দাত ও চোখের চিকিৎসার জন্য সরকারি পরিষেবার আওতাবহির্ভূত কর্মীদের জন্য নতুন “স্থানান্তরযোগ্য বেনিফিট”
অন্টারিও সরকার বলছে, স্বাস্থ্য, দন্ত ও চোখের চিকিৎসার সরকারি পরিষেবার আওতাবহির্ভূত কর্মীদের জন্য তারা একটি নতুন “স্থানান্তরযোগ্য বেনিফিট” পদ্ধতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এ কর্মসূচি কীভাবে কাজ করবে সেই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলি – যেমন এতে কীভাবে তহবিল আসবে এবং কারা এর তত্ত্বাবধান করবেন – তা নিয়ে আগামী মাসগুলোতে গবেষণা করা হবে।
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : অন্টারিও সরকার স্বাস্থ্য, দন্ত ও চক্ষুচকিৎসার সরকারি পরিষেবার আওতাবহির্ভূত শ্রমিকদের জন্য একটি “স্থানান্তরযোগ্য বেনিফিট” পদ্ধতি প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির আওতায় কোনও শ্রমিক চাকরি পরিবর্তন করলে তার আগের কর্মস্থলে প্রাপ্য বেনিফিটও নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত হবে। – মহামারির কারণে চাকরি ব্যাহত হওয়ার বিষয়টির সুরাহা করতে সরকারিভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে এই ধারণা কার্যকরের সুপারিশ করেছে। খবর দি কানাডিয়ান প্রেস এর।
খণ্ডকালীন চাকরিজীবী, খুচরা বাজার ও সেবাদান সংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত সেইসব কর্মী যাদের কোনও বাড়তি বেনিফিট নেই তাদের এবং যারা কর্মজীবনে চাকরি পাল্টান তাদের প্রতি লক্ষ্য রেখেই এই কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে।
শ্রমমন্ত্রী মন্টি ম্যাকনাউটন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটি হলো তুলাদণ্ডে ফের ভারসাম্য আনা এবং শ্রমিকদের মধ্যে কর্মজীবন সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় আস্থা সৃষ্টি করার বিষয়।”
“এই কর্মসূচি হলো, শ্রমিকরা যাতে নিজেদের এবং তাদের সন্তানদের সুন্দর জীবন গড়ে তোলার জন্য আরও বেশি অর্থ পায়, কর্মস্থলে অধিকতর সুরক্ষা ও সুযোগ-সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা।”
ম্যাকনাউটন বলেন, এই কর্মসূচি কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলি Ñ যেমন, এতে তহবিল কীভাবে আসবে এবং কারা এর তত্ত্বাবধান করবেÑ তা নিয়ে আগামী মাসগুলোতে গবেষণা চালানো হবে।
শুরুতে সরকার পাঁচজনের মত সদস্য নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল নিয়োগের কথা ভাবছে। কর্মসূচিটি কীভাবে সবচেয়ে ভালোভাবে পরিচালনা করা যায় এবং কীভাবে বেনিফিটের সুবিধা “শ্রমিকের সঙ্গেই থাকতে পারে” এই প্যানেল সেসব বিষয়ে দেখবে। প্যানেল সদস্যরা হবেন বেনিফিট সম্পর্কিত পরিকল্পনা এবং আর্থিক ও কর্মস্থলের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।
ম্যাকনাউটন বলেন, সামনের সপ্তাহগুলিতে এই প্যানেল সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তারা চাকরিদাতা, শ্রমিক নেতা, শ্রম ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগামী মার্চে কাজ শুরু করবেন। আগামী জুনে প্রাদেশিক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার পরই জুলাইয়ের মধ্যে এই প্যানেলের আন্তর্বর্তী রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই রিপোর্টে প্যানেলের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশমালা পেশ করা হবে।
ম্যাকনাউটন বলেন, তিনি চান, এই কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূক্ষ্ম জটিল দিকগুলি খুঁজে বের করার জন্য সময় দেয়ার পাশাপাশি এটি “যত দ্রুত সম্ভব” জনগণের কাছে নিয়ে যেতে। তিনি বলেন, কনজারভেটিভ দলের প্রগতিশীল সরকার সরকারি পরিষেবার আওতাবহির্ভূত শ্রমিকদের সুবিধা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, তিনি মনে করেন, এই পরিকল্পনা শ্রমিকদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে অন্টারিওকে প্রতিযোগিতায় সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে।
সরকার জানায় যে, অন্টারিওতে যেসব কর্মী পূর্ণকালীন স্থায়ী চাকরিতে নিয়োজিত তাদের বেশিরভাগেরই স্বাস্থ্যবিমা আছে এবং তারা দন্ত পরিষেবার আওতাধীন। কিন্তু খণ্ডকালীন অথবা অনিশ্চিত চাকরিতে নিয়োজিত জনগণের এক-চতুর্থাংশের কম সংখ্যক মানুষই এ ধরণের সরকারি পরিষেবার আওতায় আছে। প্রাদেশিক সরকার জানায়, যারা স্বল্প বেতনের কাজ করে, নবাগত কিংবা অপেক্ষাকৃত তরুণ তাদের কর্মক্ষেত্রে সুবিধা পাবার সম্ভাবনাও কম।
প্রাদেশিক সরকারের হিসাবে লাখো শ্রমিক স্বাস্থ্য ও অন্য সুবিধার আওতার বাইরে রয়েছে
ম্যাকনাউটন বলেন, বর্তমানে লাখো শ্রমিক স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সুবিধার আওতার বাইরে রয়েছে এবং সরকার এই ব্যবধান ঘোচাতে চায়।
স্থানান্তরযোগ্য বেনিফিটের পরিকল্পনা হলো গত বছরের শেষের দিকে অন্টারিওর শ্রমশক্তি পুনরুদ্ধার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রকাশিত চূড়ান্ত রিপোর্টে পেশ করা ২১ দফা সুপারিশের একটি।
ম্যাকনাউটন বলেন, বেনিফিট সম্পর্কিত কর্মসূচি তার এই মুহূর্তের শীর্ষ অগ্রাধিকার, তবে তিনি পর্যায়ক্রমে রিপোর্টের অন্য সুপারিশগুলোও বাস্তবায়ন করবেন।