স্কারবরোতে গাড়ি চুরির অপরাধ চলছেই
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ০৬ আগস্ট ২০২১ : বৃহত্তর টরন্টো এলাকায় গাড়ি চুরি একটি চলমান সমস্যা। কিন্তু সম্প্রতি স্কারবরোতে গাড়ি চুরির ঘটনা লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে টরন্টোর পুলিশ বাহিনী এ বিষয়ে জননিরাপত্তা সম্পর্কিত সতর্কীকরণ জারি করেছে। রিপোর্ট করেছেন সিটিভি নিউজের প্যাট ফোরান।
গত এক মাসে স্কারবরোতে ৫০টিরও বেশি গাড়ি চুরি হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি ঘটনা ঘটেছে গত নয় দিনে হাইওয়ে ৪০১ এর খুব কাছের বিভিন্ন মহল্লায়।
টরন্টো পুলিশের গোয়েন্দা সার্জেন্ট জেসি ভ্যাননেস্ট শুক্রবার টরন্টোর সিটিভি নিউজকে বলেন, ‘আমরা জানি, গ্রেটার টরন্টোতে এটি একটি সমস্যা, কিন্তু নগরীর বিভিন্ন অংশে এটি যেন ঢলের মত হয়ে উঠেছে।’
পুলিশ বলছে, চোরেরা লেক্সাস আরএক্স৩৫০, টয়োটার এসইউভি-সমূহ এবং হোন্ডা সিআর-ভির মত লেটেস্ট মডেলের গাড়িকে নিশানা করছে।
পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় ধারণ করা সাম্প্রতিক কয়েকটি চুরির ঘটনার ভিডিওচিত্র প্রকাশ করেছে, যাতে দেখা গেছে, মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন কত সহজে এবং কত দ্রুত ড্রাইভওয়ে থেকে গাড়িগুলি চুরি হয়ে যাচ্ছে।
চোরেরা কোনও গাড়ির কমপিউটার সিস্টেম নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার জন্য ওই গাড়ির কি ফোব (শবু ভড়নং) বা দূরনিয়ন্ত্রিত চাবির প্রোগ্রাম জানতে বিশেষ ধরনের যন্ত্র বা ডিভাইস ব্যবহার করছে।
ভ্যাননেস্ট বলেন, ‘তারা যেটা করছে সেটা হলো, তারা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে এড়িয়ে যাবার জন্য নতুন একটি রিমোট কী-তে সংকেত পাঠাচ্ছে যার সঙ্গে গাড়ির কমপিউটার সাড়া দেবে। এই কাজটি মোটামুটি সাত মিনিটের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব।’
আসল নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জনৈক ক্লডিয়া বলেন, গত সপ্তাহে তার পরিবারের ফোর্ড এফ-১৫০ পিক-আপ ট্রাক চুরি হয়ে গেছে টরন্টোর ক্যাসিনো উডবাইন পার্কিং লট থেকে।
গাড়ির সঙ্গে ওই পরিবারের দামি কয়েকটি ফোন, শিশুদের বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং ক্যাম্পিং সরঞ্জামও খোয়া গেছে।
ক্লডিয়া বলেন, ‘আমার মাথা ঘুরে গেছে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না, ২০১৮ মডেলের এত বড় একটি দারুণ নীল ট্রাক চুরি করা এত সহজ এবং এত সহজে এটি নিয়ে চলে যাওয়া যায়।’
কানাডার ইস্যুরেন্স ব্যুরো বলছে, পুরো কানাডাতেই গাড়ি চুরি একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা।
ইন্স্যুরেন্স ব্যুরো অব কানাডার রব দি প্রুইস সিটিভি নিউজকে বলেন, ‘চুরি করা গাড়ির অনেকগুলোই দেশের বাইরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ভিআইএন (ভেহিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) পাল্টে ফেলা হয়। এরপর সেগুলো দেশের ভেতর অসন্দিগ্ধ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়।’
গাড়ি চুরি বন্ধের জন্য সেটি গ্যারেজে পার্ক করুন, বাড়তি অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করুন এবং ইউন্ডশিল্ডের নিচে ড্যাশবোর্ডে প্রদত্ত ভেহিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বরটি ঢাকার ব্যবস্থা করুন।
পুলিশ আরও বলছে, আপনি গাড়িতে একটি বাড়তি ট্র্যাকিং ডিভাইসও যোগ করতে পারেন। সেইসঙ্গে গাড়ির দূর নিয়ন্ত্রিত চাবিটি বাড়ির সামনের দরজার কাছে রেখে দেওয়াও বন্ধ করতে হবে।
এসব ব্যবস্থা নেয়ার পর তা হয়তো কিছুটা কাজে লাগবে, কিন্তু তারপরও কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না যে, চোরেরা আপনার গাড়ি চুরি করতে পারবে না।