কানাডায় আশ্রয়প্রার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে না

জুন ৩, ২০১৮

কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে শরণার্থীদের লাইন। ছবি : টরন্টোসিটি নিউজ.সিএ

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, ০৭ মে ২০১৮ : জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী র্যাল্ফ গুডেল বলেছেন, সরকারি পোর্ট অব এন্ট্রির বাইরে অন্য কোনওভাবে কানাডায় এলেই আশ্রয়প্রার্থীরা “বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার” পেয়ে যাবেন এমন নয়। দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে কানাডাবাসীকে আবারও নিশ্চয়তা দেওয়ার চেষ্টায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
গত সোমবার মন্ট্রিয়লে গুডেল বলেন, “কানাডার সব আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। আর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সেগুলোর প্রতিও সম্মান দেখানো হচ্ছে এবং হতে থাকবে।”
গুডেল ওই দিন সেখানে অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হুসেন ও পরিবহন মন্ত্রী মার্ক গার্নিউরের সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন এবং তিনি নিরাপত্তা ও মানবিক বিবেচনার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। খবর সিবিসি নিউজের।
সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায়, বিশেষ করে কুইবেকে অনুপ্রবেশকারী আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া এবং এ নিয়ে উচ্চকিত রাজনৈতিক বিতন্ডার মধ্যে মন্ত্রী ওই মন্তব্য করেন।
অটোওয়া গত সপ্তাহে জানিয়েছে যে, তারা সেন্ট-বার্নার্ড-ডি-ল্যাকোল নামে সীমান্তের একটি প্রবেশ পথে ৫২০ জনের মত লোকের জন্য অস্থায়ী আবাসন সুবিধা তৈরি করবে। স্থানটি কুইবেকের রক্সহ্যাম রোডের কাছে এবং আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগ এই পথেই সীমান্ত পেরিয়ে কানাডায় ঢোকে।
অস্থায়ী আবাসন তৈরির ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিরোধী রক্ষণশীল দল অভিযোগ করেছে যে, লিবারেল দলের সরকার সীমান্তে কার্যত একটি উদ্বাস্তু শিবির তৈরি করতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, কুইবেক সরকার নতুন আসা আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়টি মোকাবিলায় তাদেরকে আরও বেশি সহায়তা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
পরিবহন মন্ত্রী মার্ক গার্নিউর বলেছেন, গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় আড়াই হাজার আশ্রয়প্রার্থী কুইবেকে ঢুকেছে।
তিনি বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের অনেকেই টরন্টোতে যেতে চায় এবং এ বিষয়ে তাদেরকে সাহায্য করতে সরকার এখনও তার প্রতিশ্র“ত ‘ট্রিইয়েজ পরিকল্পনা’ (ঃৎরধমব ঢ়ষধহ ) প্রণয়নের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, প্রাদেশিক এবং পৌরসভা উভয় স্তরে ওই প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।

নাইজেরিয়া যাচ্ছেন কর্মকর্তারা
অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেছেন, নিছক আশ্রয় প্রার্থনার উপায় হিসাবে কানাডার সীমান্তে মার্কিন ট্যুরিস্ট ভিসা কাজে লাগানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কানাডা সরকারের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি জানান, তিনজন কর্মকর্তা নাইজরিয়ার পথে রওনা হয়েছেন। আশ্রয়প্রার্থীদের বেশিরভাগেরই জন্মস্থান নাইজেরিয়া। তিনি নিজেও শিগগিরই নাইজেরিয়া সফরে যাবেন বলে মন্ত্রী জানান।
অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য চলতি বছরের বাজেটে যে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার আলাদা করে রাখা হয়েছে তার একটি অংশ ব্যয় হবে নতুন অভিবাসন ও উদ্বাস্তু বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের পেছনে। আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনের ওপর শুনানি ত্বরান্বিত করতে ওই বোর্ড কাজ করবে।
মন্ত্রী বলেন, “শরণার্থী হিসাবে স্বীকৃতি পাবার জন্য যখন কেউ বৈধভাবে দাবি করে তখন আমরা তাদেরকে সম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করতে চাই যাতে তারা দুর্ভোগের শিকার না হয়, তাদের জীবন যেন চলমান থাকে। আর একইরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাদের শরণার্থীর মর্যাদা পাবার দাবি বৈধ নয় তাদের বিষয়টিও দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ করা দরকার যাতে এর পর তাদেরকে কানাডা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া যায়।”