকে নীচে। এবং মজার ব্যাপার, পাহাড়ের রঙগুলো আজব। একটির সাথে অন্যটির কোনই মিল নাই। যাদের নেশা পাহাড়ে উঠা  (ট্রেকিং বা হাইকিং করা) তাদের জন্য অসম্ভব সুন্দর দেশ সুইজারল্যান্ড। কারণ এখানে নানা বর্ণের এবং নানান সাইজের পাহাড় আছে। এরা দাবী করে পৃথিবীর সুউচ্চ পর্বত রাশি এখানে। যদিও এটা ভুল তথ্য। সেটা নেপালের হিমালয় পর্বত। তবে ইউরোপের মধ্যে বৃহৎ এই শিখর, তাতে কোন সন্দেহ নাই। এর উচ্চতম শিখরটি হলো ৪,৬৩৪ মিটার (১৫,২০৩ ফুট)। দেশটি সর্বোচ্চ এই পর্বতটি ‘Monte Rosa’য় অবস্থিত। এটির অবস্থান সুইজারল্যান্ডের পূর্বদিকে। এবং এটাই এই দেশটির সর্ববৃহৎ টুরিষ্ট স্পট।

যাইহোক, আমাদের লক্ষ্য ছিল ‘জুরিখ’ সেন্টারে। আমাদের স্টপেজ এলে নেমে পড়ি। আমরা নামতেই দেখতে পেলাম বেশ অনেক মানুষের ভীড়। হাটছে একই দিকে। আমরাও তাদের সঙ্গ নিলাম। হাফ ব্লক দূরেই অনেক বড় একটা হলে, এই মেলা হচ্ছে। প্রতি বছর হয়। আসলে এটা ‘ক্রীসমাস’ উপলক্ষ্যে প্রতি বছর হয়। সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন সিটি বা গ্রাম থেকে মানুষ আসে (স্থানীয়রা) তাদের সম্ভার নিয়ে। বিশাল একটি হল, তার চারপাশে গেট। এক একটি পরিবার ভিত্তিক স্টল বসেছে। চারপাশে বিভিন্ন ধরণের সম্ভার। মাঝখানে খাবারের দোকান। কি নাই সেখানে? ছোট ছোট অপেন স্টল গুলো। সবথেকে বেশী যেটা আমাকে আকৃষ্ট করলো, সেটা হলো ওদের পোষাক। স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব পোষাক পরিহিত। কি যে সুন্দর লাগছে। প্রায় প্রতিটি জিনিষ হাতে তৈরী। দারুন সুন্দর। একটি দোখানে হাতের তৈরী নানান রকম গহনা। একটি কানের দুল খুব পছন্দ হলো। দাম বললো ১২৫ ফ্রাঙ্ক। বাপরে মাথা ঘুরে গেলো। চকলেটের দোকানটি দারুন মন কাড়া। ফুল, পাখী, বিভিন্ন রকম পশু। বিভিন্ন মানুষের মূর্তি। সবই সুন্দর ট্রান্সপারেন্ট প্লাস্টিকের বাক্সে বন্দি। দাম যদিও খুব চড়া। তবু একটি কিনে মাহিনকে উপহার দিলাম। চকলেটের বার ছিল নানা টেস্টের। ওখান থেকে ২/৩টা নিলাম। খুউব সুন্দর। তারপর রাত প্রায় ৮টা বাজে দেখে দ্রুত ফিরে যাবার তাড়া লাগালো রায়হান। কারণ হোটেলের ডাইনিং বন্ধ হয়ে যাবে ১০টার মধ্যেই।

টুয়েলভ সেঞ্চুরীতে Grossmunster নামের এই চার্চটি নির্মান করা হয়। শব্দটির ইংরেজী অর্থ গ্রেট মিনিস্টার। ছবি: লেখক

মাহিন বেশ ভালই শপিং করলো। আমাকে বহুবার বলা সত্বেও আমি কিছুই কিনলাম না। আমি বহুকাল থেকে ট্যুর করছি। আমি জানি সব কিছুরই একটি রুলস আছে। ভ্রমণের প্রথম শর্তই হলো, শপিং না করা। বিশেষ করে যখন আপনি চিন্তা করবেন, একসাথে অনেকগুলো শহর বা দেশ দেখবেন। কারণ শপিং করতে গেলে আপনার ব্যাগের বোঝা ক্রমশই বেড়ে যাবে এবং আপনি নিজেই আর কমফোর্ট ফিল করবেন না।

যাক, আমরা গিয়ে দেখি ডাইনিং খোলাই ছিল। খুব মজা পেলাম। সুইজারল্যান্ডের ‘ক্রাউন প্লাজা’তে একটা মজার ব্যাপার দেখলাম, যেটি আমি সৌদিতেও দেখেছি। ওরা ডিম ওমলেট করে দিচ্ছে গরম গরম। ইটালিতে এটা ছিল না। এবং এটা দেখলে আমার স্বামী কাজিম খন্দকার অবশ্যই খাবে। এমনিতেই এখানে খাবারের অপশন ভালই ছিল। আমরা যেহেতু মাংশ জাতীয় খাবার খাবো না, তাই ডিমটাকেই প্রাধান্য দিলাম। আমার অবশ্য চিজ হলে আর কিছু লাগে না।

খাবারের পর হোটেলের বাইরে একটি হাটতে বের হলাম। যদিও প্রচন্ড ঠান্ডা এখন। ডিসেম্বরের শেষ দিকে। তবু কেন জানি সুইজারল্যান্ডের বাতাসে কানাডার মত তীব্রতা ছিল না। অথবা হতে পারে প্রচন্ড ভাল লাগা। যার কারণে সবকিছু অগ্রহ্য করা যায়।

পরদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জুরিখ সিটি ট্যুর। আমাদের ঐ অফিসের সামনে যাওয়া লাগবে। তাই রায়হান তাড়া লাগালো, জলদি ঘুমাও। ৫টার মধ্যে উঠতে হবে। কাজিম আর রায়হান এক রুমে। আমি আর মাহিন অন্য রুমে।

যদিও জলদি করে ঘুমানোর তাড়া ছিল। কিন্তু মাহিন…। সেই ২০০৯ সালে শেষ দেখেছিলাম। এর মধ্যে আটলান্টিকের পানি কতটা গড়িয়েছে, তাই না? মাহিনের জীবনের উপাখ্যানের কত যে রঙ বদলেছে। কতটা চড়াই উৎরাই ঐ টুকুন জীবনে তাকে পার হতে হয়েছে। আমার মাথা ফেটে যাচ্ছিল ওর কথা শুনতে শুনতে। মানুষের জীবনের সুখের অংশ শুনতেই আমার ভাল লাগে। দুঃখ গুলো আর নিতে পারি না। রাত তিনটা পর্যন্ত সেই নিদারুন দুঃখের পাঁচালী শুনতে হলো। তবু কি শেষ হলো? মোটেই না। তবু ঘুমাবার জন্য লেপের মধ্যে মুখ ডুবালাম। কিন্তু ততোক্ষনে আমার ঘুম পালিয়েছে।

তবু সকাল ৭টার মধ্যে সবাই নীচে নেমে এলাম। দেখলাম এই মাত্র রেস্টুরেন্ট খুলেছে। এত ভোরে খেতে পারি না। আমি ১টা চিজ ওমলেট এবং ১টা কফি খেলাম। ওরা সবাই ভালই খেলো।

জুরিখে ক্রিসমাস ডেকোরেশন। ছবি: লেখক

মোটামুটি পৌনে নয়টার মধ্যেই আমরা পৌঁছে গেলাম। এরই মধ্যে ৭/৮টা পরিবার এসে গেছে। আর দুটি পরিবার আসেনি। তাদের জন্য ১৫ মিনিট লেট হলো। যাইহোক, খুব ভাল একজন গাইড ছিলো। বেশ ঝরঝরে ইংরেজীতে কথা বলছিল। মোটামুটি সুইজারল্যান্ডের মানচিত্র, আবহাওয়া সম্পর্কে ছোটখাট একটা ধারণা দিয়ে দিল। এবং জানালো, এই দেশটির প্রতিটি শহরই কোন না কোন কারণে বিখ্যাত। তার মধ্যে জারমেট এবং আরো দুটি শহরে বিদেশী কোন যানবাহনকে ঢুকতে দেয়া হয় না। এমনকি এই দেশের ভিতরের কোন গাড়ি, ট্রাক ইত্যাদিকেও এলাউ করা হয় না। আমি বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে পড়লাম। আমরা বেশ কয়েকজন দাবী করলাম আমরা ঐ রকম কোন একটা শহরে যেতে চাই। ড্রাইভার বললো, এখন ডিসেম্বর মাস, আবহাওয়া খুবই খারাপ। তাই যাওয়া সম্ভব নয়। জারমেট শহরই জুরিখ থেকে সবচেয়ে কাছের শহর। কিন্তু সেটাতেও এখন যেতে গেলে ৪/৫ঘন্টার মত লাগবে। হাইওয়ে ২/৩ বার পরিবর্তন করতে হবে। যাইহোক আমরা সময় শুনে সবাই ক্ষান্তি দিলাম।  কারণ তাহলে অন্য কিছুই আর দেখা হবে না। প্রথমে আমদের শহরের মধ্যে খুব সুন্দর জায়গাগুলো ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখালো। বাড়ি-ঘর দেখার মত কিছু না। গোটা ইউরোপে মনে হয় প্রায় কপি পেস্ট। জার্মানে একটু আলাদা। মনে হয় শত শত বছরের পুরানো সব বাড়ী দাড়িয়ে আছে। যদিও সব বাড়ী কিন্তু শত বছরের পুরানো নয়। এর মধ্যে বেশীরভাগই নতুন। তবে একই মডেলে করা।

আগেই বলেছি গোটা দেশটি ঘিরে আছে পাহাড় এবং নদী -নালা। আর একটু পর পর দেখা যাবে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরনা। এতটাই মোহিত হয়ে ছিলাম যে, সত্যি বলতে আমি নিঃশ^াস বন্ধ করে দেখছিলাম। ছবি তুলতে ভুলে যাচ্ছিলাম। কখোন জানি বাসটা থেমেছে, খেয়ালই করিনি। সবাই ধীরে সুস্থে নামছে। দেখলাম বিশালাকায় অতি মনোরম একটা চার্চের সামনে এসেছি। নামটি একটু বিদঘুটে- ‘Grossmunster’ (এটি জার্মানির উচ্চারনে)। এটি খ্রীষ্টানদের মধ্যে প্রটেস্টান গ্রুপের সদস্যদের একটি ল্যান্ডমার্ক চার্চ। জুরিখের একটি বিখ্যাত চার্চ। সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বিখ্যাত ৪টি চার্চের মধ্যে এটি অন্যতম। এর আর্কিটেকচারাল ডিজাইনে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এর বাইরের রঙ এবং ডিজাইনে আপনি এতটাই মুগ্ধ হবেন যে, ভেতরে আর যেতে ইচ্ছে করবে না। চার্চটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একটি নদী। এবং মিনারের উপরের বল গুলো সব ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী সোনালী বর্ণের। ছাই ছাই এবং বেজ বর্ণের সাথে সোনালীটা যেন দিগন্ত আলো করা একটি সকাল।

এটা রোমানিয়ান স্টাইলে ডিজাইন করা। এর আর্কিটেকচার দুজন হলেন, Heinrich Bullinger এবং Conrad Gessner। টুয়েলভ সেঞ্চুরীতে এই চার্চটি নির্মান করা হয়। Grossmunster শব্দটির ইংরেজী অর্থ গ্রেট মিনিস্টার। এটি জুরিখের একটি ঐতিহ্যবাহী ল্যান্ডমার্ক। এটির টাওয়ার মূলত দুটি। এই টাওয়ারের উপরে উঠতে গেলে ১৮৭টি সিড়ি বাইতে হয়। এবং এই ১৮৭টি সিড়ি পেরিয়ে একবার যদি উপরে উঠতে পারেন তবে কেল্লাফতে। তাহলে বাসে করে জুরিখ শহর দেখতে হবে না। গোটা শহরটাই এর উপর থেকে দেখা যায়। অল্প বয়সী টগবগে কিছু তরুণ-তরুণী ওখানে চড়ার জন্য লাফালাফি করছিল। কিন্তু আমাদের গাইড মানা করলো। কারণ সময় নষ্ট হবে অনেক। এবং আমাদের নষ্ট করার মত সময় নাই।

এই চার্চটি শুরু হয়েছিল ১১০০ তে, তবে এর উদ্বোধন হয়েছিল ১২০০ এর দিকে। চর্চটি আমার দৃষ্টি কেড়েছিল এর রঙের সমাহার। সম্ভবত ৫/৬টি

রঙের পর পর সেড দেওয়া। ইউরোপের বৃহৎ চার্চ গুলোর মতই এখানেও দুইজন বিখ্যাত Saint এর সমাধি আছে।

আমি ঘুরে ঘুরে বাইরের দৃশ্যটা দেখেই মুগ্ধ হলাম। ভেতরে আর প্রবেশ করলাম না। পরে অবশ্য করেছিলাম। একটু পরই গাইড তাড়া লাগালো বাসে উঠতে। আমি বাসের আশেপাশেই ছিলাম। কিন্তু সবাই তখনও ভেতরে। আমাদের তিনজনও ভেতরে। ভেতরে অসাধারণ আর্ট। অনেকটা আমাদের অটোয়ার চার্চটির মত। খুবই সুন্দর। ওয়াল পেইন্টগুলো দেখার মত। পাথরের ওয়াল। ১০০০/১১০০ বা ১২০০ সেঞ্চুরীর যতগুলো চার্চ দেখলাম আমার কাছে প্রায় একরকম মনে হয়েছে। তবে আগেই বলেছি, Grossmunster খুব কালারফুল একটি চার্চ। কি ভেতরে, কি বাইরে। তবে সকলের চোখের সৌন্দর্যবোধ একরকম হয় না। আমি প্রথম কোন র্চার্চের বাইরের সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে গেলাম।

