কানাডায় শিশু মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ আত্মহত্যা

অক্টোবর ৯, ২০১৯

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ :  কানাডার তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ আত্মহত্যা। স্কুল বর্ষের প্রথম দিনে প্রকাশিত এক নতুন রিপোর্টে একথা বলা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়, অন্টারিওতে শিশু ও তরুণদের প্রতি পাঁচজনে একজন বিশেষ কোনও ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে, কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ প্রয়োজনীয় সহায়তা লাভ করে। খবর সিটিভি নিউজ এর।

অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চিলড্রেন ফার্স্ট এই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সারা অস্টিন বলেন, “ভেবে দেখুন আমাদের কত বেশি শিশু অকারণে মারা যাচ্ছে। আমি সত্যিই সেইসব বাবা-মায়েদের উৎসাহিত করি যাতে তারা স্কুলে যাবার অন্তর্বর্তী সময়ে সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা ও সততার সঙ্গে আলোচনা করেন।”

“এমন পরিবেশ সৃষ্টি করুন যাতে ছেলেমেয়েরা তাদের কথা বলতে পারে এবং রাখঢাক না করেই বলতে পারে।”

তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো দুর্ঘটনা এবং প্রতিরোধযোগ্য জখম। এর পরই রয়েছে আত্মহত্যা। শিশুদের কল্যাণের প্রতি হুমকিস্বরূপ অন্যান্য কারণগুলি হলো নিপীড়ন, দারিদ্র্য, স্থুলোতা, খাদ্য নিরাপত্তা, রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম, বৈষম্য ও গালমন্দ করা।

সেপ্টেম্বরের তিন তারিখ সারাদেশে শিশুরা স্কুলে যেতে শুরু করেছে এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাবা-মায়ের জন্য বাচ্চাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার এখনই সবচেয়ে ভালো সময়।

অন্টারিওতে শিশু ও তরুণদের প্রতি পাঁচজনে একজন বিশেষ কোনও ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগে। ছবি: হেলথলাইন.কম

তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যসুবিধা দানকারী সংগঠন স্ট্রেইট আপ হেল্থ-এর সাইকোথেরাপিস্ট জেক আর্নস্ট বলেন, “এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়েই আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই সেইসব গুরুতর অনুভূতির কথা যা মানুষের মনে জেগে উঠতে পারে।”

তিনি বলেন, স্কুলে ফিরে যাবার তাড়া এই সময়ে শিশুমনে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। “এ থেকে যে কোনও ধরনের ভীতি বা উদ্বেগ জেগে উঠতে পারে।

তিনি বাবা-মায়েদের উৎসাহিত করেন তাদের সন্তানদের সময় দেয়া ও তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, শিশুরা তার চারপাশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে সব সময় বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চায় না।

তিনি বলেন, “বিপুল সংখ্যক তরুণ এমন আছে যারা বাবা-মার কাছে যেতে চায় না কারণ তারা মনে করে যেন তারা বাবা-মাকে খারাপ খবর দিচ্ছে। সুতরাং এমন নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে হবে যাতে শিশুরা কথা বলে বা কথা বলার জায়গা খুঁজে পায়।”

রিপোর্টের লেখকরা দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে আহবান জানিয়েছেন যাতে তারা আগামী নির্বাচনে শিশুদের কল্যাণের বিষয়ে মনোযোগী হন। তাদের সুপারিশের মধ্যে আছে, জাতীয় পর্যায়ে একটি ‘শিশুদের জন্য বাজেট’ প্রণয়ন যাতে করে শিশুদের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ সম্পদ সংরক্ষণের মতো একটি ন্যূনতম মান নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।