এশিয়ানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বেড়েছে ৭১৭ শতাংশ

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রিমিয়ার বলেছেন, ভ্যাঙ্কুভার পুলিশের প্রকাশিত তথ্যে গত বছর এশীয়দের বিরুদ্ধে ঘৃণাজনিত অপরাধ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় অশ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে হেইট ক্রাইম হিসাবে গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা জোরালো হয়েছে।

ভ্যাঙ্কুভার পুলিশের প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, এশীয়দের বিরুদ্ধে ঘৃণাপ্রসূত অপরাধ বেড়েছে ৭১৭ শতাংশ।  ২০১৯ সালে যে অপরাধের সংখ্যায় ছিল এক ডজনের মত সেটি ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২টিতে। এদিকে ঘৃণাপ্রসূত সাধারণ ঘটনাও দ্বিগুণ বেড়েছে। খবর দি কানাডিয়ান প্রেস এর। রিপোর্ট করেছেন নিক ওয়েলস।

ভ্যাঙ্কুভার পুলিশ গত বছর বলেছিলো, গত বছরের মার্চে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এশীয়দের বিরুদ্ধে হেট ক্রাইম বেড়েছে।

প্রিমিয়ার জন হোরগান গত বৃহস্পতিবার  বলেন, হেট ক্রাইমের বিচারের ক্ষেত্রে অসুবিধা আছে। অসুবিধার আংশিক কারণ হলো, সহিংস অপরাধের বিপরীতে হেট ক্রাইম সত্যি জাতিগত বিদ্বেষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিনা তা প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু এটি করা জরুরী।

গণমাধ্যমের সামনে জন হোরগান বলেন, “আমাদের নিশ্চিত করা দরকার যে, অশ্বেতাঙ্গ জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিছক সহিংসতা নয়, এটি হেট ক্রাইম। কেউ যদি গাত্রবর্ণের কারণে কাউকে আক্রমণ করে তাহলে তার বিচারে আইন পুরো মাত্রায় প্রয়োগ করা হবে।”

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এশীয় বংশোদ্ভূত মানুষের ওপর হামলার ঘটনার উল্লেখ করে হোরগান বলেন, বিসিতেও একই ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে।

হোরগান বলেন, প্রাদেশিক সরকার বর্ণবাদবিরোধী আইন প্রণয়নে কাজ করছে এবং জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী মাইক ফার্নওয়ার্থ হেট ক্রাইমের বিচারের ওপর জোর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পুলিশ বাহিনীকে অবহিত করেছেন।

নতুন আইনে কী থাকছে প্রিমিয়ার তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, এতে কী থাকা উচিৎ সে বিষয়ে আলোচনা-পরামর্শ করা হয়েছে।

হোরগান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও স্কুল বোর্ডগুলোর সঙ্গে কাজ করছে এবং শ্রেণিকক্ষে বর্ণবাদবিরোধী আলোচনা ও সংলাপ শুরু করা যায় কিনা সেটি খতিয়ে দেখছে।  তিনি বলেন, “এটি নিশ্চিত করা দরকার যেন আমরা সব সময়ই এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাই। প্রতিরোধ তখনই শুরু হবে যখন মানুষ অসহিষ্ণুতা দেখলেই প্রতিকারের লক্ষ্যে এগিয়ে আসবে।”

কানাডায় নবাগতদের পরিষেবা দানকারী একটি সামাজিক গ্রুপ সাকসেস-এর সিইও মিজ. কুইনি চু বলেন, এখানে হেইট ক্রাইমের সংখ্যা আরও অনেক বেশি যেগুলি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা হয় না।

তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত, এটি হলো হিমবাহের সামান্য চূড়ামাত্র।”

চু বলেন, প্রাদেশিক সরকার যা করতে পারে তা হলো, কোন ধরণের ঘটনা হেট ক্রাইম বলে বিবেচিত হবে বর্ণবাদবিরোধী আইনের সঙ্গে মিলিয়ে তার একটি স্পষ্ট সংজ্ঞায়নে জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া।

তিনি বলেন, “কেউ এ ধরণের আচরণ করলে তার পরিণতি কী হবে? মানুষকে কি তার আচরণের জন্য দায়ী করা হচ্ছে?” চীনা-কানাডীয় প্রবক্তারা এর আগে আলোচনা করেছিলেন, কোভিড-১৯ ভাইরাস সম্পর্কে প্রাথমিক বক্তৃতাবাজী, যেমন কেউ এটিকে “উহান ভাইরাস” বা “চীনা ভাইরাস” বলে চিহ্নিত করার কারণে কীভাবে তা সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।