পাশের নদীর পানির স্বচ্ছতা দেখে আমি শুধু মুগ্ধ নই, আমি আবিষ্ট হয়ে গেলাম। নীলের মধ্যে একটু কালচে। পানিটা টলটলে। আমরতো পানি দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তে ইচ্ছে করে।

দুজন নাকি সেই বিখ্যাত সিড়ি বেয়ে উপরে উঠেছে। ১৮৭ টি ধাপের সিড়ি। গাইড এ কথা শুনে খুবই আপসেট হয়ে পড়লো। কি আর করা যাবে। একসাথে ট্যুরে বের হলে এই ঝামেলা। প্যারিসে আমরা দুই ফ্যামিলি মিলে ট্যুর করেছিলাম। খুব বেশী ঝামেলা হয়নি। কিন্তু সুইজারল্যান্ডে সেটা সম্ভব নয়। সব কিছু খুব চড়া। তারপর এখনও Interlaken এর মেইন ট্যুরটা বাকি আছে। জুরিখ ট্যুরটা যেমন, যে টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছি তার মধ্যেই সব কভার করছে। কিন্তু Interlaken এর সবটা কভার করে না। যেখান থেকে আমরা টিকিট কেটেছি, ওরাই বলে ছিল। আমরা যারা ট্যুরিস্ট এখানে, বেশীর ভাগই দেখলাম, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের। আমরাই শুধু নর্থ আমেরিকান।

আমার পাশেই ডেভোরা নামের একজন দাঁড়িয়ে ছিল। সে ছিল অরিজিনাল রাশিয়ার। কিন্তু সেটেল্ড ফ্রঙ্কফুটে। খুব ভাল মানুষ। একাই বেরিয়েছে। বেশ সুন্দর ইংরেজী বলে। আমাকে বললো, সে এবার নিয়ে ২২/২৩ বার সুইজারল্যান্ডে এসেছে। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম সব থেকে বেশী কোন সিটি ভাল লেগেছে? সে বললো, আমি প্রতিবারই আসি Interlaken দেখবার জন্য। সে নাকি সামার ও উইন্টার দুই সিজনেই আসে। তবে তার নাকি এ দেশটা উইন্টারেই ভাল লাগে। আমি বললাম তোমার কাছে Zermatt শহরটা কেমন লেগেছে? বললো, ভাল। তবে খুব বেশী বৈশিষ্ট্য পূর্ণ নয়। একমাত্র ঐ কৌতুহল থেকেই যাওয়া, যে যানবাহন ছাড়া কিভাবে তারা চলে? আমি বললাম কিভাবে? বললো- বাইরের সব ট্রাক, গাড়ীর জন্য ওদের শহরে ঢোকার পাশেই পার্কিং লট আছে অনেক বড়, ৩/৪টা। ওখানেই সবাই গাড়ি পার্ক করে যায়। নদী বেষ্টিত শহর। অবশ্যই পলিউশন মুক্ত। তবে অসুস্থ এবং বৃদ্ধদের জন্য ‘টমটম’ টাইপ কিছু আছে। ঘোড়ার গাড়ী। শুধু শহরের জরুরী কাজের জন্য কিছু ট্রাক আছে। তবে দেখতে অন্যরকম। শহরের মানুষগুলোও সবাই স্থানীয়। সবাই পায়ে হেটেই কাজ সারে।

যাইহোক এবারে আমার যাওয়া হলো না। গোটা এক মাসের ট্যুর একটি দেশে করলে, সেটি সম্ভব। তবে সেভাবে পৃথিবী ভ্রমণ করা আসলে যায় না। তবে আমি ভারত ভ্রমণ ঐ ভাবেই করেছিলাম। আমি ওখানে সিটি টু সিটি ঘুরেছিলাম পাঁচ বছরে।

সুইজারল্যান্ডে সেটা সম্ভব নয়। মাত্র ৬ দিনে (যাওয়া আসা নিয়ে) কতটাই বা দেখা সম্ভব। এক জীবনে সব কিছু দেখা যায় না। তবে যা দেখেছি সেটাই কি কম কিছু? (চলবে)

রীনা গুলশান। টরন্টো।

gulshanararina@gmail.com