কানাডার প্রেক্ষাপটে বর্ণবাদ সমাজের গভীরে অন্তঃসলিলাস্রোতের মতো বহমান যার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়া হয়নি
ভিবাসীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যা হতে পারে বিপর্যয়কর
মার্চ 3, 2019
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : খোলা দুয়ার অভিবাসন নীতি এবং বহুসংস্কৃতিবাদ নিয়ে কানাডা নিজে গর্ব করে থাকে কিন্তু যে বিষয়টি প্রায়শ নজর এড়িয়ে যায় সেটি হলো নতুন দেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টারত অভিবাসী বা নবাগত কেউ কিংবা অভিবাসী শিশুদের বাবা-মা যখন বর্ণবাদের শিকার হয় তখন তাদেরকে যে খেসারত দিতে হয় তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কতটা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
গত বছরের শেষদিকে কানাডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েমন জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন সমীক্ষায় দেখা গেছে কানাডায় জন্মগ্রহণকারী কিশোরদের চেয়ে অভিবাসী ও উদ্বাস্তু পরিবারের ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জটিলতা নিয়ে হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। ইমার্জেন্সী হলো মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসার প্রাথমিক কেন্দ্র।
গবেষকরা ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অন্টারিও প্রদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে ইমার্জেন্সী বিভাগে আসা প্রায় ১১ হাজার ৯০০ তরুণের ওপর আলোকপাত করেছেন। সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ২,১৯৪ জন উদ্বাস্তু পরিবারের তরুণের মধ্যে ৬১ শতাংশের সামান্য বেশি সংখ্যক এবং উদ্বাস্তু নয় এমন পরিবারের ৬,৬৮০ জন তরুণের মধ্যে ৫৭.৬ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা নিয়ে জরুরী কক্ষে এসেছে। সেই তুলনায় কানাডায় জন্ম নেওয়া তরুণদের মধ্যে জরুরী কক্ষে আসা তরুণের সংখ্যা ছিলো ৫১.৩ শতাংশ।
সমীক্ষায় বলা হয়, যেসব কারণে তরুণরা জরুরী কক্ষে আসে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হলো তাদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কিত জটিলতা (substance-related disorders)। এর পরই রয়েছে উদ্বেগজনিত জটিলতা। আর সমীক্ষার প্রধান লেখক ড. নাতাশা সন্ডার্স বলেন, কানাডায় জন্মগ্রহণকারীদের মতো উদ্বাস্তু ও অভিবাসী তরুণরা জরুরী কক্ষে আসার সমান সুযোগ পায় না।
বর্ণবাদ ও মানসিক আঘাতের ভূমিকা
কানাডায় বর্ণবাদের অস্তিত্বের বিষয়টি প্রায়ই নজর এড়িয়ে যাওয়া হয় যার ফলে এর মূল্যায়ন করা বা এটি কীভাবে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করছে সে বিষয়টির মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না। অশ্বেতাঙ্গ ও জাতিগত জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যসেবা লাভে বৈষম্যের ওপর গবেষণাকারী এবং ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ঝউ ভ্যাং বলেন, “কানাডার প্রেক্ষাপটে বর্ণবাদ একটি অন্তঃসলিলা স্রোতধারার মতো প্রবহমান বিষয় যার প্রতি যথাযথ নজর দেওয়া হয় না কারণ আমরা বহুসংস্কৃতিবাদ নিয়ে বাগাড়ম্বর করি। আমাদেরকে বলা হয় যে, প্রত্যেকেই এখানে সমান তালে পা ফেলে এগিয়ে যায়, কিন্তু একজন অশ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির ক্ষেত্রে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন।”
