অন্টারিওতে ন্যূনতম মজুরী ১৫ ডলারে উন্নীত করা হচ্ছে না আগামী জানুয়ারী থেকে

অক্টোবর ১১, ২০১৮

ড্যাগ ফোর্ডের প্রগ্রেসিভ কনজারভেটিভ সরকার অন্টারিওতে ন্যূনতম মজুরী ঘন্টায় ১৫ ডলার করার পরিকল্পনাকে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। বিগত লিবারেল সরকারের করা fair workplaces better jobs act অনুযায়ী আগামী বছর জানুয়ারী মাস থেকে ন্যূনতম মজুরী ১৫ ডলারে উন্নীত হওয়ার কথা ছিল। বর্তমানে ন্যূনতম মজুরী ঘন্টায় ১৪ ডলার।

ড্যাগ ফোর্ড গত নির্বাচনের আগে প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল জয়ী হলে ন্যূনতম মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ করবেন।

লেবার মিনিস্টার লরি স্কট বলেন বর্তমান ন্যূনতম মজুরী ১৪ বহাল থাকবে। খবর সিটিভি নিউজের।

উল্লেখ্য যে, গত ৭ সেম্পম্বর প্রকাশিত হাফিংটন নিউজের এক খবরে বলা হয়, অন্টারিওতে নতুন প্রাদেশিক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের প্রেক্ষাপটে এখানকার প্রভাবশালী বণিক সমিতি আগের লিবারেল দলের সরকারের সময় পাশ করা সমন্বিত শ্রম আইন সংস্কারের বিল প্রত্যাহারের লক্ষ্যে একটি নতুন জোরালো মামলা করতে যাচ্ছে। ওই আইন অনুযায়ী ন্যূনতম মজুরি প্রতি ঘণ্টায় ১৫ ডলারে উন্নীত করার বিধান রয়েছে।

ন্যূনতম মজুরী ঘন্টায় ১৫ ডলার করা হচ্ছে না। ছবি : টরন্টো.কম

তবে অন্টারিও বণিক সমিতি এটা স্পষ্ট করেই বলছে যে, বর্তমানে প্রতি ঘণ্টায় ১৪ ডলার হারে যে ন্যূনতম মজুরি আইন বলবত রয়েছে তারা সেটি রদ করতে চান না।

fair workplaces better jobs act নামে পূর্ববর্তী লিবারেল সরকারের বিল ১৪৮-এ ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো ছাড়াও শ্রম আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে যার বেশিরভাগই শ্রমিক-কর্মচারীদের অনুকূলে।

প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে বণিক সমিতি যেগুলোর বিরোধিতা করছে তার মধ্যে রয়েছে শ্রমিক-কর্মচারীদের আগেই টেলিফোনে কাজের সিডিউল জানানোর বিধান। এই বিধানের আওতায় প্রায়শ শ্রমিক-কর্মচারীদেরকে তাদের পরবর্তী কাজের সিডিউল সম্পর্কে জানানো হয় কাজের পালা শুরুর সামান্য আগে। এই নীতির সমালোচকরা বলছেন, এটি শ্রমিক-কর্মচারীদের কাজের বাইরের জীবনকে ব্যাহত করবে, তাদের সন্তানের দেখাশোনা ও সামাজিক জীবন উপভোগের সামর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলদের চাপের মুখে সেদেশের অনেক খুচরা বিক্রেতা এধরণের অনুশীলন বন্ধ করেছেন।

বিল ১৪৮ অনুযায়ী, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অন্টারিওর শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজের সিডিউল শুরুর ৯৬ ঘণ্টা আগে না জানালে সেই শিফটে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন। আইন অনুযায়ী কোনও কাজের পালা বাতিল হলে বা হ্রাস করা হলে কোনও কর্মচারী যদি ওই সময় নিয়মিত কাজে যোগ দিয়ে থাকেন তাহলে নিয়োগদাতা তাকে কমপক্ষে তিন ঘণ্টার কাজের মজুরি পরিশোধ করতে বাধ্য।

এই নীতির সমালোচকরা বলছেন যে, কৃষি, পর্যটন ও রেস্টুরেন্ট খাতে এই নীতির একটি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এসব ব্যবসার মালিকরা তাদের ব্যবসা চালানোর জন্য যথেষ্ট সংখ্যক কর্মচারী রাখতে পারেন না অথচ তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই এমন ঘটনার জন্যও, যেমন খারাপ আবহাওয়া, তাদেরকে ‘আর্থিক দন্ড’ দিতে হচ্ছে।

বণিক সমিতির মতে আর যে পরিবর্তনটি বিতর্কিত সেটি হলো জরুরি প্রয়োজনে ছুটির আওতা বাড়ানো। আগের আইনে ছিলো, ৫০ জনের বেশি কর্মচারী রয়েছে এমন কোম্পানিতে শ্রমিকরা জরুরী প্রয়োজনে বছরে ১০দিন বিনা বেতনে ছুটি ভোগ করতে পারবেন। বর্তমান আইনে সেই বিধান পরিবর্তন করে সেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এটা স্পষ্ট যে প্রিমিয়ার ড্যাগ ফোর্ড ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির পরিমাণ ঘণ্টায় ১৪ ডলারে সীমিত করতে পারেন। কারণ এটা ১৫ ডলারে উন্নীত করা হলে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর ওপর বিরাট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। নাফটা চুক্তিতে পরিবর্তন এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক প্রভাবের কারণে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে সব ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। নতুন আইনে আরও যেসব পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো নিয়ে ফোর্ড হয়তো আলোচনা চালিয়ে যাবেন।