মহামারী আক্রান্ত পৃথিবী

এস্ট্রাজেনিকা ভেক্সিন. ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এবং উত্তর আমেরিকার আকাশে নতুন সূর্য

মোয়াজ্জেম খান মনসুর

কোভিড -নাইন্টিন। মানব ইতিহাসে  ভয়ংকর এক মরণব্যধির নাম। ২০১৯ সালে  ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের একটি কাঁচা বাজারের  বাঁদুর থেকে  এই মরণব্যধি পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে পরে। চীন অতি দ্রুত এবং প্রচন্ড দক্ষতার সাথে এই মহামারী সামাল দেয়। প্রায় শত বৎসর অন্তর-অন্তর  পৃথিবীতে ভয়ংকর মহামারীর ছোবলের ইতিহাস  পাওয়া যায়। ইতিহাসে সর্বপ্রথম মহামারীর  খবর পাওয়া যায়  এন্টোনাইন প্লেগ (১৬৫-১৮০). মৃত্যু সংখা ছিল  পাঁচ লক্ষ। পূর্ব রোমান বাইজেন্টাইন সম্রাজ্যে  ৫২২ সালে এক ভয়ংকর  মহামারী দেখা দেয়।  রাজা জাস্টিনিয়ান এর সময়ে এই মহামারীর উৎপত্তি বলে এর নাম জাস্টিনিয়ান প্লেগ। মেডেটিরিয়ান সাগর পারে ইউরোপের ইটালী ফ্রান্স,পুর্তোগাল, স্পেন, গ্রীস, এবং লিবিয়া, তুরস্ক, আলজেরিয়া ও পূর্ব এশিয়াতে প্রায় ২৫ মিলিয়ন লোকের প্রাণ নাশ হয়। গত ১৯১৮-১৯১৯ সালের স্পেনিস ফ্লুতে ইউরোপের ২০-৫০ মিলিয়ন লোকের প্রাণ নাশ হয়েছিল। নামটি স্পেনিস ফ্লু হলেও এই ফ্লুর উৎপত্তি ছিল আমেরিকার কেনসাস রাজ্যের সেনা ছাউনীতে। ইউরোপে  প্রথম মহাযুদ্ধে যোগ দিতে আসা আমেরিকান সেনারা এই রোগটি তাদের সাথে করে  নিয়ে আসে। এর পর বিভিন্ন সেনা ছাউনীতে এবং  ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পরে।  মানব ইতিহাসে (১৩৪৬-১৩৫৬) সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারী ব্লাক ডেথ (বুবুনিক প্লেগ)। এশিয়া, ইউরোপ এবং  আফ্রিকায় মৃত্যু সংখ্যা ছিল ৭৫- ২০০ মিলিয়ন। ইউরোপের ৫০%- ৬০% লোকের মৃত্যু হয়েছে এই মহামারীতে। ইঁদুর থেকে উৎপত্তি হওয়া এই রোগ মধ্য এশিয়া (মংগোলিয়া) থেকে আসা পণ্যবাহী জাহাজের মাধ্যমে ইউরোপ ছড়িয়ে পরে বলে ধারনা করা হয়।

আর এবার ২০২০ সালের মার্চ থেকে ইউরোপে এবং আমেরিকায়  শুরু হয় করোনার প্রলয়তান্ডব। ইউরোপের দেশে দেশে এবং আমেরিকাতে করোনা প্রলয়ে শুধু ছিল আত্মীয় স্বজন ভালবাসার প্রিয়জন হারানোর আকাশ কাপাঁনো আহাজারি। প্রতিদিন হাসপাতালে লক্ষ-লক্ষ রোগীর ছিল অবিরাম ঢল। হাসপাতালের ওয়ার্ডে, করিডোরে রোগীদের জায়গা ধরেনা। ডাক্তার নার্স এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের দিনরাত বিরামহীন সেবায় কেউ কেউ ফিরে এসেছে তাদের ভালবাসার পৃথিবীতে। আবার হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ মানুষ সামিল হয়েছে মৃত্যুর মিছিলে। ইউরোপে কোন কোন দেশে রোগীদের বিষেশ প্রায়রিটি ক্রাইটেরিয়া বিবেচনা করে চিকিৎসা দেবার ক্ষেত্রে  আশিউর্ধ্ব প্রবীন লোকদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। বয়স বিবেচনায় কম বয়সীদের অগ্রাধিকারে রাখা হয়েছিল। মানব ইতিহাসে এই দুর্ভাগ্যবান প্রবীণ বাবা মা দাদা দাদি নানা নানি এই প্রিয় পৃথিবীতে কম বয়স্ক মানুষদের জন্য জায়গা করে দিয়ে  চলে যেতে হয়েছিল পরপারে। পৃথিবীর দেশে দেশে হাসপাতালের মর্গে লাশের জায়গা ধরেনা। অস্থায়ী মিলিটারি হাসপাতাল,বড় বড় ট্রাক, লড়ীতে, পার্কিংলটে মর্গের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিউনারেল হোমে জায়গা নেই। কবরাস্থানে, স্মশানে জায়গার অভাবে গনকবর দেওয়া হয়েছে দেশে দেশে। ভারতে কোথাও কোথাও নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে লাশ।

