করোনার দিনগুলো
পৃথিবীতে থেকে এই মহামারি কি চলে যাবে!
জসিম মল্লিক
(সপ্তদশ পর্ব)
মহামারি করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল সন্ধানে চীনে আরও গবেষণা এবং ল্যাবরেটরিগুলো পরিদর্শন করতে চায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চলতি বছরের শুরুতে করোনার উৎপত্তিস্থল খুঁজতে চীনে প্রথম ধাপে তদন্ত করে সংস্থাটি। তবে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে তদন্তকাজ সে সময় থমকে যায়। খবর এএফপির। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস চীনে দ্বিতীয় ধাপে তদন্ত নিয়ে সংস্থাটির সদস্যদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। সেখানে তিনি পরের ধাপে তদন্তে পাঁচটি বিষয় অগ্রাধিকার দেওয়া প্রস্তাব করেন।
১৬ জুলাইয়ের বৈঠকে গেব্রেয়াসুস বক্তব্যের একটি অনুলিপি প্রকাশ করেছে ডব্লিউএইচও। সেখানে তদন্তে অগ্রাধিকারের প্রস্তাব পাওয়া বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এই এলাকার সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরি এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করতে হবে। তদন্তে এসব এলাকাকে প্রাধান্য দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া উহান ও এর আশপাশের পশুপাখির বাজারগুলোয় গবেষণা চালাতে বলা হয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে উহানে চার সপ্তাহ অবস্থান করে ডব্লিউএইচওর একটি তদন্তকারী দল। পরে মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা জানায়, ভাইরাসটি সম্ভবত বাদুড় থেকে অন্য পশুপাখির মাধ্যমে মানুষের শরীরে এসেছে। উহানের কোনো ল্যাবরেটরি থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে বলে দাবি করে আসছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞ। ওই ধারণা একেবারেই ‘অসম্ভব’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে তদন্তকারী দল। তাদের ওই মন্তব্য মানতে পারেননি যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা। তবে উহানের ল্যাবরেটরি থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার তত্ত্বকে ‘অযৌক্তিক’ বলে উড়িয়ে দেয় চীন। বিষয়টির রাজনৈতিকীকরণ করা হলে তদন্তকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে দেশটি।
এদিকে বয়স্ক ব্যক্তিদের মতো করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রমণের অতিঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের এই ভাইরাসের নানা ধরন থেকে সুরক্ষায় প্রতিবছরই টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রয়োজন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটির এক অভ্যন্তরীণ নথিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। খবর রয়টার্সের। ওই নথি দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নথিটি একটি প্রতিবেদনের অংশ। এ বিষয়ে টিকা বণ্টনের বৈশ্বিক জোট ‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’ এর বোর্ড সভায় আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ডব্লিউএইচওর করোনা টিকা কর্মসূচি কোভ্যাক্সের যৌথ নেতৃত্বে রয়েছে এ জোট। টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মডার্না ইনকরপোরেট ও ফাইজার ইনকরপোরেটের পাশাপাশি এটির জার্মান সহযোগী প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক জোরেশোরে বলে আসছে, উচ্চপর্যায়ের করোনা প্রতিরোধ সক্ষমতা (ইমিউনিটি) ধরে রাখতে হলে টিকার বুস্টার ডোজ প্রয়োজন। তবে এই বক্তব্যের পক্ষে এখনো তথ্যপ্রমাণ স্পষ্ট নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই নথিতে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের প্রতিবছর টিকার বুস্টার ডোজ ও সাধারণ মানুষের দুই বছরে একবার বুস্টার ডোজ দেওয়া প্রয়োজন বলে ধারণা করছে তারা। কীভাবে এমন উপসংহারে পৌঁছানো হলো, নথিতে সে বিষয়ের উল্লেখ নেই। তবে কিছু মৌলিক ধারণার ভিত্তিতে ওই পূর্বাভাস দিয়েছে স্বাস্থ্য সংস্থা। যেমন করোনার নতুন নতুন ধরনের আবির্ভাব ঘটবে ও সেসব ধরন থেকে সৃষ্ট সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় টিকারও নিয়মিত হালনাগাদকরণের প্রয়োজন হবে। অভ্যন্তরীণ এই নথির বিষয়ে জানতে চাইলে জাতিসংঘের এই সংস্থা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে গ্যাভির এক মুখপাত্র বলেন, কোভ্যাক্সে করোনার ব্যাপক পরিসরের চিত্র বিবেচনায় নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
