প্রবাসী কন্ঠ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত নিবন্ধের সাথে কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রীর সংসদীয় সচিবের দ্বিমত প্রকাশ
জুলাই ২৭, ২০১৪
প্রিয় সম্পাদক,
প্রবাসী কন্ঠ ম্যাগাজিনের মে, ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত প্রফেসর মরটন বেইসার ও হেরল্ড বডার-এর একটি প্রবল ভাবাবেগসমৃদ্ধ নিবন্ধ আমাকে এই লেখা লিখতে বাধ্য করেছে।
আমাদের এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেম হলো অনলাইনে অর্থনৈতিক অভিবাসনের আবেদনপত্র ব্যবস্থাপনার একটি নতুন উপায়। এটি নতুন কোনও অভিবাসন কর্মসূচি নয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সরকার যখন এক্সপ্রেস এন্ট্রি চালু করবে তখন এটি প্রযোজ্য হবে ফেডারেল স্কিলড ওয়ার্কার প্রোগ্রাম (এফএসডব্লিউপি), ফেডারেল স্কিলড ট্রেডস প্রোগ্রাম (এফএসটিপি), কানাডিয়ান এক্সপিরিয়েন্স ক্লাব (সিইসি) এবং প্রাদেশিক নমিনি প্রোগ্রামের একটি অংশের ক্ষেত্রে।
এই মুহূর্তে অভিবাসন কর্মকর্তারা সম্ভাব্য নবাগতদের মূল্যায়ন করেন আবেদনপত্র পাওয়ার ক্রমধারা অনুসারে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ আবেদনপত্র ¯তূপিকৃত হয়ে আছে এবং এমনকি সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন অভিবাসন প্রার্থীর ক্ষেত্রেও অপেক্ষার সময় দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এক্সপ্রেস এন্ট্রি অনুযায়ী সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন ওইসব প্রার্থীদেরকে একটি তথ্যভাণ্ডারের আওতায় আনা হবে, তাদের দক্ষতার মূল্যায়ন করে কানাডার চাহিদার ভিত্তিতে তাদেরকে বিভিন্ন গ্রেডে ফেলা হবে এবং কেবলমাত্র সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া প্রার্থীদেরকে পারমানেন্ট রেসিডেন্স পাবার জন্য আবেদন করতে বলা হবে। এক্সপ্রেস এন্ট্রি আবেদন প্রক্রিয়াকে উন্নততর করবে, আবেদনপত্র জমে থাকার বিষয়টির সমাধান করবে এবং ছয় মাস বা তারও কম সময়ের মধ্যে আবেদনগুলো প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হবে।
একথা উল্লেখ করা খুবই জরুরী যে, এক্সপ্রেস এন্ট্রি এবং টেম্পারারি ফরেন ওয়ার্কার প্রোগ্রামের (টিএফডব্লিউপি) মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো এই যে, টিএফডব্লিউপি কেবল শ্রমিক ও দক্ষ জনশক্তির সাময়িক অভাব পূরণের জন্য ব্যবহার করা হয় যখন ওই কাজটি করার জন্য কোনও কানাডীয়কে পাওয়া যায় না।
কানাডার নাগরিকত্ব আইন জোরদারকরণ প্রসঙ্গে প্রফেসরদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষিতে বলা যায়, এটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমাদের সরকারের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচি আমাদের দেশের প্রতি গভীরতর অঙ্গীকার ও যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার মধ্য দিয়ে কানাডার অর্থনীতি ও সমাজে পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য আরও ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে নতুন নাগরিকদের জন্য সহায়ক হবে। আমাদের প্রস্তাবিত ব্যবস্থার লক্ষ্য হলো প্রতারণা রোধ করা, নাগরিকত্ব কর্মসূচিকে অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা এবং কেবল সুবিধা গ্রহণের জন্য নাগরিক হওয়া লোকেদের দূরে রাখা। কানাডার নাগরিকত্ব অত্যন্ত মূল্যবান, আমাদের সংস্কার কর্মসূচিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
সরকার কানাডার আশ্রয়দান পদ্ধতিরও সংস্কারের লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আমাদের পদ্ধতি পরিবর্তনের ফলে প্রকৃত উদ্বাস্তুরা মাত্র দু’মাসের জন্য কানাডার কাছ থেকে সুরক্ষা পাবে, যেখানে পুরনো পদ্ধতিতে ২০ মাসের সুরক্ষা দেয়া হতো। সংখ্যাগরিষ্ঠ কানাডীয় আমাদের আশ্রয়দান পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়টি সমর্থন করেন। আর আমাদের পদক্ষেপের অর্থ হলো প্রকৃত উদ্বাস্তুরা আরও দ্রুত তাদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা পাবেন।
যোগ্যতাসম্পন্ন নবাগতদের স্বাগত জানানো এবং একটি দেশ হিসাবে আমাদের সমৃদ্ধিতে তাদের পূর্ণ অবদান রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা দানের মাধ্যমে শক্তিশালী কানাডা গড়ে তোলাই আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য। আমরা যেসব উল্ল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছি সেগুলোর জন্য আমরা গর্ব বোধ করি এবং এরপর আমরা কোথায় যাচ্ছি সে ব্যাপারেও আমরা রোমাঞ্চিত বোধ করি। আমরা আমাদের সংস্কারগুলো ‘নিরবে’ সম্পন্ন করেছি বলে প্রফেসরদের বক্তব্যও সঠিক নয়, কারণ মন্ত্রী আলেকজান্ডার নিয়মিতভাবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন এবং প্রায়শ এসব বিষয় নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।
তারওপর প্রফেসরদ্বয় তাদের গভীর ভাবাবেগসমৃদ্ধ লেখায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উপেক্ষা করে গেছেন। আপনার পাঠকরা আরও ভালো লেখা পাওয়ার অধিকার রাখেন।
আন্তরিক শুভেচ্ছায়,
কস্টাস মেনেগাকিস
(কানাডার নাগরিকত্ব ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রীর সংসদীয় সচিব ও রিচমন্ড হিল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য)
(মূল নিবন্ধটি টরন্টো স্টার থেকে অনুদিত)