কানাডিয়ান মেন্টাল হেল্থ অ্যাসোসিয়েশনের (CMHA) গবেষণা ও পাবলিক পলিসি বিষয়ক পরিচালক ফেরদাউস হোসেইনী বলেন, একজন নবাগতের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মানসিক আঘাত ও বর্ণবাদের যে প্রতিক্রিয়া হতে পারেÑ যা কখনও দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে সে বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
হাফপোস্ট কানাডাকে হোসেইনী বলেন, “নিজের দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা অনেক লোকই হয়তো যুদ্ধ, সহিংসতা এমনকি হয়তো অত্যাচারের শিকার হয়েছে। অনেকে হয়তো নিজ দেশে নিঃস্ব অবস্থা থেকে এসেছে বা নিপীড়নের শিকার হয়েছে অথবা বৈষম্যের শিকার হয়েছেÑ মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এগুলো বিরাট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।”
তিনি আরও বলেন, দেশান্তরী হওয়ার সময় অনেকের হয়তো পরিবারের সদস্য বা প্রিয়জনকে হারানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে।
তিনি বলেন, “এমনকি বিপদ কেটে যাবার দীর্ঘদিন পরেও ওইসব ভয়াল ঘটনা মানসিক আঘাতজনিত মানসিক জটিলতার লক্ষণ হিসাবে দেখা দিতে পারে যা কয়েক বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।”
হোসেইনী বলেন, এসব লক্ষণের মধ্যে থাকতে পারে অতীতের ঘটনা ফিরে ফিরে দেখা, দুঃস্বপ্ন দেখা, ঘুমের সমস্যা হওয়া ইত্যাদি। এইসব সমস্যা আবার বেড়ে যেতে পারে বিচ্ছিন্নতার কারণে। হোসেইনী গুরুত্বারোপ করেন এইসব অভিজ্ঞতার কথা পরিবারের সদস্য, কমিউনিটির অন্য লোকজন কিংবা অন্তত একজন থেরাপিস্টের সঙ্গে আলোচনা করার ওপর।
নতুন করে শুরুর আঘাত
অনেক অভিবাসী শিশু বা টিন এজ ছেলেমেয়ের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয় যখন তারা নতুন একটি দেশে চলে আসে। এর ফলে তাদের শিক্ষা ও স্বাভাবিক বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর ভাষাগত বাধা কিছু শিক্ষার্থীকে ক্লাশে কথা বলা কিংবা কিছু পাঠ্যবস্তু খুব বেশি প্রাগ্রসর হলে সে বিষয়ে সাহায্য চাওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। এতে করে তার শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে একধরণের ফাঁক তৈরি হতে পারে।
ভাষাগত বাধা শিক্ষার্থীর শিক্ষা অর্জনে ক্ষতির কারণ হতে পারে কিন্তু তার সঙ্গে গালাগালিও অনেক সময় শিশুর কল্যাণের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
দিব্যা লুইস নামের একজন সাইকো থেরাপিস্ট হাফপোস্ট কানাডাকে বলেন, “পরিত্যক্ত বা বাইরে রাখা হলে একটি শিশু বা টিনএজ ছেলেমেয়ের আত্মসম্মানের ওপরই কেবল বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার
সৃষ্টি হয় এমন নয় বরং সেটি গোটা বিশ্ব সম্পর্কে তাদের বিশ্বাসের ওপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং সেটি তাদের নিজের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যেতে উৎসাহিত করতে পারে।”
লুইস এ ধরণের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে খুব ভালো করে জানেন। তিনি ভারত থেকে নিজের পরিবারের সঙ্গে কানাডায় আসেন যখন তার বয়স মাত্র পাঁচ বছর।
তিনি বলেন, “শৈশবে আমাকে তুলে আনা হয়েছে বলে আমি আমার বাবা-মাকে তাদের অতিরক্ত বাদামী গাত্রবর্ণের জন্য অভিযুক্ত করি এবং আমার মধ্যে এমন বোধ কাজ করতে পারে যে তারা আমাকে বিব্রত করেছেন।”
লুইস বলেন, কাউকে গালিগালাজ করলে তার আত্ম-মর্যাদা এবং আত্মবিশ্বাস ধসে যেতে পারে এমনকি তিনি প্রাপ্তবয়স্ক হলেও যদি ওই সময় বিষয়টি নিয়ে কারো পরামর্শ গ্রহণ না করেন বা কোনও ধরণের সহায়তা না পান।