৮ জুনের ওই নথিতে আরও অনুমান করা হয়, বিশ্বজুড়ে আগামী বছর ১ হাজার ২০০ কোটি ডোজ করোনার টিকা উৎপাদিত হতে পারে। এটি ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনসের (আইএফপিএমএ) অনুমানের চেয়ে বেশি। আগামী বছর ১ হাজার ১০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদিত হতে পারে বলে ধারণা সংস্থাটির। আগামী বছর পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎপাদনের সমস্যা, নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার অনুমোদন ইত্যাদি ইস্যু বিপত্তি হিসেবে দেখা দিতে পারে বলেও অনুমান করা হয়েছে নথিতে। রয়টার্সের দেখা আরেকটি নথিতে গ্যাভি বলেছে, করোনার আগে-পরের চিত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বৈশ্বিক টিকা কর্মসূচির কৌশল নির্ধারণে কাজে লাগানো হবে। সেই সঙ্গে বুস্টার ডোজের ভূমিকা ও এর সুরক্ষা মেয়াদ থেকে যেসব নতুন তথ্য–উপাত্ত পাওয়া যাবে, সেসবের ভিত্তিতে টিকাবিষয়ক পূর্বাভাসে পরিবর্তন আসতে পারে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী যত টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তার অধিকাংশই প্রয়োগ করা হয়েছে ধনী দেশগুলোয়। দেশগুলোর অর্ধেকের বেশি মানুষ অন্তত টিকার একটি ডোজ গ্রহণ করেছেন। বিপরীতে অনেক দরিদ্র দেশে ১ শতাংশেরও কম মানুষ এক ডোজ টিকা পেয়েছেন। গ্যাভি এসব তথ্য জানিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আগামী বছর করোনার টিকা দেওয়া নিয়ে যে হতাশাজনক পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে ওই বছর ধনী ও দরিদ্র দেশের মধ্যকার এই বৈষম্য আরও বাড়তে পারে। অভ্যন্তরীণ ওই নথির বাইরে সংস্থাটি যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তাতে আগামী বছর ৬০০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। সংস্থাটি বলেছে, টিকার সুরক্ষা মেয়াদ খুব বেশি না হওয়ায় ও করোনার নতুন নতুন ধরনের উদ্ভব ঘটতে থাকায় প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে শুধু অতিঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরাই নয়, অন্যদেরও বুস্টার ডোজ দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।
হতাশার বাইরেও আশার কথা, অনেকে ধারণা করছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর বলে বিবেচিত সব টিকাই সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেবে এবং চাহিদা মেটাতে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডোজ টিকা আগামী বছর উৎপাদিত হতে পারে, যা সমতার ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশে বণ্টন করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যমান টিকা করোনার নতুন নতুন ধরনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট কার্যকারিতা দেখাতে সক্ষম হবে বলেও আশা করছেন তাঁরা। ফলে প্রতিবছর সবাইকে বুস্টার ডোজ দেওয়া না–ও লাগতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বের ছয়টি অঞ্চলের করোনা সংক্রমণের রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রতি সপ্তাহে প্রকাশ করে। সর্বশেষ বিশ্লেষণ বলছে, ফেব্রুয়ারির পর গত সপ্তাহে নতুন আক্রান্ত সবচেয়ে কম ছিল। চারটি অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে সংক্রমণ কমেছে। বেড়েছে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও আফ্রিকা অঞ্চলে। প্রতিটি অঞ্চলের তিনটি করে দেশের তথ্য দেওয়া হয়েছে। আফ্রিকা অঞ্চলে এক সপ্তাহে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে যথাক্রমে ৩৯ ও ৩৮ শতাংশ। সংক্রমণ বেড়েছে, এমন দেশের তালিকায় দক্ষিণ আফ্রিকা, জাম্বিয়া, উগান্ডার নাম রয়েছে। এই তিন দেশে মৃত্যুও বেড়েছে। তবে এক সপ্তাহে উগান্ডায় মৃত্যু বেড়েছে ৩১৪ শতাংশ। আমেরিকা অঞ্চলে ব্রাজিল ও কলম্বোতে নতুন রোগী ও মৃত্যু বেড়েছে। অন্যদিকে সংক্রমণ ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে আর্জেন্টিনায়। পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে দেখা যাচ্ছে। ইরানে সংক্রমণ বেড়েছে ১১ শতাংশ, মৃত্যু কমেছে ৩ শতাংশ। ইরাকে সংক্রমণ বাড়লেও কমেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। অন্যদিকে এক সপ্তাহে ৫৬ শতাংশ মৃত্যু বেড়েছে আফগানিস্তানে।
