কানাডায় প্রতি আড়াই দিনে একজন নারী বা মেয়ে নিহত হয়

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডায় গড়ে প্রতি আড়াই দিনে একজন নারী বা মেয়ে নিহত হয়। নারীহত্যা সম্পর্কিত এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে।

ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি বিষয়ক কানাডার নারীহত্যা পর্যবেক্ষণ সংস্থার (Canadian Femicide Observatory for Justice and Accountability) ২০২০ সালের রিপোর্টে বলা হয়, ওই বছর কানাডায় মোট ১৬০ জন নারী ও মেয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন। ওই বছরের এপ্রিল মাস ছিলো নারী ও মেয়েদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ মাস। ওই মাসে মোট ২৬ জন নিহত হয় বলে রিপোর্টে জানানো হয়। খবর সিটিভি নিউজের। রিপোর্ট করেছেন ব্রুক টাইলর।

এটি নতুন কোনও ব্যাপার নয় বা মহামারির প্রভাবও নয়। কারণ কানাডায় প্রতি বছর যত সংখ্যক নারী ও মেয়ে নিহত হয় সেই সংখ্যা প্রায় অপরিবর্তিতই রয়েছে।

ক্যালগারির এই তরুণী নাদিয়া এ্যল-ডিব সাবেক প্রেমিকের হাতে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ছবি : রচা এ্যল ডিব

রিপোর্ট সংকলনকারী দলের একজন সদস্য অনুরাধা ডুগাল সিটিভি নিউজ চ্যানেলকে বলেন, “কানাডায় প্রতিবছর সার্বিকভাবে যত নারী বা মেয়ে হত্যার শিকার হয় সেই সংখ্যা গত কয়েক বছরে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেনি।” তিনি বলেন, “এটি একটি অনঢ় সংখ্যা যাতে আজকের দিনে কানাডাজুড়ে শুধু লিঙ্গের কারণে কীভাবে নারীরা হত্যার শিকার হচ্ছে তারই প্রতিফলন ঘটে।”

#কলইটফেমিসাইড, শিরোনামের ওই রিপোর্টে বলা হয়, হত্যাকারী চিহ্নিত হয়েছে এমন ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে হত্যাকারী ছিলো পুরুষ। হত্যার শিকার নারীদের বয়স বিভিন্ন। তবে নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি সংখ্যকের বয়স ২৫ থেকে ৬৪ বছর।

ঘটনার তথ্য প্রকাশের সময় নিহত ও খুনীর সম্পর্কও দেখা যায় নানা ধরণের। তবে অর্ধেকের বেশি ঘটনায় খুনি ছিলো নিহতের জীবনসঙ্গী (partners) এবং ২৬ শতাংশ ঘটনায় পরিবারের সদস্য।

ডুগাল বলেন, “নারী ও মেয়েরা তাদের খুনীদের চেনে। তারা হলো তাদেরই পরিবারের সদস্য, জীবনসঙ্গী, তাদের প্রাক্তন জীবনসঙ্গী।”

রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, আদিবাসী নারী ও মেয়েরা অন্যদের চেয়ে অসমানুপাতিক হারে হত্যার শিকার হয়।

ডুগাল বলেন, “আমরা যদি গত পাঁচ বছরের, প্রকৃতপক্ষে ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ের দিকে তাকাই তাহলে দেখা যাবে, নারীহত্যা পর্যবেক্ষণ সংস্থা মোট ১৪৯ জন আদিবাসী  নারী ও মেয়ের হত্যার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। আর এটি হলো মোট নারী হত্যার ২০ শতাংশ। কানাডার জনসংখ্যার অনুপাতে আদিবাসী নারী ও মেয়েদের নিহত হবার এই সংখ্যা অত্যধিক।” 

ডুগাল বলেন, মহামারিকালে গার্হস্থ্য ও লৈঙ্গিক সহিংসতার অবনতি এবং নারী ও মেয়েদের পক্ষে সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি কঠিনতর হয়ে উঠলেও বছরের পর বছর ধরে এই সংখ্যাটি স্থির রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, “আমরা ভুলতে পারি না যে, এমনকি লকডাউন শুরুরও আগে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার এক মহামারি শুরু হয়েছিলো।” ডুগাল বলেন, আসলে এই বিষয়গুলির সমাধানের জন্য আমাদের দরকার একটি জাতীয় পরিকল্পনা যাতে আদিবাসী নারী ও মেয়েদের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে এবং যথাযথ গবেষণা ও তহবিল যোগানোর একটি পরিকল্পনা থাকবে।