সুখ শতাব্দী

শিরীন আহমেদ 

জন্ম নিয়েই যে আজন্ম পাপ করে ফেলে, 

দুঃখতাপশী নামটা তার জন্য যথেষ্ঠ  নয় কি?

তবুও দিলে তুমি নাম তার সুখজানবাসী।  

মাঝে মাঝে রঙিন ব্যাথা গুলো উঁকি দিয়ে উঠে,

কি দোষ  বলো আমার ?

আমার  ইচ্ছেঘুড়ি গুলো যখন ঘুট ঘুটে অন্ধকারে,

ডানামেলে ঘুরে বেড়ায়, 

ছুটে চলে আলোর নেশায়। 

ব্যাস্ত হয়ে পড়ে সুখ সমুদ্র পাড়ি দিতে,

তখন কারা  যেন  বিড় বিড় করে বলে যায়  —

পোড়াকপালে মেয়েটি , বাব -মা খেকো মেয়েটি, 

আবার রাঙা দাঁত বের করে  কেউ কেউ বলে যাই নষ্ট মেয়েটি। 

আমি কিছুই জানি না এ সবের , জানি শুধু —

সমাজের ঝুনঝুনানি  শোনার মতো সময় সুযোগ আমার কখনো হয়ে উঠেনি। 

জীবনের সংগ্রামে  পরিবর্তিত হয়েছি,  

পরিবর্ধিত হয়েছে আজগুবি উপাখ্যান।  

রংধনু স্বপ্নগুলো  আছড়ে পড়েছে চোরাবালিতে।

আটকে গেছে , আর উঠতে পারেনি। 

শকুনি মামার চাল আমি বুঝতে পারিনি কখনই, 

ছলচাতুরে ভালবাসার  জালে জড়িয়ে পড়েছি l

আচ্ছা, অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দিলেই কি 

আগুনের পরশমনি পাওয়া যায়?

কত শতবার করেছি সে চেষ্টা!

হেরে হেরে জিতেছি কত শতবার।  

তবুও পুন্য ভোরের সূর্য উদয় হয়নি।

প্রতিদিন তৈরী হয়েছে তাই  নিত্য নতুন বাসর, 

ছাই  হয়ে গেছে  আমার প্রজাপতি ভালবাসা। 

এক কামরার অতীন্দ্র ভালোবাসা তাই তৈরী হয়নি কখনও, 

মৃত্যুভয়কে জয় করে যখন দুরন্ত ষাঁড়ের মতো ছুটে চলেছি ,

তখনই শুরু হলো  তোমার আমার একসাথে হাঁটা,

সেই থেকে হাটছি , কখনো  হাত ধরে, আবার কখনো ছেড়ে। 

কর্কশ আওয়াজে ও পেয়েছি প্রিয়ংবদা উপাধি l

জানি যে মেহেদী তুমি আমায় পরিয়েছ ,

সেটা  কখনো ধুয়ে যাবে না।  

তবুও ভয় , বেঁচে থাকার ভয়। 

মরে  মরে বেঁচে থাকতে থাকতে আমি যে ক্লান্ত শ্রান্ত ,

বেঁচে থাকার ভয় তাই গ্রাস করে চলেছে প্রতিটি মুহূর্তে, 

তবুও তুমি লিখে চলেছো কালজয়ী উপন্যাস, 

নাম দিয়েছো আমায় সুহাসিনী, সুখবাসীনী। 

সত্যিই আমি সুখের বাঁশি হয়ে রইলাম। 

দুঃখের তপস্যা করতে করতে সব সুর গুলো পেয়েছে সুখের সন্ধান। 

তাইতো আমি সুখী , হয়েছি তোমার সুখ শতাব্দীর  সুখজানপাখি।

শিরীন আহমেদ । টরন্টো