বৈশ্বিক গড় পরিস্থিতির সঙ্গে ইউরোপীয় অঞ্চলের মহামারি পরিস্থিতির মিল দেখা যাচ্ছে। এক সপ্তাহে এ অঞ্চলে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমেছে যথাক্রমে ৬ ও ১২ শতাংশ। উল্লেখযোগ্য হারে সংক্রমণ বেড়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যে, আর কমেছে তুরস্কে। মৃত্যু বেড়েছে রাশিয়ায়, কমেছে জার্মানি ও তুরস্কে। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উল্লেখযোগ্যভাবে সংক্রমণ বেড়েছে মঙ্গোলিয়াতে, কমেছে ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়াতে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কমেছে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও জাপানে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে এক সপ্তাহে সংক্রমণ কমেছে ২১ শতাংশ এবং মৃত্যু কমেছে ২৬ শতাংশ। এ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমারে সংক্রমণ বেড়েছে, আর কমেছে ভারতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সময়ের ব্যবধানে নতুন নতুন ধরন আসতে থাকবে। আলফা, বিটা, গামা, ডেলটা-যে ধরনই হোক না কেন, এদের সংক্রমণ রোধে জনস্বাস্থ্যব্যবস্থা ও সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সবার জন্য টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বৈশ্বিকভাবে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু নিয়মিতভাবে কমলেও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ এবং মৃত্যু দুই-ই বাড়ছে। উদ্বেগ সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের চারটির মধ্যে তিনটি ধরনই (ভেরিয়েন্ট) বাংলাদেশে সক্রিয়। এই তিন ধরনের উৎপত্তি যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতে। সর্বশেষ রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এক সপ্তাহে (১৪-২০ জুন) বৈশ্বিকভাবে সংক্রমণ কমেছে ৬ শতাংশ। একই সময়ে মৃত্যু কমেছে ১২ শতাংশ। এই সময়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে সংক্রমণ কমেছে ৩০ শতাংশ এবং মৃত্যু কমেছে ৩১ শতাংশ। এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। আগের সপ্তাহের তুলনায় বাংলাদেশে নতুন শনাক্ত রোগী বেড়েছে ৫৫ শতাংশ এবং মৃত্যু বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।
দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক জনস্বাস্থ্যবিদদের মধ্যে উদ্বেগ আছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশের ৪০টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বলেছে, ৫০টির বেশি জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ করা গেছে। দেশে করোনার ডেলটা ধরনের সামাজিক সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। এই ধরনের সংক্রমণক্ষমতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার রূপান্তরিত চারটি ধরনকে উদ্বেগের কারণ বলে বর্ণনা করেছে। এগুলো হচ্ছে আলফা (উৎপত্তি যুক্তরাজ্যে), বিটা (দক্ষিণ আফ্রিকা), গামা (ব্রাজিল) ও ডেলটা (ভারত)। এর মধ্যে আলফা, বিটা ও ডেলটা ধরন বাংলাদেশে ছড়াচ্ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে উল্লেখ করেছে। তিনটি ধরনেরই সংক্রমণ করার ক্ষমতা বেশি। এদের মধ্যে আলফা ধরনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রোগের লক্ষণ তীব্র হওয়ায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি। তাই তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজনও বেশি।
ঢাকায় ৭১ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের দেহে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে। ২২ জুন ২০২১ আইসিডিডিআরবির প্রকাশিত তথ্যে এই পরিসংখ্যান জানা গেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কয়েকটি নির্বাচিত বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় সমীক্ষা চালিয়ে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। আমরা ধরে নিতে পারি যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের অর্ধেকের বেশি মানুষ, ঢাকায় তো দুই-তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আসল তাৎপর্য কী? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর অর্থ হলো, এত বেশি মানুষ আক্রান্ত হওয়ার ফলে হয়তো ইতিমধ্যেই আরও অনেক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, হচ্ছেন এবং হবেন। এটা আশঙ্কার দিক। অনেকে হয়তো বলবেন, অ্যান্টিবডি যখন হয়েছে, তার মানে বড় সংখ্যক মানুষের একবার করোনা হয়ে গেছে। হয়তো উপসর্গ তেমন প্রকাশ পায়নি বা মৃদু প্রকাশ ছিল। হয়তো সর্দি-কাশি ও সামান্য জ্বর উপেক্ষা করেই অনেকে দৈনন্দিন কাজ করে গেছেন। সংক্রমণ তীব্র না হওয়ায় হাসপাতালে যাননি। তিনি যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেটা বুঝতেই পারেননি। এটা মন্দের ভালো!
