কানাডায় অশ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত এলাকায় কোভিড-১৯এ মৃত্যুর হার বেশি
ডিসেম্বর ৩, ২০২০
করোনা মহামারীকালেও ব্ল্যাক ফ্রাইডে উপলক্ষে টরন্টোর শপিং সেন্টারে ক্রেতাদের ভীড়। ছবি: কানাডিয়ান প্রেস
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ২৮ অক্টোবর : স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার নতুন এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের প্রথম ধাক্কায় প্রধানত অশ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত কমিউনিটিগুলিতে মৃত্যুর হার ছিল সবচেয়ে বেশি।
রিপোর্ট প্রণেতারা বলেছেন, দেখা গেছে যে, এই মহামারি দৃশ্যমান সংখ্যালঘু তথা অশ্বেতাঙ্গদেরকে অসমানুপাতিক হারে আক্রমণ করেছে। অশ্বেতাঙ্গদের অতিরিক্ত জনবহুল আবাসনে বসবাসের সম্ভাবনা যেমন বেশি তেমনই তারা এমন সব কাজের সঙ্গে জড়িত যা তাদেরকে কোভিড-১৯ এর অধিকতর সংস্পর্শে আসার আশঙ্কার মধ্যে ঠেলে দেয়। খবর দি কানাডিয়ান প্রেস এর। রিপোর্ট করেছেন মিয়া র্যাবসন।
অন্যান্য সমীক্ষায় দেখা গেছে, অশ্বেতাঙ্গদের ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা থাকার সম্ভাবনা বেশি। আর এগুলো একজন ব্যক্তিকে গুরুতর অসুস্থতা এবং কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর উচ্চতর ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেয় বলে ধারণা করা হয়।
মৃত্যুহার দ্বিগুণ
গত মার্চ থেকে জুলাইয়ের মধ্যে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর ৯৯ শতাংশ ঘটেছে দেশের যে চারটি বৃহত্তম প্রদেশে- সেখানে মৃত্যুহার ছিল দ্বিগুণ। দেখা গেছে, ওই প্রদেশগুলিতে মৃত ব্যক্তিদের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বেশি অশ্বেতাঙ্গ।
বিভিন্ন এলাকায় মৃতদের বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে মৃত্যুহার সমন্বয় করা হয়েছে।
রিপোর্টে দেখা গেছে, যেসব এলাকায় অশ্বেতাঙ্গ জনগণের সংখ্যা এক শতাংশের কম সেখানে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে মারা গেছে ১৬.৯ জন। যেসব এলাকায় অশ্বেতাঙ্গদের সংখ্যা ১০ থেকে ২৫ শতাংশের মধ্যে সেখানে মৃত্যুহার ছিল ৩৪.৫ জন।
অন্টারিও ও কুইবেকের যেসব মহল্লায় জনসংখ্যার এক চতুর্থাংশের বেশি অশ্বেতাঙ্গ সেখানে মৃত্যুহার ছিল অন্যসব মহল্লার চেয়ে ৩.৫ গুণ বেশি।
কোভিড-১৯-এর প্রথম ধাক্কায় কানাডায় মারা গেছে প্রায় ৮,৮০০ জন। এর মধ্যে ৯৪ শতাংশই মৃত্যুবরণ করেছে কুইবেক ও অন্টারিওতে।
কানাডা ও প্রাদেশিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সংস্থাগুলি কোভিড-১৯-এ মারা যাওয়া রোগীদের বর্ণগত তথ্য খুব বেশি সংগ্রহ করেনি। এজন্যে রিপোর্ট প্রণয়নে স্ট্যাটিসটিকস কানাডা কোভিডে মৃত্যুর জাতীয় উপাত্ত এবং অশ্বেতাঙ্গ ও এলাকাভিত্তিক আদমশুমারির তথ্য ব্যবহার করেছে।
মুখ্য জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড. তেরেসা তাম বুধবার বলেন, কোভিড-১৯-এর মত রোগে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি উদ্ঘাটন করা হলে তা কোন কোন ক্ষেত্রে সম্পদ বিনিয়োগ করতে হবে এমন নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, “ওই ধরণের পরিস্থিতিতে, সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিগুলিতে কোভিড টেস্ট বা অন্য যে কোন কার্যক্রমের মাধ্যমে সহায়তা দ্বিগুণ করতে এ ধরণের রিপোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
উল্লেখ্য, মহামারির শুরুর দিকে মিজ. তাম বলেছিলেন, কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের জাতিগত পরিচয়ভিত্তিক উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে না।