প্রবাসে পরহিতকর্ম -২৬

আগস্ট ১০, ২০১৬

॥ রীনা গুলশান ॥

সময় থেমে গ্যালো। বাতাস বন্ধ হয়ে গ্যালো। পৃথিবীও কি থেমে গ্যালো? কি জানি। আবীর বুক ভাঙ্গা কান্নায় অনেকগুলো প্রহর অতিক্রান্ত করলো, জানেনা কতক্ষণ। মনে পড়ে না এভাবে কখনো ও কেঁদেছে কি না। বাবা মারা গেলে পাগলের মত হয়ে গিয়েছিল… বড় অসময়ে বাবা ওদেরকে দুঃখের এবং হাতাশার সাগরে নিমজ্জিত করেছিল। তবু আবীর সে সময়ে কাঁদতে পারেনি। বরং মাকে ও ছোট দুই ভাইকে বুকে জড়িয়ে খারাপ সময়টুকু পার করেছে। এমনকি আমেরিকা আসবার সময় ও খুউব বুক খালি হওয়া এক ধরনের শূন্যতা অনুভব করেছিল… কিন্তু একটুও কাঁদেনি। আজ এত কাঁন্না কোথায় যে জমে ছিল…। হঠাৎ ঘাড়ের উপর একটা নরম হাতের স্পর্শ পেল। আবির খুব থতমত খেয়ে মুখ তুলে তাকালো…দেখলো চোখ ভরা কাঁন্না নিয়ে দীপক সেন তার পেছনে দাড়িয়ে আছে। তারপর হাটু গেড়ে বসে পড়লো আর বললো –

ভাই…চোখের কাঁন্নার এইতো শুরু… কিছুটা বাঁচিয়ে রাখুন… ভবিষ্যতের জন্য।

আবীর এবার যেন ছেলেটাকে বুঝতে পারলো। ছেলেটার মনটা দারুন মায়াভরা। কিন্তু কথা বলে অন্যভাবে। দীপক আবার বললো-

ভাই … এটা প্রবাস। কেউ কারো নয়। দেখলেন তো আপনার মামা পর্যন্ত আপনাকে এই নরকে ছেড়ে দিয়ে গ্যালো। মাত্র ২১ বছর বয়সে জাহাজে করে চলে এসেছিলাম খালাশী হয়ে। এখন আমার বয়স ২৮ বছর। বিয়ে করিনি। দেশে টাকা পাঠাই মাসে মাসে। সাত ভাই বোনের বিশাল সংসার। আমি তিন নম্বরে। ঢাকার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়াতে আমাদের বাড়ি। বাবা গ্রামীন ব্যাংকে চাকরী করে। আমার বড় দুই দিদি। তাদের বিয়ে দিতে যেয়েই যেটুকু জমি ছিল তাও শেষ। অল্প বয়সেই বাবা বুড়িয়ে গেছে। মা এ্যাজমা রুগী। আমি তাই এক আত্মীয়ের হাত ধরে জাহাজে খালাশী হয়ে ঢুকেছিলাম। তারপর এক সময় এখানে এসে পড়েছি। আর এই ৭ বছর মোটামুটি পালিয়েই বেড়াচ্ছি। কারণ ইমিগ্রেশন উকিলকে খাওয়ানোর মত টাকা আমার নাই। এই নরকে পড়ে থাকি। অনেক কেঁদেছি… এখন আর কাঁদিনা। কারণ চোখের চোখেল জল দেখবার আর মুছে দেবার মত মানুষ যখন চারপাশে আর থাকে না তখন কান্নার জলও শুকিয়ে যায়। আমি এখন সাহারা মরুভূমি দাদা। দিনের বেলায় গাধার মত খাটি। রাতে একটু ইন্টারনেটে ছবি দেখি। কারণ এখনেতো টিভি দেখা যায় না। কিন্তু একটা পথ পেয়েছি… মনে হচ্ছে এই নরক থেকে বের হওয়া যাবে।

আবির এবারে আগ্রহ ভরে তাকায়। জিজ্ঞেস করে, কি পথ দীপক? সরি, নাম ধরে ডাকলাম। তোমার ঐ সব দাদা, আজ্ঞে আর আপনি সম্বোধন বলতে ভাল লাগে না আমার। তাছাড়া আমাকেও দাদা বলার দরকার নাই। আমি তোমার থেকে ৩/৪ বছরের ছোট।

ওমা বলে কি? দ্যাখো কান্ড। আমিতো তোমাকে আমার সিনিয়র মনে করেছি। আসলে তুমি তো লম্বা চওড়া , বয়স বোঝা যাচ্ছে না।

হু, তা ঠিক। তো নরক থেকে বের হওয়ার উপায়টা কি?

বলবো বলবো। আসো আগে বন্ধু হই। দীপক বাচ্চাদের মত বুড়ো আঙ্গুল মিলিয়ে বন্ধুত্ব করলো। আবীর হেসে ফেললো। তখন দীপক বললো, আগে দেখ তোমাকে কি কি বারে অফ ডিউটি দ্যায়। আর একটা কথা, ঐ হেড কুক হান্নানের সাথে সামলে চলবে। জানি তুমি ওর থেকেও বড় সেফ। কিন্তু এখানে উনিই বসের বস। ব্যাটা যেমন ধড়িবাজ তেমনি তার বাজে ব্যবহার। তুমি এখন মাত্র এক সপ্তাহও হয়নি এসেছো। তাই তোমাকে সাবধান করলাম। মাথা গরম করবে না। কাল থেকে তো কাজের প্রথম দিন… তাই…।

ওকে দীপক। আমি প্রথম দেখাতেই বুঝতে পেরেছি হান্নান সাহেবকে। চিন্তা করো না। আমার এখুনি দেশে ফিরে যাবার কোন উপায়ও নাই।

পরের দিন সকালে উঠেই দীপক ওকে ২টা বিস্কিট দিল। দুজনেই খেয়ে নিচে নামলো এবং কাজ শুরু করে দিল। হেড কুক আবীরকে একটার পর একটা অর্ডার দিয়েই চললো। অথচ পেয়াঁজ রসুন ইত্যাদি কাটাকাটির জন্য অন্য লোক আছে। মুরগী গরু সব তাকে দিয়েই কুটানো ধুয়ানো সব করালো। এমনকি কড়াইতে দিয়ে তাকে বলে নাড়ো। ওর মেজাজ খুব খারাপ  হচ্ছিল… কিন্তু দীপক প্রতিবার পেছনে এসে তাকে চোখ দিয়ে ঈশারা করে যাচ্ছিল। বিকাল ৫টা দিকে নাজিমুদ্দিন সাহেব এসে তাকে ডেকে বললো, কি আবীর, কেমন লাগছে?

জী স্যার, ভালই।

শোন আমাদের মঙ্গল, বুধবার ব্যস্ততা কম। তাই ঐ দিন তোমার ডে অফ। আর শনি/রবি কোন ছুটি পাবে না। তবে যেহেতু তুমি উপরে থাকো, ইচ্ছা করলে এখানেই খেতে পারো। আর একটা কথা… হান্নানের স্বভাব খুব খারাপ আমি জানি। তবে কিছু করার নাই। আমার ওর উপর নির্ভর করতে হয়। তবে অন্য আর একজন বাবুর্চি আছে শমশের। তার ব্যবহার খুব ভাল। সে শুধু শনি রবিবার কাজ করে। তবু কোন অসুবিধা হলে আমাকে নির্দ্বিধায় জানাবে।

অসুবিধা নাই স্যার… আমি সব বুঝতে পেরেছি।

এভাবেই চলে গ্যালো ২/৩ মাসের মতন। তখন আবীর একটু একটু করে ধাতস্থ হতে শুরু করেছে। কলিং কার্ড কিনে রাখে। মঙ্গল/বুধবার অনেক কথা বলে দেশে। এছাড়া প্রতি রাতেই নবনীর সাথে অল্প সময় হলেও কথা বলে।

এর মধ্যে দীপকের সাথে নিউইয়র্কের মোটামুটি দ্রষ্টব্য জায়গাগুলো দেখে ফেলেছে। ওদের বুধবারের ছুটিটা মিলে গেছে। তাই বুধবারে মোটামুটি দুজনে এক সাথে ঘুরে বেড়ায়।

হঠাৎ এক বুধবারে দীপক বললো, আজ দুপুরে খাবারটি একটু জলদি খাবে, আমরা ১ টার মধ্যে বেরিয়ে পড়বো।

কোথায় যাবে?