এটা সত্য হলে কেউ আবার ভাবতে পারেন, তাহলে তো ধরে নেওয়া যায় ঢাকায় অন্তত ‘হার্ড ইমিউনিটি’ হতে যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা বলেন, না, ৭০-৮০ ভাগ মানুষকে টিকা না দেওয়া হলে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ হবে না। কারণ, করোনার সংক্রমণ হয়ে থাকলেও সৃষ্ট অ্যান্টিবডি করোনার নতুন নতুন ধরন বা ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায় না। অথবা করোনার সংক্রমণ হয়তো তীব্র ছিল না বলে অ্যান্টিবডির রোগ প্রতিরোধক্ষমতার গভীরতা কম। এসব কারণে একই ব্যক্তির একাধিকবার করোনা হতে পারে, সে উদাহরণ তো আমাদের সামনে আছে। ফলে দ্রুত সবার টিকা নেওয়া ও বাসার বাইরে মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। আমাদের দেশে টিকার ঘাটতি আছে। হয়তো সবাইকে টিকা দিতে আরও অনেক সময় লাগবে। এই সময়ে মাস্ক পরার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। আর সেই সঙ্গে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা ৮০-৯০ ভাগ কমানো সম্ভব বলে স্বাস্থ্য ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া তথ্য প্রচারের কারণে মানুষ মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মানুষ টিকা গ্রহণ নিয়ে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যমের প্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এ জন্য সরাসরি ফেসবুককে দায়ী করে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে অপপ্রচারকারীদের দমন করা হবে।
১৬ জুলাই হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনার সময় প্রশ্নের উত্তরে ফেসবুক নিয়ে এসব অভিযোগ করেন বাইডেন। জো বাইডেন বলেন, ভুল তথ্যের প্রচারে জীবনহানি ঘটছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অধিকাংশ মানুষই টিকা গ্রহণ করেননি। মহামারি এখনো টিকা না নেওয়া লোকের জন্যই টিকে আছে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, ভুল তথ্যের প্রচার বন্ধে সবাই নিজ দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করছে না। ভুল তথ্য, অপপ্রচার দ্রুত অনলাইনে প্রচারিত হচ্ছে। একবার একটা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে তা থেকে বের হয়ে আসা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। উইসকনসিন অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত রিপাবলিকান সিনেটর রন জনসন বলেছেন, বড় বড় প্রযুক্তিবিষযক প্রতিষ্ঠান নিয়ে বাইডেনের বক্তব্য ঠিকই আছে। তবে তিনি ভুল সমস্যার দিকে আঙুল তুলেছেন। মূলত করোনা নিয়ে তথ্য লুকিয়ে রাখা এবং শুরুতেই চিকিৎসা না দেওয়ার কারণে মৃত্যু হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফেসবুকের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফেসবুক মানুষ হত্যা নয়, বাঁচানোর কাজ করছে। ২০০ কোটির বেশি মানুষ ফেসবুকের মাধ্যমে কোভিড-১৯ নিয়ে সঠিক তথ্য পেয়েছেন। ৩৩ লাখের বেশি মার্কিনি ফেসবুকের মাধ্যমে টিকাদান কেন্দ্রের খোঁজ করেছেন। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ফেসবুক জীবন রক্ষায় কাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে থেকেই বিষোদগার করে আসছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবারই প্রথম এর বিপক্ষে গেলেন। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ে তাঁর এমন বক্তব্যের পর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। একে মুক্তচিন্তা ও মতামতের ওপর আঘাত বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্তব্য করতে দেখা গেছে অনেককে।