লুইস বলেন, “শিশু ও তরুণরা যাতে খোলা মন নিয়ে নিরাপদ বোধ করতে পারে তেমন পরিসর তৈরি করা, তাদেরকে গালাগালির প্রভাব এবং তিরষ্কারের লক্ষণগুলোÑ যেমন সবকিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা, দুঃস্বপ্ন দেখা, অস্বাভাবিক আচরণ করা, অবোধ্য কারণে কান্না বা যে অবস্থানগুলো পেরিয়ে এসেছে সেই পর্যায়ের আচরণ করা ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া এবং তাদেরকে খোলামেলা কথা বলতে সাহায্য করা বাবা-মা, শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদদের দায়িত্ব।”
ক্যারিয়ার পাল্টাতে বাধ্য হওয়া
হোসেইনী উল্লেখ করেন যে, প্রাপ্তবয়স্করা যখন নতুন জায়গায় আসে তখন তাদেরও কর্মজীবনে বড় ধরণের বিঘœ ঘটে।
তিনি বলেন, “সাংস্কৃতিক অভিযোজন প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে কিছু অভিবাসী আর্থ-সামাজিক মর্যাদার অবনমন ঘটে। তাদের শিক্ষা ও দক্ষতা স্থানান্তরযোগ্য নাও হতে পারে। তারা যখন দেশে ছিলো তখন তাদের শিক্ষাগত দক্ষতার কারণে তারা হয়তো ভালো চাকরিতে নিয়োজিত ছিলো কিন্তু এখানে আসার পর তাদের শিক্ষা স্বীকৃত নয়। এসব বিষয় একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।”
আর এ কারণে অভিবাসীদের শিশুরা তাদের বাবা-মাকে যে কঠিন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মোকবিলা করতে হচ্ছে সেটা দেখে একধরণের অপূর্ণতা বোধ করতে পারে।
হোসেইনী বলেন, “তারা দেখে যে তাদের বাবা-মা জীবিকার জন্য প্রাণপাত করছেন এবং এই সঙ্কট তাদেরও প্রভাবিত করতে পারে। এটা শিশুমনে দুঃখ ও বিষণœতা সৃষ্টির কারণ হতে পারে।”
দ্বিতীয় প্রজন্মের কানাডীয়রা ভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়
কানাডায় জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ভাষাগত বাধা হয়তো আর থাকে না, কিন্তু তাদেরও ভিন্নতর সংগ্রামে লিপ্ত থাকতে হয় যেটা তাদের জীবনে দুঃখের কারণ হয়ে দেখা দেয়।
ঝউয়া ভ্যাং বলেন, “বেড়ে ওঠা দ্বিতীয় প্রজন্মের কানাডীয়রা আরও বেশি মানসিক দ্ব›েদ্ব ভুগতে পারে একারণে যে, স্কুলে এবং সমাজের কাছ থেকে তারা এমন শিক্ষা পেয়েছে যে এই দেশে সবাই সমান, কিন্তু বাস্তব জীবনে তাদেরকে ‘ভিন্ন’ বলেই বিবেচনা করা হয়।”
তিনি উল্লেখ করেন যে, এই দ্বৈত অভিজ্ঞতা এ ধরণের অন্তর্গত চাপ সৃষ্টি করতে পারে যা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এটা তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার বোধ তৈরি করতে পারে এবং অভিবাসীদের শিশুরা এমন আচরণ করতে পারে যে সম্পর্কে তারা সচেতন নয়।
“এটা ঘটতে পারে কেবল তখনই যখন তারা নিজেদের বন্ধুদের মধ্যে অবস্থান করে এবং নিজের (সাংস্কৃতিক) গোষ্ঠী সম্পর্কেই অমর্যাদাকর কথাবার্তা বলতে পারে। তারা হয়তো বর্ণবাদী আদর্শের কাছে বিক্রি হয়ে যেতে পারে যেটা প্রভাবশালী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সম্পর্কে বলে থাকে যে, তারা হলো নি¤œ মর্যাদার।”
হোসেইনী বলেন, এখানেই তারা যে সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে উঠেছে তা অনুসরণের পাশাপাশি তাদের বাবা-মার সংস্কৃতির উৎস থেকে ভিন্নতর একটি পরিচিতির স্তর খুঁজে পায়।
তিনি বলেন, লুইস ওই দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির জগতে অটল থাকার লড়াই করেছেন।
