অভিবাসন মন্ত্রী বলেন, বর্ণবাদী আচরণের অভিজ্ঞতা তার রয়েছে

জুন ৩, ২০১৮

প্রবাসী কণ্ঠ ডেস্ক, অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেছেন, তিনি নিজে কানাডায় বর্ণবাদী আচরণের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি লিবারেল দলের তার সহযোদ্ধাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
হ্যালিফ্যাক্স-এ দলের কনভেনশনে হুসেন বলেন, তরুণ বয়সে তিনি বর্ণবাদী আচরণ দেখেছেন। “একদিন সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরুলে পুলিশের গাড়ি জোরে ব্রেক কষে তার সামনে এসে থামে এবং নিছক গায়ের রং কালো বলেই পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।” খবর সিবিসি নিউজের।
সোমালিয়া থেকে কানাডায় আসা হুসেন বলেন, “এই অভিজ্ঞতা আমার জন্য মোটেই নতুন কিছু ছিলো না, একজন পুলিশ অফিসার আমার কাছে আসেন এবং জিজ্ঞাসা করেন তুমি কোথায় যাচ্ছ, তোমার পকেটে কি আছে, তুমি কোথায় থাকো? আরও পরে একটি মুদি দোকানে আমাকে হেনস্তা হতে হয়, আমাকে অনুসরণ করা হয়, কারণ আমার গায়ের রং কালো।”
এগুলোকে ‘মনোবল দুর্বল করে দেওয়ার মতো’ ঘটনা হিসাবে বর্ণনা করে হুসেন বলেন, তিনি এসব বিষয় মোকাবিলা করতে শিখেছেন। আর অন্য কোনও কোনও দেশের মতো কানাডায় বর্ণবাদ এখন আর সেভাবে বিদ্যমান নেই উল্ল্লেখ করে হুসেন বলেন, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কানাডাকে আরও অনেক কিছু করতে হবে। তিনি বলেন, “প্রকৃত ঘটনা হলো এই যে, আপনি যখন এ ধরণের অভিজ্ঞতার কথা ভাবেন তখন আপনি অনুধাবন করতে পারেন যে, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে আমাদেরকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। আর এইসব বিষয়ে অবশ্যই কথা বলতে হবে কারণ আমাদের অনেকের জন্যই এটি একটি বাস্তবতা।”
হুসেন বলেন, ট্রুডোর সরকার বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এবং প্রান্তিক ও জাতিগত পরিচয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষের সহায়তায় বিনিয়োগ করেছে।” তিনি অবশ্য বর্ণবাদী পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হওয়ার জন্য তার দলীয় সহযোদ্ধাদের প্রতি আহবান জানান। তিনি “সত্যের ভিত্তিতে ভীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের” জন্য সম্মেলনের প্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানান।

বৈষম্য ও দূরে ঠেলে দেওয়ার বিরুদ্ধে লড়–ন
হুসেন বলেন, “আপনি যখন কোনও ঘরে রয়েছেন তখন নিজেকে প্রশ্ন করুন, কাকে এই ঘরে নিয়ে আসা হয়নি? আপনি যখন কোনও টেবিলে বসেছেন তখন ভাবুন কীভাবে আপনি এই টেবিলে আরও কাউকে নিয়ে আসতে পারেন। আর এটা করতে গিয়ে যদি কড়া কথা বলতে হয় তাহলে সেটাই করুন।”
হুসেন বলেন, অনেক দেশ যখন অভিবাসনবিরোধী তীব্র প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে তখন জনমনে ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে জাতিগত ও সাংস্কৃতিক উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে তোলার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হবে খুবই মারাত্মক।
সম্মেলনে বক্তৃতা করার পর সিবিসি নিউজকে হুসেন বলেন, “বর্ণবাদ একটি বাস্তবতা কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমাদের এখানে, কানাডায় এটা এখন আর মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবে বিদ্যমান নেই। এমনকি তার পরও আমাদের এবিষেয়ে মনোযোগ দিতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে, এটা আছে। আমরা কাউকে চিহ্নিত করতে চাই না।”
তিনি বলেন, দক্ষতার সঙ্গে পুনর্বাসন এবং সরকারি পরিষেবায় অর্থের যোগান দেওয়া ও শ্রমশক্তির অভাব পূরণের জন্য এদেশে নতুনদের আগমনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে দেশবাসীকে বোঝানোর মাধ্যমে কানাডা অভিবাসনবিরোধী মনোভাব দূরে সরিয়ে রাখতে পারে।
তিনি বলেন, “কানাডায় অভিবাসন কেন প্রয়োজনীয় সেটা আমাদেরকে তথ্যপ্রমাণ দিয়ে তুলে ধরতে হবে। কারণ তথ্য-উপাত্ত কখনও মিথ্যা বলে না।”