বেশিরভাগ কানাডীয় মনে করেন পরিবেশ- পরিস্থিতির কারণেই মানুষ গরিব হয়

আর কানাডীয়দের দুই-তৃতীয়াংশ মনে করছেন, সরকার দারিদ্র্য নিরসনে যথেষ্ট তৎপর নয়

সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ০২, আগস্ট, ২০১৮ : কানাডার বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ব্যক্তির অর্থনৈতিক ভাগ্য গড়ে ওঠে প্রধানত তার নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত বিভিন্ন উপাদানের ওপর ভিত্তি করে। এক্ষেত্রে তিনি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কতটা প্রয়াস চালিয়েছেন তার প্রতিফলন ঘটে না। নতুন এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

কানাডায় দারিদ্র্য পরিস্থিতির ওপর এঙ্গুস রেইড ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষার দ্বিতীয় পর্বের ফলাফলে দেখা যায়, বেশিরভাগ কানাডীয় (৬৫ শতাংশ) একমত হয়েছেন যে, একজন ব্যক্তি তার জীবনে যেসব সুবিধা লাভ করেন সেগুলোর কারণেই তিন ধনী হন। আর ৭২ শতাংশ কানাডীয় মনে করেন, কোনও ব্যক্তি গরীব হন এমন সব পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে যার ওপর তার নিজের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। দেখা গেছে, আর্থিক দিক থেকে যারা যত সচ্ছল অবস্থায় রয়েছেন তাদের ওই দুই ধারণার সঙ্গে একমত হওয়ার সম্ভাবনা ততই কম। খবর হাফিংটন পোস্ট এর।

একইভাবে, অপেক্ষাকৃত ধনী কানাডীয়দের বেশিরভাগই এমন ধারণার সঙ্গে একমত যে, অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করার কারণেই কোনও ব্যক্তি ধন-সম্পদের দিক থেকে ভাল অবস্থান অর্জন করেন এবং যথেষ্ট পরিশ্রম না করার কারণেই একজন ব্যক্তি গরিব থেকে যান। দারিদ্র্য থেকে মুক্তির জন্য একজন ব্যক্তির কর্মজীবনের শুভ নীতিবোধই সবচেয়ে বেশি দরকারী এমন ধারণার প্রতি সমর্থন জানানোর সম্ভাবনাও সচ্ছলদের ক্ষেত্রে বেশি।

অপেক্ষাকৃত ধনী কানাডীয়দের বেশিরভাগই এমন ধারণার সঙ্গে একমত যে, যথেষ্ট পরিশ্রম না করার কারণেই একজন ব্যক্তি গরিব থেকে যান। ছবি : আওয়ারউন্ডসর.সিএ

সমাধানের উপায় নিয়ে মতভেদ

এর পরও প্রতিটি প্রদেশের অর্ধেকেরও বেশি কানাডীয় একমত যে, তাদের প্রাদেশিক সরকার দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে যথেষ্ট উদ্যোগী নয়। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৫ শতাংশ) কানাডীয় বলেছেন, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ অপ্রতুল, আর প্রায় সমসংখ্যক মানুষ, ৬৪ শতাংশ, তাদের প্রাদেশিক সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে একই কথা বলেছেন।

দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের আসলেই কী করা উচিৎ সেই বিষয়ে কানাডীয়রা আরও বেশি বিভক্ত। যেখানে ৮৪ শতাংশ কানাডীয় একমত হয়েছেন যে, বৃহৎ জাতীয় অবকাঠামোগত প্রকল্প গ্রহণ হচ্ছে কর্মসংস্থানের ‘ভালো’ কিংবা ‘খুব ভালো’ ধারণা, সেখানে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সমর্থন করেছেন ন্যূনতম মজুরি ১৫ ডলার করার বিষয়টি, আর তার চেয়েও কম সংখ্যক (৫৯ শতাংশ) সমর্থন করেছেন নির্দিষ্ট পরিমাণ বার্ষিক আয়ের (guaranteed annual income ) নিশ্চয়তা বিধানের ধারণা।

দারিদ্র্য নিরসনের এসব তত্ত্ব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনার সময় জনমত আরও বেশি বিভক্ত। ২০১৫ সালের নির্বাচনে যারা রক্ষণশীলদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সামাজিক কর্মসূচিতে সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা কম।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে এমন বিষয়েও জানতে চাওয়া হয় যে, “দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এবং আর্থিক দিক থেকে সঙ্কটাপন্ন মানুষের জন্য অধিকতর সরকারি সহায়তা” দেওয়া উচিত, নাকি “যে ব্যবস্থায় কঠোর পরিশ্রমী ও উদ্যমীরা পুরষ্কৃত হন সেই ব্যবস্থার ওপরই বেশি জোর দেওয়া উচিৎ।”

রক্ষণশীলদের সমর্থক এবং কানাডার পশ্চিমাঞ্চলের আলবার্টা, সাচকাচুয়ান ও মেনিটোবা-র বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে “কঠোর পরিশ্রম” সম্পর্কিত তত্ত্বে সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি, অন্যদিকে লিবারেল ও এনডিপির ভোটার, কুইবেক, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া এবং আটলান্টিক তীরবর্তী অঞ্চলের কানাডীয়রা অধিকতর সরকারি সহায়তার তত্ত্ব সমর্থন করেন।