লুইস বলেন, “আমার বাবা-মা আমার মনে কিছু বার্তা এবং বিশ্বাস রোপন করে দিয়েছেন। সেগুলো এমন যে, ‘তোমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে কারণ কিছুই তোমার হাতে তুলে দেয়া হবে না’, ‘তোমাকে প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য যে কোনও কাজই হোক সেটাই করতে হবে, আর কাজ করতে হবে তোমার নিজের মতো করে।’, তুমি কি পছন্দ করতে চাও সেটা কোন বিষয় নয় বরং প্রচলিত পদ্ধতির সঙ্গে তোমাকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এইসঙ্গে আমি কতটা বিশিষ্ট এবং আমার কাছে কোনটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে আমার শিক্ষক, বন্ধু-বান্ধব ও তাদের বাবা-মার মাধ্যমে আমি কিছু বার্তা পেয়েছি। সুতরাং আমার ওপর অব্যাহতভাবে দু’দিকেরই টান ছিলো।”
যখন ‘ঠিক কাজটি’ করাও ভুল
কানাডায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কখনও কখনও অনেক ব্যক্তির জন্য সুলভ নয় একথা ঠিক হলেও অনেক সংস্কৃতিতে মানসিক অসুস্থতার বিষয়ে মানুষের মধ্যে সংস্কার কাজ করে। হোসেইনী বলেন, অনেক সাংস্কৃতিক জনগোষ্ঠীর লোকেদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে শিক্ষাদানের প্রয়োজন রয়েছে।
অভিবাসী বাব-মা এবং একইভাবে তাদের সন্তানেরা প্রায়শ এমন শিক্ষা পেয়ে বেড়ে ওঠে যে, দুর্বলতা প্রকাশ করা যাবে না, সুতরাং তারা মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিলে সেটা মনের ভেতর ‘শুষে’ নেয় আর এটাই তার কাছে ‘সঠিক কাজ’।
হোসেইনী বলেন, “প্রায়শ এটা হচ্ছে এমন একটি এমন একটি বিষয় যেটি নিয়ে আদৌ কোন কথাই বলা হয় না। আপনি যখন বিমর্ষ তখন সাধারণভাবে যেটা বলা হবে সেটা হলো: ‘তুমি বিমর্ষ কেন? এটা ঝেড়ে ফেল। দেশে তোমার পরিবারের অনেক সদস্য যুদ্ধের মধ্যে রয়েছেন। তোমার বিষণœতায় ভোগার কী অধিকার আছে?”
কিন্তু বিষণœতা ঠিক এভাবে সেরে যায় না।
তিনি বলেন, “হ্যাঁ, দেশে আপনার চাচাতো ভাইরা হয়তো প্রতিদিন বোমা বর্ষণের মধ্যে দিনাতিপাত করছে, সেটা বিপর্যয়কর, কিন্তু দেশে আপনার ভাইরা কীভাবে জীবন যাপন করছে তার সঙ্গে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য কোনওভাবেই সম্পর্কিত নয়। এটা হলো একান্তই আপনার ব্যক্তিগত অসুখ।”
লুই বলেন, একজন থেরাপিস্ট হিসাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে আসা তরুণদের নিয়ে কাজ করার সময় দুটি অভিন্ন ক্ষেত্রে তাকে আলোকপাত করতে হয়। এগুলি হলো তরুণদের মন থেকে গলতি ও দীর্ঘদিনের লজ্জার বোধ অপনোদন করার উপায় খুঁজে বের করা এবং তাদের চাহিদা সম্পর্কে সোচ্চার হতে সহায়তা করার জন্য তাদের কথা বলার প্রশিক্ষণদান।
তিনি বলেন, “তারা যখন পরিবারের মধ্যে বেড়ে উঠেছে তখন তাদের আবেগগত প্রয়োজনের দিকটি হয়তো অগ্রাধিকারমূলক বিষয় ছিলো না, তাদেরকে শেখানো হয়েছে কর্তৃত্ববানদের সম্পর্কে প্রশ্ন না তোলার। সুতরাং তাদের জন্য সাংস্কৃতিক দিক থেকে স্পর্শকাতর উপায়েই আত্মপ্রকাশের প্রশিক্ষণ দরকার। আবেগগত সচেতনতা, সহানুভূতি এবং ক্ষমাশীলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
লুইস বলেন, অনেকের ক্ষেত্রেই স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয় হলো সেই স্থান যেখানে সে প্রথম মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ভাববার অবকাশ পেয়েছে। তার ভাষায়, “এটা হয়তো নিজের পরিবারে বা গীর্জা/মসজিদ/মন্দির ইত্যাদিতে খোলামেলা বলা হয় না, সেজন্যে আমরা এমন অনেক ঘটনা পাই যেক্ষেত্রে প্রথমবারেই অনেক গভীরে প্রোথিত মানসিক আঘাতের দৃষ্টান্ত বেরিয়ে আসতে দেখি। আমাদের এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা দরকার যেখানে নবাগতরা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের বিদ্যমানতা সম্পর্কে জানতে এবং কীভাবে সেই সেবা পাওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানতে পারবে।” -সৌজন্যে : হাফিংটন পোস্ট