সন্ত্রাস বিরোধী বিতর্কিত বিল সি-৫১ এর বিরুদ্ধে সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ

আগস্ট ৮, ২০১৫

প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : সন্ত্রাস বিরোধী বিল সি-৫১ এ কানাডার স্পাই এজেন্সিকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তা সংবিধানবিরোধী এবং এটি লক্ষণীয়ভাবে বিচার বিভাগের ঐতিহ্যগত ভূমিকার বিপরীতমুখী কর্যক্রমকে প্রতিনিধিত্ব করছে। এই অভিযোগ এনে কানাডার দুটি জাতীয় গ্রুপ ‘কানাডিয়ান সিভিল লিবার্টিজ এসোসিয়েশন’ ও ‘কানাডিয়ান জার্নালিস্ট ফর ফ্রি এক্সপ্রেশন’ বিতর্কিত বিল সি-৫১ এর বিরুদ্ধে সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। তারা অন্টারিওর সুপরিয়ার কোর্ট অব জাস্টিস এর নিকট মকদ্দমাটির শুনানির জন্য আবেদন জানায়। খবর দি কানাডিয়ান প্রেসের।

উল্লেখ্য যে, সন্ত্রাস বিরোধী বিল সি-৫১ সম্প্রতি রাজ সন্মতি লাভ করে আইনে পরিনত হয়। এই আইনে কানাডার সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসকে অধিকতর ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে যে ক্ষমতা প্রয়োগ করে গোয়েন্দারা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী আক্রমনের পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দিতে পারবে।

নতুন এই আইনে পুলিশ এখন ওয়ারেন্ট ছাড়াই সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে গ্রেফতার করতে পারবে যদি তারা বিশ্বাস করে সন্দেহভাজন ঐ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ সন্ত্রাসী কর্যক্রম চালাতে পারে। শুধু তাই নয়, পুলিশ যদি মনে করে কাউকে গ্রেফতার করলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধ করা যাবে তাহলেও তারা ওয়ারেন্ট ছাড়াই সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে গ্রেফতার করতে পারবে। আগে নিয়ম ছিল পুলিশ ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করতে পরবে তখনই যখন সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য তা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

উল্লেখ্য যে, বিলটি পাশ হওয়ার আগেই কানাডায় এর বিরুদ্ধে প্রচন্ড বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়ে এটি। টরন্টোসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ফলে পাশ হওয়ার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তেরও মুখোমুখি হতে হয় বিলটিকে । কিন্তু বিতর্ক, বিরোধিতা, বিক্ষোভ এবং তদন্ত এর কোন কিছুই বিলটিকে আইনে পরিনত করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি।

জননিরাপত্তা মন্ত্রী স্টিভেন ব্লেনি আইনটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “কানাডার নাগরিকদেরকে নিরাপদ রাখার জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে।”

কিন্তু বিরোধীরা বলছেন এই আইনে অতিমাত্রায় কিছু অস্পষ্ট বাক্য রয়েছে যা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এর অপব্যবহারের মাধ্যমে। তাদের আরো অভিযোগ, এই আইন সন্ত্রাস এর বিরুদ্ধে কোন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে না। বরং কানাডিয়ানদের নাগরিক অধিকারকে খর্ব করবে। এই আইন উপকারের চেয়ে অপকার করবে বেশী। মোদ্দা কথা, এটি সবার জন্যই একটি হুমকী হয়ে দেখা দিবে।

‘কানাডিয়ান সিভিল লিবার্টিজ এসোসিয়েশন’ ও ‘কানাডিয়ান জার্নালিস্ট ফর ফ্রি এক্সপ্রেশন’ এক যৌথ বিবৃতিতে বলে, বিলের মূল উপদানসমূহ কানাডার চার্টার অব রাইটস এন্ড ফ্রিডমসকে লঙ্ঘন করেছে এবং এটি কানাডার মতো একটি ফ্রি ও ডেমোক্রেটিক সোসাইটিতে গ্রহণযোগ্য নয়।

বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিল সি-৫১ পাস করায় হোমগ্রোন উগ্রপন্থী জঙ্গীদের মোকাবেলা করার জন্য। গত বছর এই হোমগ্রোন জঙ্গীদের হামলায় দুই জন কানাডীয় সৈন্য মৃত্যুবরন করেন। সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে সন্ত্রাস বিরোধী এই বিল সাংবিধানিক। জননিরাপত্তা মন্ত্রী স্টিভেন ব্লেনি আইনটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “কানাডার নাগরিকদেরকে নিরাপদ রাখার জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে।”