আমাদের সন্তানেরা ভাল থাকুক
গত রোজার কিছু অভিজ্ঞতা। সেদিন ইফতার ছিল সন্ধ্যা আটটা পনোরো মিনিটে। প্রতিদিন এক দুই মিনিট করে বাড়ছে। এদিকে সেহ্রির টাইম একই রেশিওিতে কমছে। পাঁচটার আগেই খাওয়া শেষ করতে হয়। প্রায় ষোল ঘন্টা ফাস্টিং। ইফতারের কিছুক্ষন আগে জেসমিন নন্দন টিভি বা এনআরবি টিভি ছেড়ে দেয়। সেখানে ইফতারের আজান হয়। আজানের আগে কিছুক্ষন বয়ান বা কোরান থেকে তেলোয়াত হয়। শুনতে ভাল লাগে। একটা দেশীয় আবহ তৈরী হয়। ইফতারিতে কঠিন নিয়ম চালু হয়েছে এবার। ডীপ ফ্রাইড কিছু খাওয়া নিষিদ্ধ। এবছরও রোজা হচ্ছে তুমুল কোভিডের মধ্যে। ঘরে থাকা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নাই। ছুটির দিনে আসরের নামাজ পড়ে কিছুক্ষন বাংলা তরজমা সহ কোরান পড়ি। চমৎকার লাগে। ভাল একটা উপন্যাস পড়লে যেমন লাগে তারচেয়েও কোরান পড়লে মন বেশি প্রফুল্ল হয়, আর্দ্র হয়।
এবছরও কোনো ইফতার পার্টি নাই, দাওয়াত নাই, মসজিদে তারাবি নাই। ঈদও হবে না সবাই মিলে। দুজনের ইফতার শুধু। গত বছর একটা ভয়ের আবহ ছিল। দেশ থেকে ফিরে দুই তিন মাস ঘরেই ছিলাম। রোজায় ইফতার বানাতাম দুজনে মিলে। নানা ধরণের ভাজাভাজি খেয়েছি তুমুল। তারপর জুলাইতে আক্রান্ত হলাম ভার্টিগোতে। প্রায় আড়াই মাস ভুগেছি। এমন না যে পিঁয়াজু, বেগুনি, সিঙ্গারা, পেটিস, আলুর চপ বা পাকোরা জাতীয় খাবার খেয়ে এটা হয়েছে। কিন্তু জেসমিনের ভিতরে ভয় ঢুকে গেছে। তাই এবার ইফতারিতে কঠিন নিয়ম। সিম্পল খাওয়া দাওয়া। প্রচুর ফল, ফাইবার জাতিয় খাবার, কাঁচা ছোলা, শসা, তোকমা আর ইসগুলের শরবত, স্যালরির সাথে ক্যারট ব্লেন্ড করে শরবত বা ইউগার্ট দিয়ে শরবত, ম্যাঙ্গো লাচ্চি এবং অন্ততঃ একটা খেজুর। এই হলো ইফতারি। কিন্তু রোজা রেখে এসবে কি মন ভরে! ভরে না। ভাজা জিনিস খেতে মন চায়।
ছেলে মেয়েরা আসছে না এই রোজায়। তাই মন ভাল লাগে না। অরিত্রি গত সপ্তাহে এসেছিল একবার। ইফতারও করেছে। কিন্তু এ সপ্তাহে অর্ক, অরিত্রি দুজনকেই আসতে মানা করেছি। কোভিড বেড়ে যাওয়ায় যতটা সম্ভব ঘরে থাকার জন্য বলেছি। যদিও ওরা সবাই হোম অফিস করছে। সেদিক থেকে স্বস্তি। দুনিয়াটা লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। বাংলাদেশ, ভারতের মানুষদের জন্য প্রার্থনা করি। নামাজ পড়ে পৃথিবীর সব মানুষের জন্যেই প্রার্থনা করি। আবার পৃথিবী সুন্দর হোক, স্বাভাবিক হোক। এক বছরের বেশি কোথাও যাই না। দেশের জন্য মন পোড়ে। আত্মীয়, বন্ধুদের জন্য মন কেমন করে। কতজন তো ইতিমধ্যে চলে গেছে। আর তাদের দেখব না। এই বন্ধীত্ব ঘুচে যাক।
ইফতারির পর কেমন একটা ঝিম ধরা সময় থাকে। টিভি ছেড়ে ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দেই। টিভিতে একই খবর। কোথাও কেনো আশার আলো নাই।
অরিত্রিকে প্রথম ফোন দিলাম। প্রথমবার ধরলো না। আবার করলাম। দ্বিতীয়বার ধরলো।
-আম্মু কি করো।
-এই তো নামাজ পড়ছিলাম।
-ওহ্ সরি। নামাজ পড়ো পরে কথা বলব।
-ইটস ওকে, বলো।
-রোজা কেমন হচ্ছে!