ডেলল্টা ভেরিয়েন্ট (বি ১.৬১৭.২) আগে যেটাকে ইন্ডিয়ান ভেরিয়েন্ট বলে আক্ষায়িত করা হত। এই ভেরিয়েন্টি গত অক্টোবর২০২০ ভারতে সনাক্ত  হয়। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভয়ংকর এই  ভেরিয়েন্ট। এই নতুন ভেরিয়েন্টটি  অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সংক্রমণের ক্ষমতা  রাখে এবং কিছু রোগীর বেলায়  এক  সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি  তৈরী করতে পারে। বিবিসির এক খবরে প্রকাশ, কোন কোন ক্ষেত্রে ডবল ডোজ ভেক্সিন নেবার পরও বাইপাস করে শরীরে ঢুকে যাতে পারে এটি। দিল্লীসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার রোগী হাসপাতালে, করিডোরে, রাস্তায় অক্সিজেনের অভাবে শ^াস কষ্টে মারা যায়। ভারতকে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠিয়ে সাহায্য করেছে কানাডা সহ অনেক দেশ। বর্তমান পৃথিবীর জন্যে ইন্ডিয়ান ভেরিয়েন্ট (বি১.১১৭) এক ভয়াবহ ত্রাসের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। বাংলাদেশ, শ্রীলংকা,  ইউরোপ, আমেরিকা এবং আফ্রিকাতে ছড়িয়ে পরছে এই ভেরিয়েন্টটি। ভারত ছাড়িয়ে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পরে ফোর্থ ওয়েব সৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৯০ দেশে ইন্ডিয়ান ভেরিয়েন্ট দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পরতে শুরু করেছে। আফ্রিকান স্বাস্থ্য বিভাগের এক সতর্কবাণীতে বলা হয়েছে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট দ্রুত মোকাবেলা করতে না পারলে আফ্রিকাতে এক মহা বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। যুক্তরাজ্যে প্রায় ছয় মাস স্ট্রিক লকডাউনের পর এই মাসের শেষে ধীরে ধীরে লক ডাউন উঠিয়ে দেবার পরিকল্পনা চলছে,  কিন্তু ডেল্টা ভেরিয়েন্টের আক্রমন ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে উঠছে। ২৩ জুন কেইস সংখা ছিল ১৬,০০০ যেটা ফেব্রুয়ারীর পর সর্বউচ্চ। ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এখন ফোর্থ ওয়েব সৃস্টি করেছে।   পৃথিবীতে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে টিকা প্রদানের সাক্সেস স্টোরী  ছিল অস্ট্রেলিয়া এবং ইজরাইল সর্বাগ্রে। ইজরাইলে অধিকাংশ নাগরিক সেকেন্ড ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার পরও ডেল্টা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে বেড়ে গেছে।  ফলে ইনডোর গেদারিংয়ে  মাস্ক পরার জন্য নতুন  আদেশ জারী করা হয়েছে। 

এই মহামারীতে আমেরিকার মতন চিকিৎসা বিজ্ঞানে চরম উন্নত, শক্তিশালী ধনী দেশ সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়েছে। এর অন্যতম কারণ  ছিল গতবারের ট্রাম্প প্রশসন।  তবে এবছরের শুরু থেকে নতুন বাইডেন সরকার অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ভেক্সিন প্রগ্রাম চালিয়ে গেছে। ফেব্রুয়ারী-মার্চ- মধ্যে প্রায় সমস্ত রাজ্যগুলো ভেক্সিনের আওতায় চলে এসেছে এবং এর শুভ ফল আমেরিকা এখন পেতে শুরু করেছে। কেলিফোর্নিয়া, টেক্সাস,  নিউইয়র্ক সহ অনেক রাজ্যে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও দৈনিন্দন জীবন যাপন আগের মতন শুরু হয়েছে।

