বন্ধ ঘোষণা করা হলো এভারেস্ট কলেজের সবকটি ক্যাম্পাস : ক্ষতিগ্রস্থ ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যের উদ্যোগ
৯মার্চ , ২০১৫
প্রবাসী কন্ঠ ডেস্ক : অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হলো এভারেস্ট কলেজ। অন্টারিওতে অবস্থিত ১৪ টি ক্যাম্পাসের কোনটাই আর একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়লো প্রায় তিন হাজারেরও বেশী শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত। সেই সাথে চাকরী হারালো প্রায় সাড়ে চার শ শিক্ষকসহ অন্যান্য স্টাফ। শিক্ষার্থীরা তাদের টিউশন ফি ফেরত পাবেন কি না তাও নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না। অবশ্য ৩ মিলিয়ন ডলারের একটি ফান্ড গঠন করা হয়েছে যা থেকে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্টারিও কলেজ ও বিশ্ববিদ্যায় বিষয়ক মন্ত্রী রেজা মোরিদি। তবে কত পার্সেন্ট টিউশন ফি ফেরত দেওয়া হবে সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। আর সব সাবজেক্টের ছাত্র-ছাত্রীরা টিউশন ফি ফেরত পাবেন কি না তাও নিশ্চিত করা বলা যাচ্ছে না।
গত ১৯ ফেব্রুায়ারী আকস্মিকভাবে কলেজটির দরজা বন্ধ হয়ে যায়। অন্টারিওর প্রাইভেট কেরিয়ার কলেজ সমূহের এর নিয়ন্ত্রক সংস্থার সুপারিনটেন্ডেন্ট এর এক নির্দেশে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়। সুপরিনটেন্ডেন্ট কলেজটি বন্ধের নির্দেশ দেন কারন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি আর্থিক অবস্থা বেগতিক অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিল। শিক্ষার্থীরা যাতে আরো আর্থিক ক্ষতির শিকার না হয় সে জন্য আগাম ব্যবস্থা হিসেবে কলেজটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
কলেজটির একজন মুখপত্র বলেন, কলেজটির আর্থিক সমস্যা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বেশকিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। কিন্তু সরকারের এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত এবং হতাশ।
উল্লেখ্য যে, ক্যালিফোর্নয়া ভিত্তিক উত্তর আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ বেসরকারী এই কলেজটির বিরুদ্ধে আরো আগেই ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠে। এর মূল নাম কোরিনথিয়ান কলেজ। এ পর্যন্ত কলেজটি বেশ কিছু মামলার মুখোমুখি হয়। এর মধ্যে অপরাধ মামলাও রয়েছে যেগুলোর তদন্ত চলছে। আমেরিকার বিভিন্ন জনপ্রিয় টিভি শো ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে মিথ্যা তথ্যসম্বলিত বিজ্ঞাপন দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে এই কলেজটি। তাদের মূল টার্গেট ছিল আমেরিকার সিঙ্গেল প্যারেন্টস ও দরিদ্র জনগোষ্ঠি যারা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর।
আমেরিকায় এই সমস্ত মামলা ও প্রতারণার কারণে সরকারী চাপ বৃদ্ধি পায় এবং সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঐ সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ ১১টি স্টেটে তাদের ১২টি ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেয় এবং আরো ৮৫টি ক্যাম্পাস বিক্রির প্রক্রিয়া চলে। ঐ সময় তাদের কানাডীয় ক্যাম্পাসগুলোও বিক্রি করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় অর্থনৈতিক সমস্যায় পতিত হওয়ার কারণে। অন্টারিওর স্কারবরো, ব্র্যাম্পটন, মিসিসাগা, নর্থ ইয়র্ক, অটোয়া প্রভৃতি অঞ্চলে ১৪ টি ক্যাম্পাস রয়েছে এভারেস্ট কলেজ নামে। কুইবেক ও ব্রিটিশ কলম্বিয়ায়ও রয়েছে কয়েকটি ক্যাম্পাস। এই কলেজটি বিভিন্ন বিষয়ে ডিপ্লোমা প্রদান করতো যার মধ্যে ছিল হেলথ কেয়ার, বিজনেস, ক্রিমিনাল জাস্টিস, ট্রান্সপোর্টেশন টেকনলজী এন্ড মেইনটেনেন্স, কন্ট্রাকশন ট্রেডস এবং ইনফরমেশন টেকনলজী।