৩৫ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে কানাডার জনসংখ্যা : জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে অভিবাসীরা অবদান রাখছে
ডিসেম্বর ২৭, ২০১৩
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সর্বশেষ (সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৩) প্রকাশিত জড়িপ অনুযায়ী কানাডার বর্তমান জনসংখ্যা ৩ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৩শ’।
স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার হিসাব মতে, দেশটির জনসংখ্যা গেলো এক বছরে ৩৫ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে, পশ্চিমের প্রদেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার তুলনামূলক বেশি।
কানাডার জনসংখ্যা ৩ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৩শ’ যা আগের বছরের চেয়ে ৪ লাখ ৪ হাজার বেশি। এ বিষয়ে এডমোন্টনের আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাতত্ত্বের অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক ট্রোভাটো সিবিএস নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতে বলেন, “আমাদের জনসংখ্যা বাড়ছে, তবে তা খুব কম বা বেশি নয়”।
জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২ শতাংশ যা আগের বছরের মতোই অপরিবর্তনীয় রয়েছে এবং গত ৩ দশকের বার্ষিক বৃদ্ধির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রতিবেদন বলছে, “গত ৩০ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির এই হার খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি, শূণ্য দশমিক আট থেকে ১ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করেছে।
জন্মহার এখনো নিম্ন:
২০০৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অন্যান্য দেশ যেমন লুক্সেমবার্গ (+ ৮ দশমিক ৭ শতাংশ), আয়ারল্যান্ড ( + ৭ দশমিক ৮ শতাংশ) ও অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় (+ ৭ দশমিক ৬ শতাংশ) হ্রাস পেয়েছে।
১৯৯৩-৯৪ সাল পর্যন্ত কানাডার জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে মূল ভূমিকা পালন করেছে অভিবাসীরা। ২০১২ সালের পয়লা জুলাই থেকে ২০১৩ সালের পয়লা জুলাই পর্যন্ত কানাডায় যে পরিমাণ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে তার ৩ ভাগের ২ ভাগই হয়েছে অভিবাসীদের কারণে।
পপুলেশন স্টাডিজের অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক ট্রোভাটো বলেন, “যদিও আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন ঠিকই আছে; তারপরও, শক্তিশালী অর্থনীতি ও শ্রম বাজার টিকিয়ে রাখতে কানাডায় এখনো জনসংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে কানাডায় জন্মহার উঠানামা করছে। প্রতি একজন নারীর বাচ্চা রয়েছে গড়ে ১ দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৭। ৭০ এর দশকে এই হার ছিল ২ দশমিক এক শতাংশ।
ট্রোভাটো বলেন, “জন্মহার বৃদ্ধির জন্য আমাদের কি পদক্ষেপ নিতে হবে সে বিষয়ে কানাডার নীতিনির্ধারকদের চিন্তা করা দরকার”।
তিনি বলেন, “দেখা গেছে সামান্য একটা বিষয়ও বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে পারে। যেমন নারীরা তাদের কাজ ও পরিবারের মধ্যে সমন্বয় করতে পারবে-এমন ধরণের নীতি যদি গ্রহণ করা হয় তাহলে তা সুফল বয়ে আনে”। ট্রোভাটোর মতে, জন্মহারের ক্ষেত্রে এমনকি সামান্য একটা পরিবর্তনও জনসংখ্যা বৃদ্বিতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
গত বছর আলবার্টায় (৩ দশমিক ৪ শতাংশের উপরে), নুনাভাটে (২ দশমিক ৪ শতাংশ) এবং সাসকাচেওয়ানে (৩ দশমিক ৯ শতাংশ) বৃদ্ধি জাতীয় পর্যায়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে অতিক্রম করে।
স্ট্যাটিসটিকস কানাডার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক অভিবাসী ও অন্যান্য প্রদেশ থেকে আসা লোকজনের কারণেই আলবার্টার জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, নোভাস্কশিয়ার জনসংখ্যা অর্ধেক শতাংশ কমে যাওয়ায় আটলান্টিক প্রদেশগুলোতে গত বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম ছিলো।
সংস্থাটি জানায়, অভিবাসীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম হওয়ায় আটলান্টিক প্রদেশগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিম্ন।
ন্যাশনাল হাউজহোল্ড সার্ভের চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ পর জনসংখ্যার এই পরিসংখ্যান প্রকাশ পেলো।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, কানাডার মধ্যবিত্ত পরিবারের আয় ৭৬ হাজার ডলার, যা পূর্বের তুলনায় পশ্চিমে বেশি। যেখানে মধ্যম আয়ের একজন ব্যক্তির আয় শুধুমাত্র ২৭ হাজার ৬শ’ ডলার।
ধনীদের মধ্যে ১০ শতাংশ ব্যক্তির আয় ৮০ হাজার ৪শ’ ডলারেরও বেশি।
এবং অধিক ধনী দুই লাখ ৭২ হাজার ৬শ জনের সবাই ১ লাখ ৯১ হাজার ১শ’ ডলারের বেশি আয় করে।
এনএইচএস আরো জানায়, দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীরা জাতীয় মধ্যবিত্তদের তুলনায় বেশি আয় করে। জাপানিদের মতো জাতিগোষ্ঠী যারা কানাডায় ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত তাদের রোজগারও জাতীয় মধ্যবিত্তদের চেয়ে বেশি।