টরন্টোতে স্বয়ংক্রিয় স্পিডিং টিকিট পেলেও তা গাড়িচালকের বীমা বা লাইসেন্সের ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের জন্য টরন্টোতে ৫০টি স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরা আছে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে এসব ক্যামেরার মাধ্যমে গাড়িচালকদের ৮০ হাজারেরও বেশি টিকিট ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা সবাই জানি চালকদের গতিসীমা লংঘন করা উচিৎ নয়, কিন্তু কেউ যদি টিকিট পেয়ে যায় তাহলে তার বীমার হার বা লাইসেন্সের কোনও ক্ষতি হবে কি?
টরন্টো সিটির পরিবহন বিভাগ এবং ইন্স্যুরেন্স ব্যুরো অব কানাডার (আইবিসি) নিয়ম অনুযায়ী এ ধরণের টিকিট পেলেও তা গাড়িচালকের বীমা বা লাইসেন্সের ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না। খবর সিটিভি নিউজের। রিপোর্ট করেছেন প্যাট ফোরান।
কারণ, ক্যামেরা শুধু গাড়ির লাইসেন্স প্লেটের ছবি নেয়, চালকের ছবি তোলে না। সুতরাং সীমা লংঘনের সময় চালকের আসনে কে ছিলো তা স্পষ্ট নয়।
আইবিসির পেট কারাগিওর্গোস (Pete Karageorgos) বলেন, ‘এই টিকিট চালকের পরিচয় প্রকাশ করে না, এর অর্থ হলো, এটি আপনার বীমার প্রিমিয়ামে কোনও প্রভাব ফেলবে না।’
আর এর ফলে কারো লাইসেন্সে কোনও ডিমেরিট পয়েন্টস (demerit points) যোগ হবে না। তবে কেউ যদি এই টিকিট এবং রেড লাইট থাকা অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার টিকিট পায় এবং জরিমানা পরিশোধ না করে তাহলে তার বীমা ও লাইসেন্সের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
কারাগিওর্গোস বলেন, ‘কেউ যদি জরিমানা উপেক্ষা করে এবং পরিশোধ না করে তাহলে লাইসেন্স নবায়নের সময় বিষয়টি সামনে আসতে পারে। আর তখনও যদি তা পরিশোধ করা না হয়, আর গাড়ির লাইসেন্স স্থগিত হয়ে যায় তাহলে তা বীমার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।’
টরন্টোর স্বয়ংক্রিয় গতি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি কার্যকর হয়েছে গত ১১ মাস ধরে। আর ক্যামেরা থেকে বেপরোয়া চালকদেরকে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার টিকিট ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নগরীর ভিশন জিরো কর্মসূচির অংশ হিসাবে ক্যামেরাগুলি বসানো হয়েছে স্কুল এবং সামাজিক নিরাপত্তা এলাকার কাছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ক্যামেরার কারণে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর পরিমাণ কমেছে এবং সড়ক নিরাপত্তা আরও বেড়েছে এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে।
টরন্টোর ট্রান্সপোর্টেশন সার্ভিসের পারমিট ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক ডেভ টোয়াডল বলেন, ‘কর্মসূচির আওতায় অন্য যেসব বিষয় রয়েছে তাতেও নিশ্চিতভাবে দেখা গেছে যে, গতিসীমা লংঘন এবং সংঘর্ষ ও প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা কমেছে।’
টিকিটে যে জরিমানা করা হয় তার পরিমাণ সব সময় একইরকম। বেপরোয়া চালনার জন্য পুলিশের হাতে ধরা পড়লে যেমনটা হয় তেমনই। জরিমানায় ভিক্টিম সারচার্জ এবং প্রশাসনিক চার্জ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
একজন দর্শক সিটিভি নিউজ টরন্টোকে বলেছেন, ৫০ কিলোমিটার গতিসীমার এলাকায় ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানোর দায়ে তাদেরকে ১৮০ ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
আরেকজন দর্শক রেড লাইট থাকা অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন ক্যামেরায় এমন ছবি তোলার পর তার জরিমানা হয়েছে ৩২৫ ডলার।
সামনে স্পিড এনফোর্সমেন্ট ক্যামেরা আছে এমন সাই বোর্ড সড়কে টাঙ্গানো আছে। আর এসব ক্যামেরা চালু আছে এমন সতর্কীকরণ সাইনও আছে।
কর্মকর্তারা বলেন, কেউ যদি টিকিট পাওয়া এড়াতে চায় সে যেন সড়কের নিয়মবিধি মেনে চলে।
টোয়াডল বলেন, ‘বেপরোয়া গাড়ি না চালালে কাউকে টিকিট ধরিয়ে দেয়া হবে না।’
সারা শহরে স্পিড ক্যামেরা বসানো হয়েছে প্রতি ওয়ার্ডে দুটি করে। মাঝে মাঝে সেগুলি বিভিন্ন অবস্থা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।