বার্ষিক আয় ৭৫,০০০ ডলার হলেও কি টরন্টোতে একটি বাড়ির মালিক হতে পারবেন?
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ০১ নভেম্বর ২০২১ : টরন্টোতে একটি বাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন হাজারও মানুষ। কিন্তু এই স্বপ্ন দিনের পর দিন আরও বেশি অধরা হয়ে পড়ছে। কারণ টরন্টো শহরে একটি বাড়ির গড় মূল্য এখন ১০ লাখ ডলারের বেশি। ফলে বাড়ি কেনার অপেক্ষায় থাকা অনেকেই এখন হতাশ হয়ে ভাবছেন, এই স্বপ্ন কি কখনও বাস্তবে পূরণ হবে?
টরন্টোর সিটিভি নিউজ চলতি সপ্তাহে প্রধান অর্থনৈতিক ভাষ্যকার প্যাট্রিসিয়া লোভেট-রেইডের কাছে জানতে চায়, একটি পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি যদি বছরে মোটামুটি ৭৫,০০০ ডলার আয় করেন তাহলে তার পক্ষে কখনও টরন্টোতে বাড়ির মালিক হওয়া সম্ভব কি?
মিজ. লোভেট-রেইড বলেন, “কঠোর বাস্তবতা” হলো, না।
লোভেট-রেইড বলেন, “টরন্টোতে বছরে ৭৫,০০০ ডলার আয় দিয়ে এটা সম্ভব না। যদি না আপনি বাবা-মার কাছ থেকে সত্যিই অর্থনৈতিক সহায়তা পান।”
তিনি বলেন, এমনকি ডাউন পেমেন্টের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ জোগাড় করতে সক্ষম হলেও ৭৫ হাজার ডলারের মত উপার্জনকারীকে দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য রীতিমতো লড়াই করতে হবে।
![](https://probashikantho.com/wp-content/uploads/2021/12/বাড়ি.jpg)
বাড়ির মর্টগেজের কিস্তি এবং সার্ভিস ফি পরিশোধ করার পর কারও পক্ষে সত্যিই “অঙ্কটা মেলানো সম্ভব হবে না।”
তিনি হিসাব করে দেখান যে, ১০ লাখ ডলারের একটি বাড়ি কেনার পর এ জন্যে যত রকমের সার্ভিস চার্জ দিতে হবে সেগুলি সচ্ছন্দে পরিশোধ করার জন্য আপনার আয় হতে হবে বছরে কমপক্ষে দুই লাখ ডলার।
লোভেট-রেইড বলেন যে, “অতি ক্ষুদ্র” আকারের একটি কন্ডো হয়তো কিনতে পারেন, কিন্তু তারপরও ৭৫ হাজার ডলারের আয়ে এটিও টানাটানির কারণ হবে।
তাহলে আপনি কী করবেন?
লোভেট-রেইড বলেন, যা কিছু করতে হবে তার পুরোটাই হলো আপস। তিনি বলেন, “আপনি এটা একবারেই পুরোপুরি পেয়ে যাবেন না।”
যারা বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, লোভেট-রেইড বলেন, তাদেরকে জানপ্রাণ দিয়ে অব্যাহতভাবে অর্থ সঞ্চয় করে যেতে হবে। পাশাপাশি তাদেরকে শহরের বাইরের এলাকায় বাড়ি খুঁজে নিতে হবে।
তিনি বলেন, “ভাড়া বাড়িতে থাকাও খারাপ কিছু না।” আর “‘বাজারে যে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে তার অর্থ হলো আমাকে সরে দাঁড়াতে হবে’ একথা বলার মধ্যেও ভুল কিছু নেই।”
‘আমার মনে হয়, এটি হলো একটি প্রাচীন বদ্ধমূল বিশ্বাস যেখানে বয়ঃপ্রাপ্ত হবার একটি দৃষ্টান্ত হলো আপনার একটি বাড়ি হওয়া। এটি এখন আর চলে না। বর্তমার শতাব্দীর প্রজন্ম যে পরিস্থিতির মুখোমুখি সেখানে ওটা আর বাস্তবসম্মত নয়।”
গত মাসে প্রকাশিত সিআইবিসির এক রিপোর্টে বলা হয় যে, কানাডীয় বাবা-মায়েরা বাড়ি কেনার জন্য তাদের সন্তানদের রেকর্ড পরিমাণ অর্থ দিচ্ছেন।
রিপোর্টে বলা হয়, গত বছর প্রথমবারের মত যারা বাড়ি কিনেছেন তাদের প্রায় ৩০ শতাংশই তাদের পরিবারের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়েছেন।
সিআইবিসি বলেছে, বাবা-মায়েরা সন্তানের বাড়ির ডাউন পেমেন্ট দেবার জন্য গড়ে ৮২,০০০ ডলার করে সাহায্য দিয়েছেন।
টরন্টোর আঞ্চরিক রিয়েল এস্টেট বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, নগরীতে গত সেপ্টেম্বরে বিক্রি হওয়া কোনও বিচ্ছিন্ন বাড়ির গড় দাম ছিলো ১৭ লাখ ডলার।
আধা-বিচ্ছিন্ন বাড়ি বিক্রি হয় গড়ে ১৩ লাখ ডলারে, যেখানে গায়ে গা লাগানো দুই বা তিন তলাবিশিষ্ট সারিবদ্ধ বাড়ি, যেগুলোকে বলা হয় টাউনহাউস, সেগুলির একেকটি ফ্লোরের গড় বিক্রয়মূল্য ছিলো ৯,৩০০০০ ডলার। সেপ্টেম্বরে একেকটি কন্ডো বিক্রি হয় গড়ে ৭,৪৪,৭৩০ ডলার দামে।