কানাডা এ বছরের প্রথমে ফাইজার এবং মডার্না কোম্পানীর সাথে চুক্তি থাকা সত্বেও আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে ভেক্সিন পায় নি। তারা, নিজ দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা বাইরে রেখে চুক্তি থাকলেও বাইরের দেশকে ভেক্সিন দিতে অস্বীকৃতি জানায়। চুক্তি অনুযায়ী প্রায় ৫০,০০০ ডোজ  জানুয়ারীতে ফাইজার ডোজ আসার ফলে স্বাস্থ্য কর্মী, ফ্রন্ট লাইন কর্মী,  নার্সিংহোম এবং আশিউর্ধ্ব নাগরিকদের দেওয়া হয়েছিল। এর পর আমেরিকা এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান চুক্তি লংঘন করে ভেক্সিন পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে কানাডায় ভেক্সিনের চরম সংকট দেখা দেয়। কানাডার চরম দু:সময়ে ভারত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। ভারত পাঁচ মিলিয়ন ডোজ এস্ট্রাজেনিকা ভেক্সিন পাঠিয়ে দেয়। তা দিয়ে দিয়ে কানাডা শুরু করে ভেক্সিন প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেইজ। বয়সসীমা ৮০ থেকে নামিয়ে ধীরে ধীরে ৭০ তারপর ৬০ পর্যন্ত বয়সীদের দেওয়া হয়। গত মার্চ-এপ্রিল মাসে কনজার্ভেটিভ দল ট্রুডো সরকারের ভেক্সিন পলিটিক্সের ব্যর্থতার খবরে অত্যন্ত সরব হয়ে উঠে। টরন্টো সান পত্রিকায় বিভিন্ন কলামে ট্রুডো সরকারকে তুলাধুনা করা হয়। ট্রুডোর অপরিপক্কতা, দূরদৃষ্টিহীনতা এবং রাজনীতিতে সম্পূর্ণ অসফল বলে সরকারের ইমেজে ধ্বস আনার চেষ্টা চালায়। তাদের যুক্তিতে  বলা হয়েছে সরকার কেন ভেক্সিন চুক্তির পাশাপাশি ভেক্সিন তৈরীর প্রজেক্ট নেয় নি। কানাডায় বিভিন ফার্মাসিউটিকেল ইন্ডাস্ট্রিতে ভেক্সিন উৎপাদন হলে আমাদের কারো উপর নির্ভর করতে হত না। বলা যেতে,পারে, এই যুক্তি নি:সন্দেহে অকাট্য। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যদি বলা হয়, সেটা হল আমেরিকার বাইডেন সরকার তাদের দেশের পর্যাপ্ত চাহিদা মিটিয়ে কানাডায় প্রচুর পরিমান ভেক্সিন পাঠিনো শুরু করেছে গত মার্চের শেষ থেকে।

এর ফলে টরন্টোর ৮০% লোকের প্রথম ডোজ নেয়া হয়ে গেছে এবং ২০% লোক সেকেন্ড ডোজ পেয়ে গেছে। কুবেক, আলবার্টায় প্রায় একই পরিমান অধিবাসীদের ভেক্সিন দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ৯ মিলিয়ন ফাইজার এবং ৬ মিলিয়ন মডার্না ডোজ জুলাইয়ের মধ্যে কানাডায় এসে যাবে। আশা করা যায় প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডোজ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসে যাবে। যেগুলো আমাদের সমস্ত কানাডার জন্য যথেষ্ট এবং দরিদ্র দেশের জন্য পাঠানো যাবে বলে সরকার আশা ব্যক্ত করেছে।

যুক্তরাজ্যের এস্ট্রানেনিকা ভেক্সিন নিয়ে শুরু হয়েছে সমস্যা তর্ক বিতর্ক। এই টিকা নেবার ফলে রক্ত জমাট বাঁধার কারনে  ইউরোপে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে ইউরোপের ১৮ দেশে এই ভেক্সিন  প্রদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কিছু কিছু দেশে এই টিকা ৬০+ জন্য দেবার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আফ্রিকায় এই ভেক্সিন পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ই এম এ (ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি) এস্ট্রাজেনিকা ভেক্সিন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেনি, তারা এই টিকা, নিরাপদ বলে গন্য করছে।

কানাডায় এস্ট্রাজেনিকা প্রায় তিন মিলিয়ন ডোজ দেবার পর প্রায় ৫০ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার খবর পাওয়া যায় এবং চার জনের মৃত্যু হয়।

