জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করলেন প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার
আগস্ট ৩১, ২০১৫
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আবারো গুরুত্ব আরোপ করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার। গত ২৮ আগস্ট মিসিসাগায় আহমদীয়া মুসলিম জামায়াত কানাডার তিনদিনব্যাপী ৩৯ তম সালানা জলসায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি কানাডার পার্লামেন্ট ভবনে ইসলামীক স্টেট এর আদর্শে উদ্বুদ্ধ এক জঙ্গীর বর্বরোচিত হামলার কথাও স্মরণ করেন। খবর দি কানাডিয়ান প্রেসের।
জলসায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি হামলাকারী পার্লামেন্ট ভবনে ঐ হামলা চালিয়েছিল ইসলামের নাম করেই। তিনি আরো বলেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে সেদিন ঐ হামলার পর আহমেদীয় মুসলিম জামায়াত তাৎক্ষণিকভাবে নিরপেক্ষ ও দ্ব্যর্থহীনভাষায় হামলা ও হামলাকারীর বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছিল।
কানাডায় যুব মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রচার চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার আহমেদীয়া সম্প্রদায়ের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আহমেদীয়া সম্প্রদায়ের নিন্দা ও অবস্থান কানাডিয়ান জনগণের সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছে।
এদিকে আহমদীয়া মুসলিম জামায়াত কানাডার পক্ষে এক ইমেইল বার্তায় জনাব সাইফুল ইসলাম জানান, ৩৯তম সালনা জলসার দ্বিতীয় দিনটিও ছিল বিভিন্ন কর্মকান্ডে ভরপুর। নাইব ন্যাশনাল আমির জনাব খলিফা আব্দুল আজিজ সাহেবের নেতৃত্বে দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। পুরো অধিবেশনেটি ছিলো উর্দু ভাষায়, পবিত্র কোরান পাঠের মধ্যে দিয়ে অধিবেশন শুরু হয়। “ঘরের শান্তি” এ বিষয়ে বক্তৃতা করেন সেক্রেটারি তরবিওত ও সদর অন্সারুল্লাহ জনাব শাহিদ মনসুর সাহেব। মসীহ্ মাউদ (আ:) এর কাপুরথালা জামা’তস্থ সাহাবী (রা:) এর জীবনী – এ বিষয় এর উপর বক্তৃতা করেন জামেয়া আহমাদিয়্য়া কানাডার প্রফেসর জনাব মিসবাহ বালুচ সাহেব। “ভয়ের সময় শান্তির উত্স হল খিলাফত”- এ বিষয়ের উপর জামেয়া আহমাদীয়ার প্রিন্সিপাল জনাব হাদি আলী চৌধুরী সাহেব বক্তৃতা প্রদান করেন। দিনের সর্বশেষ বক্তা জামেয়া আহমাদিইয়্যার প্রফেসর মাওলানা সোহেল সাকিব সাহেব “নির্যাতনের সময় করনীয়” এ বিষয়ের উপর বক্তৃতা প্রদান করেন।
ইমেইল বার্তায় আরো জানানো হয়, এ অধিবেশনের উল্লেখযোগ্য স্থানটি দখল করে ছিলেন কানাডার ফেডারেল লিবারেল পার্টির নেতা জাস্টিন ট্রুডো। তিনি জলসা গৃহ পরিদর্শন করেন এবং আহমেদীয়া সম্প্রাদায় যেভাবে কানাডাকে সবার জন্য একটি অতি সুন্দর দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখছে তার প্রশংসা করেন।
কানাডার আমির জনাব লালাখান মালিক সাহেবের সভাপতিত্বে দিনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। প্রথমে পবিত্র কোরান তেলোয়াত ও নজম পরিবেশন করা হয়।
জনসেবায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য সম্মানিত ইরউইন কতলের সাহেবকে এবছর সার জাফরুল্লাহ খান সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রিজিয়নের পুলিশ প্রধানগণ সহ বহু সম্মানিত অতিথি এতে উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব ধ্যান ধারণার ব্যক্ত করেন এবং কানাডিয়ান সমাজ ব্যবস্থায় আহমাদিয়া মুসলিম জামাত যে অবদান রাখছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর ফাতীন রিয়াজ এবং মুর্তজা রিয়াজ কাসিদা পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে এরপর “আন্তর্জার্তিক সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান এবং প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা কি” এ প্রসঙ্গে মিশনারি মাওলানা আইজাজ খান বক্তব্য পেশ করেন। “বাক স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা কি একই বিষয়”- এর উপর মাওলানা ইমতিয়াজ সারা আলোকপাত করেন। সবশেষে মিশনারি ইনচার্জ মাওলানা মোবারক নাজির “একটি বিশ্ব শান্তির প্রকৃত রোড ম্যাপ” এ বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন।