জাস্টিন ট্রুডো : নিউজমেকার অব দ্যা ইয়ার
দলের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা এখন আকাশচুম্বী : সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও বৃদ্ধি পেয়েছে তার জনপ্রিয়তা
জানুয়ারী ১৬, ২০১৬
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : গত অক্টোবরে কানাডার জাতীয় নির্বাচনে জাস্টিন ট্রুডোর বিস্ময়কর বিজয়ের পর কানাডাসহ বিশ্ব মিডিয়ায় তাকে নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়ে গিয়েছিল। কানাডার টপ ক্যাটাগরীর নিউজ মিডিয়া কানাডিয়ান প্রেস, ম্যাকলিন ম্যাগাজিনসহ দেশের বেশ কয়েকটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান তাকে নিউজমেকার অব দ্যা ইয়ার হিসাবে ঘোষণা করে।
অন্যদিকে ঋড়ৎঁস জবংবধৎপয ভড়ৎ ঃযব ঞড়ৎড়হঃড় ঝঃধৎ এবং ঊকঙঝ জবংবধৎপয ভড়ৎ রচড়ষরঃরপং
পরিচালিত দুটি নতুন জরীপে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উচ্চ জনপ্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে। জরীপ দুটিতে বলা হয় জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা এখনো যথাক্রমে ৫৭% এবং ৬৪%। তার এই জনপ্রিয়তা বেশী লক্ষ্য করা গেছে আটলান্টিক কানাডা, ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও কুইবেকে। প্রেইরী প্রভিন্সসমুহে এবং আলবার্টাতে তার জনপ্রিয়তা মিশ্র অবস্থায় রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তার এই মাত্রা সত্যিকার অর্থে গত অক্টোবরের নির্বাচন প্রাক্কালে যা ছিল তার চেয়ে বেশী। ফোরাম রিসার্স জানায় তার বর্তমান জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ পয়েন্ট। অন্যদিকে সমর্থনহীনতা কমেছে ৭ পয়েন্ট। আর শুধু লিবারেল সমর্থকদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা বা সমর্থন বাস্তবিক অর্থে আকাশচুম্বী। ফোরাম রিসার্সের হিসাব অনুযায়ী লিবারেল দলের সমর্থকদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা ৯০%। কিন্তু ঊকঙঝ এর জরীপে দেখা যাচ্ছে এই জনপ্রিয়তা আরো বেশী। শতকরা ৯৮ ভাগ।
গত নির্বাচনের আগে প্রথম অবস্থায় দেখা গিয়েছিল জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কম। প্রধান ৩ দলের মধ্যে লিবারেল পার্টির প্রতি ভোটারদের সমর্থন ছিল সবার পিছনে। কিন্তু ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছিল ততই জাস্টিন ট্রুডো ও তার দলের প্রতি ভোটারদের আস্থা ও সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এবং নির্বাচনের দিন দেখা গেল জাস্টিন ট্রুডো সাবইকে অবাক করে দিয়ে বিপুল ভোটে জয় লাভ করেন। নিরঙ্কুশ সংখ্যা গড়িষ্ঠতা পাওয়ার জন্য যে কয়টি আসন প্রয়োজন ছিল তার চেয়েও বেশী আসনে জয় লাভ করে লিবারেল পার্টি। অভ্যন্তরীন নেতৃত্বের কোন্দলে যে দলটি অনেকদূর পিছিয়ে পড়েছিল এবং প্রায় ডুবতে বসেছিল সেই দলটিকে সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী করে জাস্টিন ট্রুডো ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
জাস্টিন ট্রুডোর এই উত্তেজনাপূর্ণ বিজয় তাকে এনে দিয়েছে আরো কিছু খ্যাতি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন নিউজ মিডিয়ার সম্পাদক ও ডিরেক্টরদের কাছে তিনি হয়ে দাড়ান আকর্ষণীয় এক ব্যক্তিত্ব। এ কথা বলেন কানাডিয়ান প্রেস এর প্রধান সম্পাদক স্টিফেন মুরিস।
নির্বাচনের জয় পরাজয় সবসময়ই বড় মাপের সংবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু জাস্টিন ট্রুডোর জয় ছিল ঐতিহাসিক এবং এই বিজয় তাকে অনেক নিউজ মিডিয়া কর্মীদের কাছে আলাদা চরিত্র হিসাবে দাড় করিয়ে দেয়। আন্তর্জাতিক মহলেও তার উচ্চ প্রশংসাধ্বনি উচ্চারিত হতে থাকে। নির্বাচনে জীয় হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই জাস্টিন ট্রুডো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন এবং ঐ সম্মেলনগুলোতে তিনি ছিলেন সকলের মধ্যমনি। সিরিয়ার রিফিউজিদের গ্রহণ করেও তিনি আন্তর্জাতিক মহলে প্রচুর সম্মান লাভ করেন। এ সমস্ত কিছু মিলিয়ে তিনি ২০১৫ সালে নিউজমেকার অব দ্যা ইয়ার নির্বাচিত হন কানাডায়।
শুধু রাজনৈতিকভাবেই যে জাস্টিন ট্রুডো কানাডা ও অন্যান্য দেশের গণমাধ্যমের নজর কেড়েছেন তা নয়। তার ব্যক্তি ইমেজ ও সুদর্শন অবয়বও নজর কেড়েছে অনেকের। আমেরিকার খ্যতিমান ও জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ভোগ এর কভার ম্যান হিসাবেও এসেছেন তিনি। ভোগ ম্যাগাজিনের কভারে সাধারণত মুভি স্টার বা ফ্যাশন স্টারদেরকে আনা হয়। কিন্তু জাস্টিন ট্রুডোর বেলা সেই রীতি ভঙ্গ করা হয়েছে। ভোগ ম্যাগাজিনে জাস্টিন ট্রুডোকে তারুন্যে ভরপুর ও আশাবাদী এক নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।