আগে বলবো না…চলই না। দেখবে তখন।

বেলা ২টার মধ্যে বেরিয়ে পড়লো দুজনে। আজ দীপকের সাজ গোজ চোখে পড়ার মত। আবার যাবার আগে হান্নান ভাইকে পটিয়ে ২ বক্স বিরিয়ানী, ১০টির মত শিককাবাবও নিল ফ্রিতে। আবীর একটু অবাক হলেও কিছুই বললো না। সোজা বাসে উঠলো। তারপর সাবওয়েতে উঠে সোজা জ্যামাইকা স্টেশনে নেমে পড়লো। এরপর হন্টন। কয়েকটি অলিগলি পার হয়ে পুরানো একটি চারতলা বাড়ির (খুবই পুরানো ধরনের) তিনতলার কর্নারের এপার্টমেন্টে বেল বাজালো। সাথে সাথে দরজা খুললো একজন মহিলা। বয়সটা মনো হলো ৩৫ থেকে ৪০ এর মধ্যেই। কি জানি কমও হতে পারে। মেয়েদের বয়স বোঝা খুবই কঠিন কর্ম। মহিলার স্বাস্থ্য বেশ ভরাট। একটা লাল সিøভলেস ব্লাউজ পরা, এবং থ্রী কোয়ার্টার একটা রিপট্ জিনস পরা। চুলগুলো পিছনে ছোট করে, সামনে একটু লম্বা এবং সুন্দর করে ব্লো ড্রাই করা তার ডারটি ব্লন্ড হেয়ার। টকটকে লাল লিপিস্টিক পরা। দীপককে দেখেই অনেকটা ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলো এবং আবিরের সামনেই দীপকেকে গভীর চুম্বনে নিমগ্ন করলো। দীপকও মহিলার কোমর জড়িয়ে ধরলো। আবীর লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে স্থানু হয়ে দাড়িয়ে পড়লো। তার সদ্য বাংলাদেশ থেকে আসা চোখ এই দৃশ্য দেখতে পারছিল না। হঠাৎ দীপকের বোধ হয় মনে পড়লো আবীরের কথা। সে মহিলাকে ছেড়ে আবীরের দিকে তাকিয়ে মধুর হাসি দিল।

আবীর, এ হলো আমার ফিঁআন্সে প্রীসিলা সালভাদর। প্রিসিলা, এ হলো আমার দেশী বন্ধু আবীর।

আবীর মোটামুটি বেশ বড় রকমের ধাক্কা খেল। বলে কি ছেলেটা! এই মহিলাকে বিয়ে করবে? অবশ্য একটু পরেই ওর মনে পড়লো…গত রাতেই

দীপক আবীরের বিছানায় এসে ফিস ফিস করে অনেক্ষন গল্প করেছে। তখন দীপক বলছিল, আবীর আমি বাঁচতে চাই। এই কুকুরের মতন জীবন যাপন আমি আর করতে পারছি না। আমারও একটা জীবন আছে। আমি যে উকিল ধরবো, সেই টাকাও আমার নাই। দেশে আমার প্রচুর টাকা পাঠাতে হয়। গোটা সংসারটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বাবা দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগয়ে যাচ্ছে। কিন্তুু এই ভাবে আর কতদিন? আমি আর পারছি না। আমারও বাঁচতে ইচ্ছা করে আবীর।

আবীরের এখন সব মনে পড়ছে এই তিনচার সপ্তাহ ধরে দীপক যা যা বালেছে। প্রীসিলার এপার্টমেন্টটা একটা স্টুডিও। ঘরে একটিই কাওচ। ওরা ওতে বসলো। প্রীসিলা ওদের ড্রিংস অফার করলো। আবীর মাথা নাড়লো। তখন সে ২ কাপ কফি বানিয়ে আনলো। ওদের কথার ভাবে বুঝলো, অলরেডী দীপক আবীরের ব্যাপারে বেশ কিছু কথা বলেছে। কারণ প্রীসিলা কোন রকম ভনিতা না করেই ওকে বললো – তুমি যদি থাকবার জায়গা চাও, আমাদের নীচে দোতালায় একটি কালো ছেলে রূমটেট চাচ্ছে। আমাকে দীপক সব বলেছে। তোমার খুউব অসুবিধা হচ্ছে ওখানে ওভাবে থাকতে। তুমি রাজী হলে এখনি কথা বলতে পারি যে বিজ্ঞাপন দিয়েছে তার সাথে।

কিন্তু তুমি বললে, যে বিজ্ঞাপন দিয়েছে সে কালো। আমি কালোদের ভালো করে জানি না। একটু ভয় ভয়ও করে।

প্রীসিলা বেশ জোরে হাসলো এবং বললো, মানুষ মাত্রেই ভয়ঙ্কর! কালোদের উপর মানুষেরাই একটা ষড়যন্ত্রের সিল মেরে দিয়েছে “খারাপ মানুষ” হিসাবে। ওদের সাথে মিশলে বুঝবে… ওদের সম্পর্কে  যা শুনেছো… ওরা আসলে অতটা খারাপ নয়। কোন কোন কালো মানুষ এত ভাল যে তুমি চিন্তাই করতে পারবে না।

হঠাৎ কথার মধ্যেই দীপক বললো, হানি তুমি একটা ফোন করে দেখোতো ছেলেটি আছে কি না?