-ভালোই।
-কি ইফতারি করলা।
-অরিত্রি ক্লান্ত হেসে বলল, এই তো একবারে ডিনার করে ফেলেছি। চিকেন, পাস্তা এসব খেলাম।
-সেহ্রি খেতে উঠো!
-হ্যাঁ উঠিতো।
-এই উইকেন্ডেতো দেখা হলো না। নেক্সট উইকেন্ডে আসো!
-আচ্ছা।
তারপর ফোন দিলাম অর্ককে। অর্ক প্রথমবারেই ফোন ধরবে এমন নজির বেশি নাই। তাই আর দ্বিতীয়বার দিলাম না। কল দেখলেই ব্যাক করবে জানি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে অর্কর ফোন।
-কি করো আব্বু।
-এই তো মা’কে ফোন দেবো ভাবছিলাম।
-আজকে তোমাদের বাসার ওদিক থেকে আসছিলাম। ভাবছিলাম তোমাকে হ্যালো বলে যাব।
-তাই নাকি!
-হ্যাঁ একটা দরকারে মর্নিং সাইড গিয়েছিলাম। ফেরার পথে লরেন্স হয়ে ফিরেছি। এমনি ফোন দিলাম। কয়দিন কথা হয় না, দেখিনা তোমাদের।
-অর্ক হেসে বলল, হ্যাঁ এখনতো কোথাও যাওয়ারও উপায় নাই।
-ভ্যাকসিনের কিছু করতে পারলা!
-হ্যাঁ খাতিজা আগামী সপ্তাহে এপয়নমেন্ট পেয়েছে।
-ওহ্ ভেরি গুড। দিয়ে ফেলো। অরিত্রিতো দিয়েছে।
-তোমাদের রোজা কেমন হচ্ছে!
-ভালই।
-ফ্রাইড কিছু খাবানা কিন্তু বাবা। তোমার ডায়াবেটিস।
-একদম খাচ্ছি না। নেক্সট উইকেন্ডে তোমরা আসো। অরিত্রিকেও বলেছি। একসাথে ইফতার করি।
-ওকে বাবা।
আমাদের সন্তানেরা ভাল থাকুক।
টরন্টো ২৬ এপ্রিল ২০২১
হজ্জের স্মৃতি এবং ক্কারি সাব্বির সাহেব…
প্রতিটা দিন কিভাবে অতিবাহিত হয় বুঝতে পারি না। জীবিত না অর্ধমৃত সন্দেহ জাগে। ষাট বছরের এই বয়সে এমন দুঃসহ সময় আর আসেনি। এমন কঠিন সময় আর দেখিনি। মানুষের অনুভূতির একটা লিমিট আছে। সেই লিমিট অতিক্রম করে গেছি। তাই নিজেকে আর মানুষ মনে হয় না। অনুভূতিহীন এক জন্তুর মতো মনে হয়। জন্তুরও অনুভূতি আছে। মানুষের অনুভূতি শেষ হয়ে গেছে মনে হয়। নিজেকে চিমটি কেটে দেখি, বুকের স্পন্দন শোনার চেষ্টা করি। এতো দুঃখের খবর চারিদিকে। একটা দুঃখ ভোলারও সময় পাইনা। নতুন দুঃখ এসে হানা দেয়। আর নিতে পারি না এই চাপ। প্রতিদিন কেউ না কেউ চলে যাচ্ছে। পরিচিত, ঘনিষ্ট, আত্মীয়। চোখ ভিজে যায়। তখন মনে হয় অনুভূতিগুলো আসলে এখনও শেষ হয়নি। কিছু এখনও অবশিষ্ট আছে। নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হয়, অপাঙক্তেও মনে হয়।
আজ ঘুম ভেঙ্গে আর একটা একটা দুঃসংবাদ শুনে মনটা অতিশয় বিষন্ন হয়ে আছে। ২০১৯ সালে আমি আর জেসমিন হজ্জ করেছি। আমরা ভাগ্যবান যে সেই বছর হজ্জ করতে পেরেছিলাম। গত বছর সেভাবে হজ্জ হতে পারেনি কোভিডের জন্য। এ বছরও হবে কিনা জানা নাই। আল ফালাহ নামক এজেন্সির মাধ্যমে আমরা গিয়েছিলাম। সেটা ছিল আল ফালাহর ২৯তম হজ্জ আয়োজন। আল ফালাহর স্বত্বাধিকারি হচ্ছেন ক্কারি শাব্বির আহমেদ। চমৎকার একজন প্রানবন্ত মানুষ।
অর্গানাইজড এবং পুরোপুরি ডিজিটালাইজড একটি প্রতিষ্ঠানের কর্নধার তিনি। আমাদের সাথে হজ্জ পালনের প্রতিটা সময় সাথে ছিলেন। হাসিখুশী একজন মানুষ। সেই গ্রুপে আমরা মাত্র ছয়জন বাংলাদেশি ছিলাম সেবার। আর বাকি সব অন্যান্য দেশের হাজ্জিরা ছিলেন।
আমাকে সবসময় মল্লিক বলে ডাকতেন। আমি লেখালেখির মানুষ বলে একটু বেশি সমাদর করতেন। মক্কা এবং মদিনায় আমরা পাঁচতারকা হোটেলে ছিলাম। সুযোগ সুবিধা ছিল অসাধারণ। কোভিডের মধ্যেও একদিন কথা হয়েছে। বলেছিলাম, স্যার আবার উমরাহ করতে যেতে চাই।
তিনি বলেছিলেন ইনশাল্লাহ সব ঠিক হোক যেতে পারবে। মনে আছে শেষ দিন যখন বড় শয়তানকে পাথর ছুঁড়ে আমরা ফিরব সেদিন কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটায় বাস বন্ধ করে দিয়েছিল মক্কা পুলিশ। আমরা ষোল কিলোমিটার ৪৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস গরমে হেঁটে ফিরেছিলাম। আমাদের সাথের দু’একজন তীব্র গরমে জ্ঞান হরিয়েছিলেন। আমাদের সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষ হেঁটে ফিরেছিল সেদিন।
ক্কারি সাহেব ছিলেন একটু ওভার ওয়েট। হুইল চেয়ারে চলাচল করতেন। তা সত্বেও তিনি দীর্ঘ পথ আমাদের সাহস যুগিয়েছেন। তার মনের জোর ছিল দুর্দান্ত। অসাধারন ইংরেজি এবং হিন্দীতে বয়ান করতেন। চমৎকার যুক্তিতে সবকিছু সহজ করে দিতেন। কোনো গোঁরামি ছিলনা। একজন পরিপূর্ণ আধুনিক মানুষ ছিলেন। আজ ঘুম ভেঙ্গে শুনলাম তিনি নেই! কোভিড কেড়ে নিয়েছে তাঁকেও (ইন্নালিল্লাহে…রাজেউন)। চোখটা ভিজে উঠল। চোখের সামনে ভেসে উঠল হজ্জের সব স্মৃতিগুলো। মিনার দিনগুলো, আরাফতের বিদায় হজ্জ, মুজদালিফায় রাত যাপন আর হজ্জ বিল্ডিংএ একসাথে থাকার অসাধারন স্মৃতিগুলো। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় আমার!
টরন্টো ৩ মে ২০২১