কানাডায় ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পারিবারিক সহিংসতায় মারা গেছে ৪৭৬ জন
জানুয়ারী ৭, ২০১৯
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে কানাডায় পারিবারিক সহিংসতায় মারা গেছে প্রায় ৪৭৬ জন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক নতুন রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সুদূর উত্তরের বিভিন্ন অঞ্চল ও গ্রামে বসবাসরত আদিবাসী জনগণ, অভিবাসী, উদ্বাস্তু এবং তাদের শিশুরা বিশেষভাবে হুমকির মধ্যে রয়েছে। খবর গ্লোব এন্ড মেইল এর।
রিপোর্টে ৪১৮টি পারিবারিক হত্যাকান্ডের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে যাতে হামলার শিকার হন ৪৭৬ জন- এর মধ্যে ৩৭টি শিশুও ছিলো যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা শতকরা ৭৯ ভাগ এবং পুরুষের সংখ্যা ২১ ভাগ। অভিযুক্ত হামলাকারীদের প্রায় ৮৬ ভাগই ছিলো পুরুুষ।
ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা সম্পর্কিত শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রের একাডেমিক পরিচালক ড. জেফ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, হামলার শিকার ব্যক্তিরা হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অভিনব বাধার সম্মুখিন হন। তিনি বলেন, এদেশে নবাগত যেসব নারী নিপীড়নমূলক সম্পর্কে বাধা পড়েছেন, সহিংসতার বিষয়টি প্রকাশ করে দিলে তাদের অভিবাসীর মর্যাদা নস্যাতের আশঙ্কা থাকে।
সাংস্কৃতিক বাধাও অনেক সময় ভূমিকা রাখে। ড. জেফ বলেন, “অনেকে এমনটাই বিশ্বাস করে যে, পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টি পরিবারের ভেতরে অথবা নিজেদের ধর্মীয় কমিউনিটির মধ্যেই চেপে রাখতে হবে। এসব বিষয়ে চুপচাপ থাকার বিষয়টি ভেঙ্গে পড়ার ভয়ও থাকতে পারে।”
ড. জেফ ইউনিভার্সিটি অব গুয়েল্ফ সেন্টারের সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক ও আইনগত ব্যবস্থা সম্পর্কিত শিক্ষা বিষয়ক কেন্দ্রের পরিচালক মিরনা ডাউসন-এর প্রকল্পের সহ-পরিচালকও।
বিচ্ছিন্ন গ্রামীণ জনপদের নারীদেরকে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়। নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রের অবস্থান হয়তো কয়েক ঘণ্টার পথের দূরত্বে থাকে। আগ্নেয়াস্ত্র হলো গ্রামীণ জীবনের অংশ যা এইসব নারীদেরকে রীতিমতো ক্ষতিকর পরিস্থিতির মধ্যে রাখে।
ড. জেফ বলেন, অনেক গ্রামীণ নারীর অবস্থা এমন যে, তাদের নিপীড়নকারীর সঙ্গে খামারের অংশীদার হওয়া ছাড়া তাদের আর কোনও সুবিচার পাওয়ার সুযোগ থাকে না। ফলে তারা পালিয়ে যাবেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো উপায়ও থাকে না।
পারিবারিক সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৩ শতাংশের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলো তৃতীয় কোনও ব্যক্তি, পরিবারের সদস্য, নতুন অংশীদার ও প্রতিবেশিরা। ৪৪৩ জন হামলাকারীর মধ্যে ২১ শতাংশ আত্মহত্যা করেছেন এবং সাত শতাংশ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।