চাকরির জন্য কানাডার অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত

জানুয়ারী ১৩, 2020

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী যেসব অভিবাসী সম্প্রতি কানাডায় আসছেন তারা চাকরির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের চেয়ে বেশি শিক্ষিত। স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার এক নতুন সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় এই সংস্থা কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত ১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষালাভকারী যেসব অভিবাসী কানাডায় এসেছে তাদের মধ্যে শতকরা ৩৫ ভাগেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা তাদের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতার চেয়ে বেশি। খবর আইপলিটিক্স.সিএ-র। রিপোর্ট করেছেন জনসন লিম।
সেই তুলনায় দেশের দক্ষিণ সীমান্তের ওপারে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের মধ্যে ২১ শতাংশ তাদের চাকরির চেয়ে অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন।
সমীক্ষায় অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা বলতে বোঝানো হয়েছে সেই অবস্থাকে যেখানে একজন ডিগ্রিধারী ব্যক্তি এমন চাকরিতে নিয়োজিত আছেন যেখানে হাইস্কুলের ডিপ্লোমা অথবা তার চেয়েও কম যোগ্যতাসম্পন্ন লোক হলেই চলে।
এই ফলাফল এখন এমন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে যে, কানাডার অভিবাসন ব্যবস্থাকে এদেশের অর্থনৈতিক চাহিদার সঙ্গে আরও ভালোভাবে সংযুক্ত করা সম্ভব কিনা কিংবা দেশটি তার উচ্চশিক্ষিত কর্মশক্তিকে দক্ষতার সঙ্গে কাজে লাগাতে পারছে কিনা।
রিপোর্টে বলা হয়, “অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা মানবসম্পদের অদক্ষ ব্যবহারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং উৎপাদনশীলতার অপচয় ঘটাচ্ছে।”
কানাডার কনফারেন্স বোর্ডের মুখ্য অর্থনীতিবিদ পেড্রো এন্টুনেস বলেন, অভিবাসীদের যোগ্যতা অনুযায়ী আরও ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারলে তা কানাডার অর্থনৈতিক কর্মকুশলতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে।

গত ১০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীধারী যেসব অভিবাসী কানাডায় এসেছে তাদের মধ্যে শতকরা ৩৫ ভাগেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা তাদের চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতার চেয়ে বেশি। ছবি : কানাডিয়ান প্রেস


তিনি বলেন, “আমরা যে বিষয় নিয়ে কথা বলছি সেটা হলো, আমরা এমন যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীদের নিয়ে আসছি যাদেরকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। সেজন্যেই আমরা যদি তাদের দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড উন্নততর করতে পারি।”
রিপোর্টে এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে যে, কানাডিয়ান এক্সপিরিয়েন্স ক্লাসের আওতায় আসা নতুন অভিবাসীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শিক্ষার অবস্থায় পড়াদের সংখ্যা সবচেয়ে কম এবং তা ১৮ শতাংশ।
২০০৮ সালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় অভিবাসীরা অস্থায়ী বিদেশি শ্রমিক হিসাবে আসতে পারে এবং এক বছর এখানে কাজ করার পর পারমানেন্ট রেসিডেন্সির জন্য আবেদন করতে পারে।
এন্টুনেস বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা ঠিক কাজই করছি, আমি ওই পদ্ধতির খুব বেশি সমালোচনা করতে চাই না।”
কানাডায় আসা নতুন অভিবাসীরা চাকরির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীদের তুলনায় অতিরিক্ত শিক্ষিত হলেও এক দশকেরও বেশি সময় আগে আসা অভিবাসীদের ক্ষেত্রে অসমতার পরিমাণ ছিলো অপক্ষোকৃত কম।
কানাডায় দীর্ঘকাল ধরে অবস্থানরত অভিবাসীদের মধ্যে মোটামুটিভাবে ২১ শতাংশ ছিলেন অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন আর যুক্তরাষ্ট্রেও প্রায় সমসংখ্যক ১৮ শতাংশ ছিলো অতিরিক্ত যোগ্যতাসম্পন্ন।
রিপোর্টে বলা হয়, এই ফলাফল থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, কানাডার অভিবাসীরা দীর্ঘমেয়াদে তাদের যোগ্যতার সঙ্গে সামঞ্জস্যশীল চাকরি খুঁজে পেতে সক্ষম হন।
কানাডায় জন্মানো কর্মশক্তির ক্ষেত্রেও যুক্তরাষ্টের চেয়ে অতিরিক্ত যোগ্যতার বিষয়টি অপেক্ষাকৃত কম।
এন্টুনেস আরও বলেন, উচ্চতর যোগ্যতাসম্পন্ন অভিবাসীদের স্বামী বা স্ত্রীকে আসার সুযোগ করে দেওয়া এবং নিয়োগদাতাদের পক্ষপাতিত্বের প্রবণতা হ্রাস করার মাধ্যমে তাদের জন্য আরও কিছু করার সুযোগ আছে।