বিদ্বেষমূলক অপরাধ: কানাডার জঘন্য ১০টি শহর
ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : কানাডায় যে ১০টি শহর বিদ্বেষমূলক অপরাধের দিক থেকে সবচেয়ে জঘন্য হিসাবে চিহ্ণিত তার মধ্যে চারটিই বৃহত্তর টরন্টো তথা গ্রেটার গোল্ডেন হর্সস্যু অঞ্চলে অবস্থিত। ম্যাকলিন’স শো-তে সরবরাহ করা স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার নথিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর দি ম্যাকলিন’স।
হ্যামিল্টন, পিটারবরো, দ্য ইয়র্ক এবং গুয়েল্ফ অঞ্চলের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের কাছে প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে যে পরিমাণ অপরাধের রেকর্ড রয়েছে তাতে এই শহরগুলি ২০১৭ সালের শীর্ষ ১০টি শহরের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যেগুলিতে বিদ্বেষমূলক অপরাধ সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালের পরবর্তী সময়ের তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়নি।
অন্টারিওর হ্যামিল্টন শহরে সর্বোচ্চ সংখ্যক অপরাধের ঘটনা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যা সারা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ। সেখানে প্রতি এক লাখ লোকের বিপরীতে ১৬টি অপরাধের ঘটনা ঘটে।
গ্রেটার টরন্টো/গোল্ডেন হর্সস্যু অঞ্চলের আরও কিছু শহর আছে যেগুলো দেশের যেসব শহরে বিদ্বেষমূলক অপরাধের সবচেয়ে দ্রুত বিস্তার ঘটছে সেগুলোর অন্তর্ভুক্ত। ২০১৬ সালে এই অঞ্চলের একটি মাত্র শহর হ্যামিল্টন বিদ্বেষমূলক অপরাধের হারের দিক থেকে শীর্ষ ১০টি শহরের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
অন্টারিও ইউনিভার্সিটির প্রযুক্তি ইন্সটিটিউটের ঘৃণা, পক্ষপাত ও চরমপন্থা বিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক বারবারা পেরি বলেন, তিনি বিস্মিত নন। তিনি বলেন, “এগুলি হলো অতি ডানপন্থী সংগঠনগুলোর সবচেয়ে সক্রিয় এলাকা। আমি মনে করি, গত বছর দুয়েক ধরে ওইসব সংগঠনের অতিরিক্ত দৃশ্যমানতা এবং বেপরোয়া ভাব ঘৃণার বিষয়টিকে স্বাভাবিকতা দিতে ভূমিকা রেখেছে এবং এর ফলে যে নেতিবাচক স্পর্শকাতরতা তৈরি হয়েছে তা বিশেষ সম্প্রদায়কে টার্গেট করেছে।”
বিদ্বেষমূলক অপরাধের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেশজুড়ে এর উত্থানের অংশ বলে জানিয়েছে স্ট্যাটিস্টিকস কানাডা। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে হেট ক্রাইমের সংখ্যা বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। সংস্থার রিপোর্টে কেবল সেইসব হেট ক্রাইমের বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে যেগুলো সম্পর্কে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।
সরকারি সংস্থাটির রিপোর্টে বলা হয়, অপরাধের ৩৮ শতাংশই ছিলো সহিংস এবং এসব ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তরা ইহুদি, মুসলিম, কৃষ্ণাঙ্গ এবং যৌনতার দিক থেকে প্রান্তিক অবস্থানে থাকা এবং লৈঙ্গিক পরিচয়ের লোকেদের ওপর হামলা করে।
বিদ্বেষমূলক অপরাধ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ পেরি বলেন, এটা মনে রাখা দরকার যে, গুয়েল্ফ-এর মতো শহরে রঙের স্প্রে দিয়ে স্বস্তিকচিহ্ন (ংধিংঃরশধ) আঁকার মোট ঘটনার খুব কম সংখ্যকই পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছে। সুতরাং এগুলো আসলে এ ধরণের ঘটনা যে অনেক বেশি বেড়েছে তারই প্রতিফলন। তিনি বলেন, বিদ্বেষ-বিরোধী গ্র“পের সহায়তায় সম্পাদিত তার গবেষণা ও সমীক্ষা থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে, কানাডায় বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধের প্রকৃত সংখ্যা পুলিশের দেওয়া সংখ্যার চেয়ে পাঁচ থেকে সাতগুণ বেশি হবে।
তিনি বলেন, “পুলিশ যে পরিসংখ্যান দেয় সেটা হলো নেহায়েত একটি হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এ বিষয়ে সত্যিকারের কিছু ঘটে চলেছে।”