আত্মসমর্পন
রোজানা নাসরীন
মন-শিশু দুরন্ত পায়ে ছুটে আসে
অবুঝ সবুজের ধারে;
বিস্ময় পাখা মেলে নিষ্ক্রান্তÍ দৈন্যে।
পুন্যতোয়া উচ্ছ্বাসে নৈর্ব্যক্তিক যোজনা,
সাদা বকেদের অফুরান উল্লাস,
ছিড়ে ফেলে দিতে চায় নেপথ্য পুরাণ।
আমি আর যাবনা ফিরে কোনদিন-
শহর,অট্টালিকা,সেতু, ষ্টীম ইঞ্জিনের ঝঞ্জাটে,
ধস ধস রেলের আওয়াজ-
বৈদ্যুতিক ঝলকানিতে প্রাণফাটা হট্টগোল,
অফিস ও বাড়ির মাঝখানে প্রাণহীন প্রতিযোগিতা,
সব কিছু ফেলে এসে আমি মিশে যাবো
অনিন্দ্য অরন্য-সবুজ ঘনত্বে;
যেখানে পাখীরা ডেকে এনেছে চাতক অহনা থেকে উদাস বিকেল
ধবল বকেরা লিখেছে নতুন জন্মের গীতি কবিতা
যৌবনের পাণ্ডুলিপি ভরে উঠেছে নিয়মহীন চপলতায়,
নিকট আত্মিয়ের মত-
উদার প্রান্তর ছুঁয়ে চুম্বন করে থাকে বিশ্বস্ত হ্রদ,
নুয়ে আছে পাহাড়ের অতন্দ্র আবেগ,
আমার একাল সেকাল ছুঁয়ে রাত আসে
সবুজের প্লাবনে,মাঝে মাঝে জোনাকী তারা,
আদুরে প্রেয়সীর মত,মাতাল কবির কাছে।
হৃদয় প্রান্তরে ফুটে ওঠে ম্যাগনোলিয়ার অনিন্দ্য দীপ্তি
যেন বিশ্বভরা আনন্দ তরঙ্গ ছুটছেতো ছুটছে-
আমি অন্তরের গহীন অন্ধকার থেকে তুলে আনি
লুকিয়ে থাকা আমি সত্তাটিকে
কালের কাব্য পাশে পাশে অস্তিত্বের সাধ জাগায়,
আমার কানে কানে কথা বলা নদীর জলতরঙ্গ
পানকৌড়িরা ডুব-সাঁতারে মেতে ওঠে,
ওদের সুখের তুফানে তরঙ্গ তোলে
আমার জীবনভর বয়ে আনা বিষাদ যমুনা
মনে হয় এ ভীষন আত্মসমর্পন!
রোজানা নাসরীন
টরন্টো