ম্যানিটোবায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডার মেনিটোবা প্রভিন্সের রাজধানী উইনিপেগের ১১৫ কিলোমিটার উত্তরে আরবর্গ শহরের কাছাকাছি হাইওয়ে ৭ এ দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হন বাংলাদেশী তিন শিক্ষার্থী। তারা ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবায় পড়াশোনা করতেন। দুর্ঘটনায় জড়িত অপর গাড়ির চালক ৫৩ বছর বয়সী এক মহিলা গুরুতরভাবে আহত হন। তবে তিনি জীবনহানির আশংকামুক্ত। তাকে স্থানীয় উইনিপেগ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর সিবিসি নিউজের।

নিহত তিন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর নাম আল নোমান আদিত্য, আরানূর আজাদ চৌধুরী এবং রাইসুল বাধন। এদের দুজনের বয়স ২৩। অন্যজনের বয়স জানা যায়নি।

আরানূর আজাদ চৌধুরী ছিলেন স্ট্যাটিসটিক এর ছাত্র, রাইসুল বাধন একাউন্টিং এর এবং আল নোমান অদিত্য ছিলেন এগ্রিকালচার এর ছাত্র। এরা সবাই দলবেধে মেনিটোবার উত্তরে রাতের আকাশে ‘নর্থান লাইট’ দেখতে গিয়েছিলেন। তাদের সাথে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন অন্য গাড়িতে।

রাতে ‘নর্থান লাইট’ দেখে তারা খুব ভোরে উইনিপেগে ফিরছিলেন হাইওয়ে ৭ ধরে। দুর্ঘটনাস্থলে হাইওয়ে ৭ এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার। দুপাশে কোন জনবসতি নেই। নির্জন এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) এর মিডিয়া রিলেশন অফিসার ঞধৎধ ঝববষ সিবিসি নিউজকে বলেন, “দুর্ঘটনার সঙ্গে এলকোহলের কোন সম্পর্ক নেই বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। উভয় গাড়ির ড্রাইভার সিট বেল্ট পরা অবস্থায় ছিলেন দুর্ঘটনার সময়। প্রকৃত পক্ষে কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা এখনি বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে কিছু তথ্য দিতে পারবো।”

ঞধৎধ ঝববষ নিহতদের আত্মীয়-বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

নিহতদের বন্ধু ফারদিন জারিফ সিবিসি নিউজকে বলেন, “তারা তিনজন ছিলেন খুবই ভাল মানুষ। গোটা কমিউনিটির জন্য এটি একটি বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল। আমরা সবাই এখন গভীর শোকে মুহ্যমান।”

জারিফ বলেন, “তাদের সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ২০১৮ সালে। সেই থেকে তারা আমার ভাইয়ের মতই ছিলেন।”

ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অব মেনিটোবার (মেনিটোবা ইউনিভার্সিটির অংশ) শিক্ষক এবং স্থানীয় কানাডা-বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মেনিটোবার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলম সিটিভি নিউজকে বলেন,“তারা সবাই ‘নর্থান লাইট’ এর দৃশ্য দেখতে গিয়েছিলেন। তাদের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর বিষয়টি আমি এখনো বিশ^াস করতে পারছিনা। তারা ছিলেন খুবই উজ্জল ভবিষ্যতের অধিকারী, চটপটে ও বুদ্ধিমান। আমার কাছে তাদের মৃত্যুর খবরটি খুবই বেদনাদায়ক। কারণ, তারা শুধু আমার ছাত্রই ছিলেন না। তাদেরকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। একসাথে আমরা খেলাধূলাও করতাম। তারা ফুটবল খেলতে খুব ভালবাসতেন। এদের একজনকেতো আমি নিজের ভাই বলে মনে করতাম।” ম্যানিটোবা ইসলামিক এ্যাসেসিয়েশনের ভাইস-চেয়ারম্যান তাসনিম ভালি বলেন, এই তিন শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু কমিউনিটির জন্য খবুই হৃদয়বিদারক ঘটনা।