কানাডার প্রথম প্রধানমন্ত্রী জন এ ম্যাকডোনাল্ডের মূর্তি সরিয়ে ফেলছে সিটি অব ভিক্টোরিয়া
সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক : ১১ আগস্ট ২০১৮ : ভিক্টোরিয়া সিটি কর্তৃপক্ষ কানাডার প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং দেশটির আবাসিক স্কুল ব্যবস্থার প্রবর্তক স্যার জন এ ম্যাকডোনাল্ডের একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি সিটি হলের প্রবেশদ্বারের পাশ থেকে সরিয়ে ফেলেছে। এটি স্থানীয় আদিবাসী জনগণের সঙ্গে সৌহার্দ্য সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি সৌজন্যমূলক পদক্ষেপ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ । আদিবাসীরা স্যার ম্যাকডোনাল্ডের মূর্তি সরিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিল। খবর সিটিভি নিউজের।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে সিটির কাউন্সিলররা সাত-এক ভোটে মূর্তি সরিয়ে নেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন। এই সিদ্ধান্ত দেশে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে যে, জাতি গঠনে ম্যাকডোনাল্ডের ভূমিকার সঙ্গে আদিবাসীদের প্রতি তার কথিত অন্যায় আচরণের বিষয় নিয়ে কীভাবে সমন্বয় করা যেতে পারে।
জন ম্যাকডোনাল্ড ১৮৯১ সালে মৃত্যুর আগে প্রায় দুই দশক ধরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দেড় ’শ বছরেরও আগে কানাডীয় কনফেডারেশন গঠনের পেছনে তার কিছু ভূমিকাই মুখ্য চালিকাশক্তি ছিলো বলে তিনি দেশটিতে শ্রদ্ধার পাত্র হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছেন। তার নাম ও ছবি টাঙ্গানো রয়েছে সারা দেশের বিভিন্ন হাইওয়ে, ভবন, স্কুল ও সড়কে। আর তিনি রয়েছেন বেশিরভাগ কানাডীয় নাগরিকের মানিব্যাগে – ১০ ডলারের নোটে ছবি হিসাবে।
কিন্তু দেশের আবাসিক স্কুল ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্যও তার নীতিই দায়ী। প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেড় লাখের মত আদিবাসী শিশুকে এ ধরণের আবাসিক স্কুলে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে “শিশুদের প্রতি অবহেলা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে” বলে জানিয়েছে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন। কমিশন বলেছে, ওই স্কুল কর্মসূচি ছিলো “সাংস্কৃতিক গণহত্যা”র সামিল।
ভিক্টোরিয়ার মেয়র লিসা হেলপ্স বলেন, আবাসিক স্কুল ব্যবস্থার নির্মমতার ইতিহাস থেকে ম্যাকডোনাল্ডকে আলাদা করার কোনও উপায় নেই। তার মূর্তি অপসারণ করার প্রয়োজন ছিল। এক blog post এ হেলপ্স তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, নিপীড়িত শিশুদের পরিবারের সদস্য ও অন্য আদিবাসীরা যখনই তাদের নগর সরকারের কাছে আসবে তখনই তাদেরকে ঔপনিবেশিক সহিংসতার বেদনাদায়ক ওই স্মৃতিচিহ্নের পাশ দিয়ে যেতে হবে- এমনটা এড়ানোর জন্যই মূর্তিটি সরানো জরুরী ছিল।”
তবে অনেকেই মনে করেন, মূর্তিটা থাকা উচিৎ ছিল।
কনজারভেটিভ দলের কেন্দ্রীয় নেতা এন্ড্রু শিয়ার মূর্তি অপসারণের এই পদক্ষেপকে “ইতিহাস মুছে ফেলার” কাজে ব্যবহৃত “রাজনৈতিক শুদ্ধতা” বলে অভিহিত করেছেন।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “আমরা অতীতের দিকে তাকাতে পারি, ভ্রান্তি স্বীকার এবং তা থেকে শিক্ষা নিতে পারি এবং একই সঙ্গে আমাদের অর্জনগুলো উদযাপন করতে পারি।” স্যার ম্যাকডোনাল্ডের ৩৭ বছরের পুরনো মূর্তিটি নিয়ে কী করা হবে সে বিষয়ে একটি কমিটি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সেটি স্টোর রূমে রাখা হবে।