মিসিসাগায় ভাংচুর করা গির্জা পরিষ্কারে এগিয়ে এলেন মুসলমানরা
সংস্কার কাজে সাহায্য করার জন্য জুম্মার দিন মসজিদ থেকে চাঁদা উঠানো হয় ৫ হাজার ডলার
জুলাই ১১, ২০১৫
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : মিসিসাগার সেন্ট ক্যাথেরীন অব সিইনা রোমান ক্যাথিলিক গির্জাটি ভাংচুরের শিকার হয় সম্প্রতি। হারওন্টারিও এবং কুইন্সওয়ে ইন্টারসেকশনের নিকটবর্তী এই গির্জাটি ভাংচুর করেন ২২ বছর বয়সী ইকবাল হাসান নামের এক মুসলমান যুবক। নিকটবর্তী সৈয়দা খাদিজা সেন্টাররের ইমাম হামিদ সিøমি খবরটি জানার পর ঐ গির্জায় দেখা করতে যান ফাদার ক্যামিলো ল্যানডো’র সঙ্গে। ফাদার ক্যামিলো ল্যানডো তাকে গির্জাটি ঘুড়িয়ে দেখান এবং সিকিউরিটি ভিডিওতে ধারণকৃত কিছু দৃশ্যও তাকে দেখানো হয়। এগুলো দেখে ইমাম হামিদ খুবই ব্যথিত হন। খবর টরন্টো স্টারের।
ফাদার ক্যামিলো বলেন, এটি খুবই বেদনাদায়ক একটি ঘটনা। যুবকটি গির্জায় ঢুকে বাইবেলের পাতা ছিড়ে ফেলে, বেদি ভাংচুর করে, ক্রুশ ছুড়ে ফেলে দেয়। এটি একেবারেই একটি অবিচারের ঘটনা। এ ধরণের ঘটনা অন্যায়।
ইমাম হামিদ ফাদারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং পরবর্তীতে জুম্মার দিন ঘটনাটি মুসল্লিদের কাছে তুলে ধরেন। তিনি গির্জার সংস্কারের কাজে সহায়তা করার জন্য উপস্থিত সকলের কাছে অর্থ সাহায্য প্রদানের আহ্বান জানান। ইমাম হামিদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুসল্লিরা একদিনেই প্রায় ৫ হাজার ডলার অর্থ সাহায্য উঠান।
ইমাম হামিদ বলেন, আমরা এই মুহুর্তে আর কিছুই করতে পারবো না। তবে কিছু অর্থ সাহায্য দিতে পারলে হয়তো তারা উপকৃত হবে।
গির্জায় হামলার পর পিল পুলিশ ২২ বছর বয়সী ইকবাল হাসান নামের এক মুসলমান
যুবককে গ্রেফতার করে। জামিন আবেদনের সময় ইকবাল বলেন, খৃষ্টান ধর্মের প্রতি সে ক্ষুব্দ ছিল। তবে তার বাবা জানান, ইকবাল মানসিক রোগে আক্রান্ত। সে কারণেই সম্ভবত সে এ কাজটি করে থাকতে পারে।
পুলিশ ইকবালের মানসিক স্বাস্থ্যের ইতিহাস পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় তারা এই ঘটনাটিকে হেট ক্রাইম হিসেবে বিবেচনা করবে না এবং তারা প্রসিকিউশনের ব্যপারেও আগ্রসর হবে না। কারণ এখানে খারাপ অভিপ্রায়ের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কিন্তু তা সত্বেও গির্জায় ভাংচুরের ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট ধর্মপ্রাণ কমিউনিটিকে আহত করেছে। গির্জাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৬ সালে। গির্জা কর্তৃপক্ষের হিসাব মতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান প্রায় ১০ হাজার ডলার। তবে ফাদার তার সম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি আহ্বান জানান হামলাকারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। তিনি আরো জানান, ঘটনার পর ইমাম হামিদ ছাড়াও আরো অনেক মুসলমান সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন।
জুনের ২৪ তারিখ ইমাম হামিদ ৫ হাজার ডলারের একটি চেক ফাদার ক্যামিলো ল্যানডো’র হাতে তুলে দেন। ফাদার ক্যামিলো বলেন, এটি মুসলমানদের উদারতা এবং আস্থা ও সমঝোতার নজীর। আমরা এই কমিউনিটিতে একসাথে পথ চলছি। আমরা আমাদের বিশ্বাসকে ধারণ করবো এবং একই সাথে অন্যের বিশ্বাকেও শ্রদ্ধা জানাবো।