কানাডায় এর ফলে স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে প্রথম ডোজ হিসেবে এই ভেক্সিন অনুমোদন দিচ্ছে না। যারা প্রথম ডোজ পেয়েছিলেন তাদের অপসন দেওয়া হয়েছে তারা ইচ্ছে করলে দ্বিতীয় ডোজ এস্ট্রাজেনিকা নিতে পারবে অথবা ফাইজার বা মডার্না। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে এস্ট্রাজেনিকা ভেক্সিনের সাথে ফাইজার অথবা মডার্নার মিশ্রনে ভেক্সিনের কার্যকারীতা বেড়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। ফলে দুটি দুই ব্রেন্ডের ভেক্সিন হলেও কার্যত  কোন ঝুঁকি বা সমস্যা নেই। যদিও এই মতামত নিয়ে জনমনে যথেষ্ট ভয় কৌতুহল দ্বিধা তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বছরের ২০২১  প্রথম দিকে  ট্রুডো সরকার ভেক্সিন রাজনীতির শিকার হলেও গত এপ্রিল মাস থাকে যথেষ্ট ফাইজার এবং মডার্না ভেক্সিন এসে পৌছেছে। এর ফলে অন্টারিও কুবেক, আলবার্টা, বৃটিশ কলম্বিয়ায় ভেক্সিন প্রদানের কার্যক্রম প্রচন্ড গতিতে শুরু হয়। টরন্টোতে প্রায় দেড়শত ফার্মেসী, ক্লিনিক,  কমিউনিটি সেন্টার, এথনিক কমিউনিটি সেন্টার, পপ আপ ক্লিনিক সেন্টারে ঝড়ের বেগে ভেক্সিন দেওয়া চলতে থাকে। টরন্টোতে জুন মাস থেকে এবং গত দুই সপ্তাহ থেকে অন্টারিওতে রোগীর সংখা আশাতীত ভাবে কমে গেছে।

৩০ জুন অন্টারিতে দ্বিতীয় ধাপে ব্যবসা বাণিজ্য খোলা হবে। রেস্তোরা, জিম, সেলুন, ব্যাংকুইট পার্টি, মসজিদ, মন্দির, চার্চ এবং পেগোডা গেদারিং সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হবে। বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে আত্মীয় স্বজন এবং অথিতীদের জন্য সীমিত আকারে উন্মক্ত করা হয়েছে। অতলান্তিকের এপারে কানাডায় আমাদের জীবন ধীরে ধীরে মহামারী পূর্ব সময়ে ফিরে যাচ্ছে। আমরা সীমিত আকারে আড্ডা জলসা পার্টিতে ভয়হীন ভাবে মেলামেশা করিতে শুরু করেছি। আমাদের মধ্যে যারা ডাবল ডোজ ভেক্সিন পেয়ে গেছি তারা ঘরোয়া আড্ডায় মুখোসবিহীন স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেছি।

হেলথ কানাডা কিন্তু ভয়াবহ ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ভয়াবহতার কথা বার বার আমাদের  স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। জনগন পর্যাপ্ত পরমান সতর্ক না হলে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ফোর্থ ওয়েব সৃষ্টি করতে পারে বলে ভবিষ্যত বাণী করেছে। কাজেই ফোর্ড সরকার ধীরে ধীরে লক ডাউন কি ভাবে কার্যকর করবে সেটার উপর অনেকটা নির্ভর করছে পরবর্তী পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিবে। অন্টারিও এবং অন্য সব প্রভিন্সগুলো ডাবল ডোজের আওতায় দ্রুত চলে এলে আশা করা যায়  ডেল্টা ভেরিয়েন্ট তার ভয়ংকর মৃত্যু ছোবল বসাতে পারবে না। সে কারনেই সরকার ভেক্সিন প্রোগ্রাম অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ক্ষিপ্র গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে এবং এটা  কানাডায় ট্রুডো সরকারের সাক্সেস ভেক্সিন স্টোরি নি:সন্দেহে বলা যেতে পারে। আশা করছি ডেল্টা ভেরিয়েন্টের ফোর্থ ওয়েবের প্রলয় থেকে সুরক্ষা করে  শীঘ্রই আমরা করোনা মহামারীকে পিছনে ফেলে  আবারও আনন্দময় বর্ণীল পৃথিবীতে ফিরে যাব। ফিরে পাব আমাদের পুরানো উৎসব মুখর প্রাণবন্ত  বসুন্ধরা। বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন প্রিয়জন নিয়ে আমরা ভেসে যাব চৈত্রের মাতাল সমীরণে আনন্দ সন্ধ্যায়।

২৫ ই জুন , ২০২১

টরন্টো, কানাডা