প্রীসিলা সঙ্গে সঙ্গেই বিজ্ঞাপনের কাগজটা দেখে ফোন করলো এবং পেয়েও গেল। ওপার থেকে বললো এক ঘন্টা পরে যেতে।

এ সময়ে প্রীসিলা ওদেরকে খুুউব সুন্দর ভবে খাবার সার্ভ করলো। সাদা বেশ বড় স্কোয়ার প্লেটে। প্লেটের নীচে ন্যাপকিন সুন্দর কাজ করা লাল রঙের কাপড়ের উপর। খাবারটা দেখতে এত সুন্দর। সাথে কোল্ড ড্রিংস (কোক) দিল। ড্রিংস এর উপর ৬/৭টি বরফের কুচি, কিন্তু এক ফোটাও বুদবুদ নেই ড্রিংস এ। আবীর নিজে শেফ। তাই ও জানে বেশ অভিজ্ঞ ড্রিংস সার্ভার না হলে এটা সম্ভব নয়। বেশীর ভাগ মানুষই কোল্ড ড্রিংস সার্ভ করলে বুদবুদের ভরে যায়। আবীর খুব প্রসংশিত দৃষ্টিতে চেয়েছিল ড্রিংস এর গ্লাসের দিকে ।

প্রীসিলা মিষ্টি করে  হেসে বললো, আবীর আমি ৮ বছর বারটেন্ডারের কাজ করেছি এবং আমার এ ব্যাপারে সার্টিফিকেটও আছে। এখন অবশ্য আমি একটিা বারের ম্যানেজারের দায়িত্বে আছি।

খাবারে বাইট দেবার আগে হঠাৎ ও বললো, এটা কি তোমাদের দেশের খাবার?

হ্যা আবীর, এটা আমাদের ম্যাক্সিকান ডিস। আমি ম্যাক্সিকান।

আমি ইন্টারন্যাশনাল অনেক ফুড জানি। তবে ইংলিশ এবং ফ্রেঞ্চটাই মেইন। আর সব দেশী টাইপ। যেমন ইন্ডিয়ান… মোগলাই, পাকিস্তানী, বাংলাদেশী সব ধরণের ফুড আমি জানি। এটা বোধ হয় স্প্যানিশ?

হ্যা, এটার নাম ‘বারিটো বারবাকোয়া’। আবীর আমি তোমাকে এবারে স্প্যানিস ডিসের উপরও ভাল ট্রেনিং দিয়ে দিব।

আমি খুবই খুশী হলাম… তো এটা কিভাবে বানাও? ততক্ষণে ওরা দুজনেই প্রায় গোগ্রাশে খাওয়া শুরু করেছে। খাবারের মাঝখানেই খাবারের রেসিপিটাও জেনে নিচেছ। প্রীসিলা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে  বলে যাচ্ছিল… আর দীপক মিটি মিটি হাসছিল। ভালবাসা ভরা হাসি।

প্রীসিলা বলে যাচেছ তার বরিটো বারবাকোয়া’র রিসিপি… বিফ এর বড় একটা পোরশন (বোনলেস) ৩/৪ ঘন্টা ধরে ওভেনে বেক করতে হবে, যতক্ষণ না মাংশটা নিজের থেকে খুলে খুলে আসবে। তারপর বড় একটা রুটির উপর ছড়িয়ে দিতে হবে মাংসের লম্বা লম্বা সøাইস। উপরে দুই তিন রকমের পেপার (রেড, গ্রীন, অরেঞ্জ, পাতলা করে সøাইস করে দিতে হবে), এর পর সালসা, ২ টেবিল স্পুন সাওয়ার ক্রীম, স্পাইসি সস (যতটুকু তোমার প্রয়োজন স্বাদ অনুযায়ী), বারিটো সস, এবং এটাকে সব থেকে সুন্দর করতে গেলে উপরে ২ টেবিলস্পুন গুয়াকামোল  সস (আভাকাডো দিয়ে বানাতে হয়) ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর রোল করতে হবে।

আবীর গভীর মনোযোগ দিয়ে প্রীসিলার বর্ণনা শুনে যাচ্ছিল। যেহেতু সে নিজে একজন সেফ তাই তার আগ্রহ অবশ্যই এই বিষয়ের উপর। দীপক খুব মজা পাচ্ছিল।

দীপক কি যেন একটা বলার জন্য হঠাৎ হাত উঁচু করলো… এর মধ্যেই একটা ফোন এলো প্রীসিলার।

হ্যালো, ওহ… আচ্ছা…ওকে আমরা এখুনি আসছি। বলেই ফোন রেখে দিল।

তারপর ওদের দিকে তাকিয়ে বললো, লেটস গো। ঐ ছেলেটা আমাদের এখুনি ডাকছে।

ওরা রেডী হলো নীচে যাবার জন্য। হয়তো বা জীবনের অন্য আরেক পর্বে পা দেবার জন্য এগিয়ে গ্যালো… সূর্য্যটাও ততোক্ষণে মাথার উপরে উঠেছে।  (চলবে)

রীনা গুলশান

কবি ও লেখক

টরন্টো।

gulshanararina@gmail.com